শিরোনাম
বুধবার, ৩১ জানুয়ারি, ২০২৪ ০০:০০ টা

ইভ্যালির টাকা ফেরতের পরিকল্পনা জানতে চায় সরকার

রুকনুজ্জামান অঞ্জন

আগামী চার মাসের মধ্যে ক্ষতিগ্রস্ত গ্রাহকের টাকা ফেরতের জন্য ইভ্যালিকে চাপ দিয়েছিল বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। তবে প্রতারণার দায়ে অভিযুক্ত ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানটির এমডি মো. রাসেল জানিয়েছেন, আলোচ্য সময়ের মধ্যে টাকা ফেরত দেওয়া সম্ভব হবে না। কত সময়ের মধ্যে টাকা ফেরত দিতে পারবেন, সে বিষয়েও তিনি কোনো সময়সীমা দিতে পারেননি। পরে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ইভ্যালিকে দ্রুততম    সময়ের মধ্যে গ্রাহকের টাকা ফেরত এবং পরবর্তী পর্যায়ের ব্যবসা পরিচালনার বিষয়ে একটি কর্মপরিকল্পনা জমা দিতে বলেছে। এ ছাড়া পরিকল্পনা খতিয়ে দেখে ইভ্যালিসহ প্রতারণার দায়ে অভিযুক্ত ইকমার্স প্রতিষ্ঠানগুলোর গ্রাহকের অর্থ ফেরত প্রক্রিয়া জোরদার করতে একটি কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত হয়েছে। গত বুধবার বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে ইভ্যালি ও ইভ্যালি সংশ্লিষ্ট গেটওয়েগুলোর সঙ্গে কেন্দ্রীয় ডিজিটাল কমার্স সেলের বৈঠকে এসব বিষয়ে আলোচনা ও সিদ্ধান্ত উঠে এসেছে বলে জানা গেছে। সংশ্লিষ্ট এক কর্মকর্তা জানান, ইভ্যালির এমডি রাসেলকে চার মাসের মধ্যে ক্ষতিগ্রস্ত গ্রাহকের অর্থ ফেরত দিতে বলার পর বৈঠকে অংশীজনদের অনেকেই এটা নিয়ে আপত্তি তোলেন। ইভ্যালির এমডি রাসেল জানান, তিনি যে ‘বিগব্যাং অফার’ চালু করেছেন, এটা সঠিকভাবে করতে পারলে গ্রাহকের টাকা দ্রুত ফেরত দিতে পারবেন। কতদিনের মধ্যে সেই টাকা পরিশোধ হবে- এর কোনো প্রতি উত্তর দিতে পারেননি রাসেল। এ সময় তার নতুন ব্যবসায়িক কর্মকাণ্ড ‘বিগব্যাং অফার’ কীভাবে পরিচালিত হবে, নতুন ব্যবসার মূলধন কোথা থেকে আসবে, কীভাবে ক্রেতার স্বার্থ সুরক্ষিত থাকবে- এসব বিষয়ে পরিকল্পনা জমা দিতে বলা হয়েছে। একই সঙ্গে ক্ষতিগ্রস্ত গ্রাহকের টাকা ফেরত দেওয়ার জন্য একটি সময়াবদ্ধ পরিকল্পনা চাওয়া হয়েছে। ই-কমার্সের নামে দেশের লাখ লাখ গ্রাহকের কাছ থেকে কয়েক হাজার কোটি টাকা হাতিয়ে নিলেও সে টাকার ঠিকঠাক হিসাব দিচ্ছে না ইভ্যালি। এরই মধ্যে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় তথ্য চেয়ে গেটওয়েতে আটকে থাকা টাকার একটি অংশের হিসাব নিতে সমর্থ হয়েছে, তবে বিপুল পরিমাণ অর্থ রয়ে গেছে হিসাবের বাইরে। প্রাপ্ত তথ্যানুযায়ী, শুধু মোবাইল ব্যাংকিংয়ে ইভ্যালির গ্রাহকরা ৪ হাজার কোটি টাকার বেশি লেনদেন করেছেন, যার ঠিকঠাক তথ্য মেলেনি। সূত্র জানায়, আদালত কর্তৃক নিযুক্ত বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিকের নেতৃত্বাধীন পরিচালনা পর্ষদ গত বছরের ৩০ জুন পর্যন্ত ইভ্যালির অ্যাকাউন্টে ৪ হাজার ৮৬৭ কোটি ৮০ লাখ টাকা জমার বিষয়ে তথ্য দিয়েছিল। এ অর্থ শুধু মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিস প্রোভাইডারদের মাধ্যমে লেনদেন হয়েছে। বিপুল পরিমাণ এই লেনদেন সম্পর্কে ঠিকঠাক তথ্য দিতে পারেননি ইভ্যালির কর্মকর্তারা। এর বাইরে পেমেন্ট গেটওয়েতে আটকে থাকা অর্থের মধ্যে ক্ষতিগ্রস্ত গ্রাহকদের মাত্র ১০ কোটি ৪৩ লাখ টাকা ফেরত দিয়েছে ইভ্যালি। এর বাইরেও রয়েছে বিপুল পরিমাণ লেনদেন। সার্ভার চালু না হওয়ায় যার হিসাব পাচ্ছে না বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলছেন, ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানগুলোর যে অর্থ পেমেন্ট গেটওয়ে (এসক্রো সার্ভিস)-তে আটকে ছিল, তারা শুধু সেই টাকার কিছু তথ্য দিয়েছে। কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের ব্যাংক হিসাবে কিছু অর্থের সন্ধান মিলেছে। এর বাইরে বিপুল পরিমাণ অর্থ হিসাবের বাইরে রয়ে গেছে, যেগুলো প্রতিষ্ঠানগুলোর মূল সার্ভার চালু করা ছাড়া বের করা সম্ভব নয়। আমরা এখন অভিযুক্ত প্রতিষ্ঠানগুলোকে ডেকে সার্ভারের তথ্যসহ অর্থ ফেরতের পরিকল্পনা দিতে বলছি।

সর্বশেষ খবর