বৃহস্পতিবার, ১ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ ০০:০০ টা

হাত হারানো শিশুকে ৩০ লাখ টাকা দেওয়ার নির্দেশ

নিজস্ব প্রতিবেদক

ওয়ার্কশপের কাজ করতে গিয়ে তিন বছর আগে হাত হারানো ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জ উপজেলার ১৩ বছর বয়সী শিশু নাঈম হাসান নাহিদকে ৩০ লাখ টাকা ফিক্সড ডিপোজিট করে দিতে নির্দেশ দিয়েছেন হাই কোর্ট। ভৈরবের নূর ইঞ্জিনিয়ারিং ওয়ার্কশপের মালিককে এই আদেশ বাস্তবায়ন করতে বলা হয়েছে। এ বিষয়ে জারি করা রুল নিষ্পত্তি করে গতকাল বিচারপতি নাইমা হায়দার ও বিচারপতি কাজী জিনাত হকের সমন্বয়ে গঠিত হাই কোর্ট বেঞ্চ এই রায় ঘোষণা করেন। রায়ে আগামী এপ্রিল মাসের মধ্যে ১৫ লাখ টাকার ডিপোজিট এবং আগামী ডিসেম্বর মাসের মধ্যে ১৫ লাখ টাকার ডিপোজিট করতে বলা হয়েছে। ১০ পছর পর নাঈম ডিপোজিটের টাকা উত্তোলন করতে পারবে। একই সঙ্গে শিশুটি এইচএসসি পাস না করা পর্যন্ত প্রতি মাসে তাকে ৭ হাজার টাকা করে দিতে হবে। আদালতে রিট আবেদনকারীর পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী ব্যারিস্টার অনীক আর হক ও মো. বাকির উদ্দিন ভূঁইয়া। সঙ্গে ছিলেন আইনজীবী তামজিদ হাসান। তারা বিনা পারিশ্রমিকে শিশুটির পক্ষে মামলা পরিচালনা করেছেন। ওয়ার্কশপ মালিকের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী কামরুল ইসলাম ও আবদুল বারেক। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল অমিত দাশ গুপ্ত।

২০২০ সালের ১ নভেম্বর একটি জাতীয় দৈনিকে ছাপা প্রতিবেদন অনুয়ায়ী, তখন নাঈম হাসানের বয়স ১০ বছর। চতুর্থ শ্রেণিতে পড়ত। তার বাবা আনোয়ার হোসেন করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব শুরুর সময় কর্মহীন হয়ে পড়েন। তখন সংসারের চাপ সামলাতে নাঈমকে তার মা-বাবা কিশোরগঞ্জের ভৈরবের একটি ওয়ার্কশপে কাজে দেন। এই ওয়ার্কশপে কাজ করতে গিয়েই তার ডান হাতটি মেশিনে ঢুকে যায়। শেষে অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে কনুই থেকে বিচ্ছিন্ন করে ফেলা হয় ডান হাতটি। প্রকাশিত প্রতিবেদনটি যুক্ত করে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার নির্দেশনা চেয়ে ২০২০ সালের ডিসেম্বরে শিশুটির বাবা হাই কোর্টে রিট করেন। রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে ওই বছরের ২৭ ডিসেম্বর হাই কোর্ট রুল দেন। রুলে শিশুটিকে ২ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ দিতে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না, তা জানতে চাওয়া হয়। চার সপ্তাহের মধ্যে বিবাদীদের রুলের জবাব দিতে বলা হয়।

একই সঙ্গে ২০২০ সালের ২৮ সেপ্টেম্বরের ওই ঘটনা নিজ কার্যালয়ের একজন কর্মকর্তা দিয়ে অনুসন্ধান করতে কিশোরগঞ্জের জেলা প্রশাসককে নির্দেশ দেওয়া হয়। আগের ধারাবাহিকতায় রুলের ওপর শুনানি হয়।

সর্বশেষ খবর