বুধবার, ১৪ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ ০০:০০ টা

নির্বাচন-পরবর্তী সহিংসতায় পাল্টাপাল্টি হামলা ভাঙচুর

গাজীপুর প্রতিনিধি

গাজীপুরে কালীগঞ্জের নাগরীতে নির্বাচনের বিরোধকে কেন্দ্র করে পাল্টাপাল্টি হামলা ও গাড়ি ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় উভয় পক্ষের পাঁচ-ছয়জন আহত হয়েছে এবং এক পক্ষের তিনজনকে আটক করা হয়েছে। আটককৃতরা হলো- মো. হায়দার হোসেন, মনজুর হোসেন ও বাকির হোসেন। গতকাল তাদের আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে।

চেয়ারম্যানের বাড়িতে হামলা ও ভাঙচুরের অভিযোগে চেয়ারম্যানের ছোট ভাই আলিউল ইসলাম বাদী হয়ে ৪৬ জনের নাম উল্লেখ করে, আরও ৫০-৬০ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করে কালিগঞ্জ থানায় মামলা করেছেন। মাসুদ মিয়া ও তার ভাইয়ের ওপর হামলার ঘটনায় মো. মোফাজ্জল হোসেন বাদী হয়ে নাগরী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান অলিউল ইসলাম অলিকে প্রধান করে ৬৮ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত ২০-২৫ জনের নামে কালিগঞ্জ থানায় অভিযোগ করেছেন। থানা পুলিশ সূত্রে জানা যায়, কালীগঞ্জ উপজেলার নাগরী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান অলিউল ইসলাম অলি গত দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকা প্রতীকের প্রার্থী মেহের আফরোজ চুমকির পক্ষে নির্বাচন করেন। আর পূর্বাচল এলাকার হরদী গ্রামের মোফাজ্জল হোসেন ও তার ভাই মো. মাসুদ মিয়া স্বতন্ত্র প্রার্থীর পক্ষে নির্বাচন করেন। নির্বাচনে নৌকা প্রতীকের প্রার্থীকে পরাজিত করে ট্রাক প্রতীকের প্রার্থী বিজয়ী হন। আহত মাসুদ মিয়া অভিযোগ করে জানান, নির্বাচনের বিরোধের জেরে গত সোমবার মাগরিবের নামাজের পর নাগরী ইউনিয়নের হরদি বাজার এলাকায় তিনি এবং তার ছোট ভাই মোফাজ্জল হোসেন বসে চা পান করছিলেন। এ সময় মোটরসাইকেল, প্রাইভেট কার ও মাইক্রোবাসযোগে চেয়ারম্যানের সমর্থকরা অতর্কিতে তার ছোটভাই মোফাজ্জলকে মারধর করছে দেখে তাকে বাঁচাতে তিনি এগিয়ে গিয়েছিলেন। এ সময় হামলাকারী তাকে ধরে হরদি বাজার চৌরাস্তা এলাকায় নিয়ে এলোপাতাড়ি মারধর করে। পরে লোকজন তাদের উদ্ধার করে কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে রাত সাড়ে ১০টার দিকে গাজীপুরের শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তিনি আরও অভিযোগ করে জানান, নাগরী ইউনিয়নের চেয়ারম্যানের লোকজন তাদের ওপর হামলা করেছে। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আহত মাসুদ মিয়া ও তার ভাই গাজীপুর-৫ আসনের নবনির্বাচিত সংসদ সদস্য মো. আখতারউজ্জামানের পক্ষে কাজ করেছিলেন। এদিকে মাসুদ মিয়া ও তার ভাইয়ের ওপর হামলার খবর মুহূর্তে স্থানীয়দের মধ্যে ছড়িয়ে পড়লে স্থানীয় লোকজন একত্রিত হয়ে হামলার প্রতিবাদ ও নিন্দা জানাতে রাত সাড়ে ১১টার দিকে চেয়ারম্যান অলিউল ইসলাম অলির বাড়ি বড়কাউ এলাকায় যায়। সেখানে উত্তেজনা দেখা দিলে একপর্যায়ের উভয়পক্ষের মধ্যে হামলা পাল্টা হামলার ঘটনা ঘটে। এ সময় চেয়ারম্যানের বাড়ির সামনে ও রাস্তায় থাকা ছয়টি প্রাইভেট কার ও আটটি মোটরসাইকেল ভাঙচুর করে। উভয় ঘটনায় পাঁচ-ছয়জন আহত হয়েছেন।

আহতদের মধ্যে দুজনের নাম জানা গেছে। তারা হলেন মধ্যে কালীগঞ্জের বড়কাউ গ্রামের মৃত মনির হোসেনের ছেলে মাসুদ মিয়া ও তার ছোট ভাই মোফাজ্জল হোসেন। আহত মাসুদ মিয়া গাজীপুরের শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন। আহতদের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। কালীগঞ্জ থানার ওসি মাহাতাব উদ্দিন জানান, বিষয়টি জানতে পেরে ঘটনাস্থলে পুলিশের একটি টিম পাঠানো হয়। পুলিশ যাওয়ার খবর পেয়ে হামলাকারীরা আগেই সেখান থেকে সটকে পড়ে। এ ঘটনায় কালীগঞ্জ থানায় মামলা হয়েছে। এ ঘটনায় তিনজনকে আটক করা হয়েছে। তাদের আদালতে পাঠানো হয়েছে। নাগরীর হরদি বাজারে মাসুদ মিয়া ও তার ভাইয়ের ওপর হামলার ঘটনায় মো. মোফাজ্জল হোসেন বাদী হয়ে নাগরী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান অলীউল ইসলাম অলীকে প্রধান করে ৬৮ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত ২০-২৫ জনের নামে থানায় অভিযোগ করেছেন।

 

 

সর্বশেষ খবর