তরুণদের পাঞ্জাবি আর তরুণীদের শাড়িতে অমর একুশে বইমেলাজুড়ে ছিল ফাল্গুন আর ভালোবাসার আবহ। একে অন্যের হাত ধরে ঘুরে বেড়ানো আর প্রিয় মানুষের হাতে পছন্দের বই তুলে দিয়ে ভালোবাসায় মগ্ন ছিলেন কপোত-কপোতী। গতকাল ভালোবাসার যুগলবন্দিরা তাদের পছন্দের তালিকায় রেখেছিল কাব্যগ্রন্থ। প্রযুক্তির উৎকর্ষতা ও ডিজিটালাইজেশনের এই অত্যাধুনিক সময়েও প্রেমিকযুগল পরস্পরকে উপহার প্রদানের ক্ষেত্রে বেছে নিয়েছেন কবিতার বই। তবে বরাবরের মতো পুরনো কবিদের বইগুলোই ছিল কপোত-কপোতীদের পছন্দের তালিকায়। এর মধ্যে সমুদ্রগুপ্ত, হেলাল হাফিজ, আল মাহমুদ ও শামসুর রাহমানের কবিতার বই-ই বেশি বিক্রি হয়েছে।
এদিকে গতকাল বসন্তের প্রথম দিন ও ভালোবাসা দিবস হওয়ায় লোকে লোকারণ্য রাজধানী। শাহবাগ থেকে টিএসসি হয়ে বাংলা একাডেমি, শিল্পকলা একাডেমি থেকে ইঞ্জিনিয়ারিং ইনস্টিটিউট, জাতীয় প্রেস ক্লাব থেকে দোয়েল চত্বর সব রাস্তার ভিড়। একাকার হয়ে মিশেছে স্বাধীনতার স্মৃতিবিজড়িত সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের অমর একুশে বইমেলায়। বাসন্তী রঙা সাজে পুরো বইমেলায় ছড়িয়ে পড়ে সৌন্দর্যের অপরূপ সুষমা। মেলায় প্রবেশের সময় যে হাত ছিল প্রিয় মানুষের হাতে, আর পরে মেলা প্রাঙ্গণ ত্যাগ করার সময় সেই হাতে শোভা পেয়েছে বই। ফাল্গুনী ভালোবাসার উচ্ছ্বাসের বাঁধভাঙা জোয়ারে প্রায় সব স্টল ও প্যাভিলিয়নেই ছিল বইপ্রেমীদের উপচেপড়া ভিড়। ভালোবাসা ও ফাগুন দিনের বিক্রি নিয়ে অন্বেষা প্রকাশনের মোহাম্মদ শাহাদাত হোসেন বলেন, মেলায় বইপ্রেমী ও দর্শনার্থীদের ঢল নামবে সেটা আগে থেকেই প্রত্যাশা করেছিলাম। তবে যতটা প্রত্যাশা করেছিলাম তার চেয়ে বেশি উপস্থিতি লক্ষ্য করা গেছে। ডিজিটাল যুগের এই সময়েও কাগজে মুদ্রিত বইয়ের প্রতি পাঠকদের আগ্রহ আমাদের অনেক বেশি আনন্দিত করেছে। মানুষ মেলায় আসছে, এটা নিঃসন্দেহে খুশির খবর। ১০ জন আসার পর যদি দুজনও কেনে তাহলেই মেলার সার্থকতা। মানুষের আসার অভ্যাস তৈরি হলে কেনার অভ্যাস তৈরি হবেই। গতকাল ১৪তম দিনে নতুন বই এসেছে ৯১টি।
![](/assets/archive/images/Print-Edition/2024/02.February%20-2024/15-02-2024/BD-Pratidin_2024-02-15-23.png)
মূল মঞ্চ : বিকাল ৪টায় বইমেলার মূলমঞ্চে অনুষ্ঠিত হয় ‘ভাষাসংগ্রামী গাজীউল হক’ শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠান। এতে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন রাফাত আলম মিশু। আলোচনায় অংশ নেন সুজাতা হক এবং মোহাম্মদ হুমায়ুন কবির। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন অধ্যাপক আবদুল মান্নান চৌধুরী। সন্ধ্যায় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে কবিতা পাঠ করেন কবি মারুফুল ইসলাম, মাসুদুজ্জামান, ইসমত শিল্পী এবং সাহেদ মন্তাজ। আবৃত্তি করেন মাসকুর-এ-সাত্তার কল্লোল, মাসুদুজ্জামান ও চৈতালী হালদার। পুথি পাঠ করেন মো. শহীদ ও মো. কুদ্দুস মিয়া। সংগীত পরিবেশন করেন শিল্পী রফিকুল আলম, খুরশীদ আলম, মামুনুল হক সিদ্দিক, মুর্শিদুদ্দীন আহম্মদ, মো. রেজওয়ানুল হক, কাজী মুয়ীদ শাহরিয়ার সিরাজ জয়, আঞ্জুমান আরা শিমুল, চম্পা বণিক, শরণ বড়ুয়া এবং অনন্যা আচার্য।