শনিবার, ১৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ ০০:০০ টা

গ্রামীণ খাবারের স্বাদ ঘরে ঘরে পৌঁছে দিতে নাফিজের আন্দোলন

বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক

গ্রামীণ খাবারের স্বাদ ঘরে ঘরে পৌঁছে দিতে নাফিজের আন্দোলন

শাহবাগের ফুটপাতে দেশি চালের হাট। সিরাজগঞ্জ ও এর আশপাশের জেলার যমুনা নদীর চর থেকে সংগ্রহ করা ওই দেশি চালগুলোর নামও অদ্ভুত। তার হাটেই পাওয়া যায় প্রায় ১৭ জাতের দেশি চাল।

এর মধ্যে রয়েছে বাসমতি, রাতা বোরো, পোলাও বৌ, খুদ, পাইজাম, বাঁশফুল, বিরই, গাইজ্জা, চাপালী লো ফাইবার, চামারা আতপ, চামারা ফুল, চামারা হাফ ফাইবার, চামারা লো, কালা বকরি। চালের পাশাপাশি ধান বীজও বিক্রয় করেন তিনি। এ ছাড়াও তার হাটে রয়েছে সরিষার তেল, কালো জিরার তেল, সরিষা ফুলের মধু, হট হানি, যবের ছাতু, আখের রসের চিনি, আখের রসের দানাদারগুড়, আখ পাটাগুড়, খেজুর গুড়, দেশি লাল আলু, টক বড়ই দ্যাশাল, চিনি চম্পা ও ভিমাইটা কলা, শুকনা মরিচ, নারিকেল, কাঁচা হলুদ, যমুনা চরের দ্যাশাল, মাসকলাই ডাল, শালগম, বেগুন, মুলা, দ্যাশাল কেশর, টমেটো, লাউ, কুমড়া, শীম, পেপে, জামবুরা, পেয়ারা, পালং শাক, মুলা শাক, লাউ, বৈতা শাক, ধনে ইত্যাদি। প্রতি শুক্রবার সকাল থেকে রাত পর্যন্ত এ পসরা বসে শাহবাগে জাতীয় জাদুঘরের সামনের আইল্যান্ডে। দেশের বিলুপ্ত প্রায় খাদ্য নিরাপত্তাকে পুনর্জীবন দানের জন্য সামর্থ্যরে বাইরে গিয়ে নাফিজের এ এক প্রাণান্তকর প্রচেষ্টা। ঢাকা রেসিডেনশিয়াল স্কুল ও কলেজে পড়াশোনা শেষ করে তিনি ভর্তি হন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে। সেখানে পড়াশোনা শেষ করে একটি বেসরকারি ব্যাংকে চাকরি করেন। কিন্তু এ চাকরি তার ভালো লাগে না। এক দশক আগে দেশে খাদ্যে ভেজাল ও ফরমালিন যুক্ত খাবারে বিতশ্রদ্ধ হয়ে ‘বিশুদ্ধ খাবার’ সংগ্রহের মিশন নিয়ে মাঠে নামেন তিনি। তার এ উদ্যোগের সঙ্গে যোগ দেন আরও কয়েক যুবক। এদের একজন মেহেদি। রবিবার থেকে বৃহস্পতিরার অফিস করেই সেই রাতেই দেশি খাদ্যের সমারোহ নিয়ে নাফিসের সঙ্গে ছুট দেন ঢাকার শাহবাগে। যে সময় তারা ঢাকায় আসতে পারেন না তখন সময় কাটে যমুনার চরে কৃষকের উঠানে। নাফিজ বলেন, ‘ছোট থেকেই আমি ছিলাম প্রকৃতি প্রেমী, কৃষি প্রেমী। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়াশোনার সময় রাজনৈতিক নোংরামির কারণে হলে থাকিনি। ছাত্র জীবন শেষে ব্যাংকে জব করতাম সেটাও ভালো লাগেনি। আমি ব্যবসা করতে গিয়ে অনেকবার ব্যর্থতার শিকার হয়েছি। তবে মনোবল হারাইনি। আমার স্বপ্ন হচ্ছে- আমি আমাদের গ্রামের দাদা-নানার যে খাবারের স্বাদ, সেটা সবার মাঝে ছড়িয়ে দিতে চাই। আপাতত মিরপুর ও শাহবাগে আমি এই বাজার বসানোর কাজ করে যাচ্ছি। সপ্তাহে ৩দিন করার ইচ্ছা আছে।’

সর্বশেষ খবর