খুলনার পাইকগাছায় দস্যুতা ও চোখে আঠা জাতীয় পদার্থ ‘গ্লু’ লাগিয়ে ধর্ষণের মামলায় চারজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এর মধ্যে মূল আসামি ইমামুল জোয়াদ্দার এনামুলকে (২৩) ওয়ান শুটার গান, চেতনানাশক ট্যাবলেট, মাদকসহ গ্রেফতার করা হয়।

এ ছাড়া চোরাই স্বর্ণালংকার কেনার অভিযোগে সুমন হালদার, চুরি হওয়া মোবাইল হেফাজতে থাকায় এনামুলের মা রাশেদা বেগম ও একই এলাকার আবদুস সালামকে গ্রেফতার করা হয়।

তিনি বলেন, আসামি এনামুল পরপর একই ধরনের কয়েকটি অপরাধ ঘটিয়েছেন। ১১ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যায় পাইকগাছার রাড়ুলিতে গৃহবধূর রান্নাঘরে রাইসকুকারে ভাতের সঙ্গে তিনি চেতনানাশক মেশান। রাত ২টায় ছাদের সিঁড়িঘর দিয়ে ঘরে ঢোকেন। ঘরে ঢুকে মূল্যবান জিনিসপত্র খোঁজাখুঁজির একপর্যায়ে গৃহবধূর ঘুম ভেঙে গেলে তিনি প্রথমে হাত দিয়ে তার মুখ চেপে ধরেন। তারপর পকেটে থাকা ‘সুপার গ্লু’ ভিকটিমের চোখে লাগিয়ে দেন। চিৎকার করলে এনামুল শাবল দিয়ে তার ঘাড়ে আঘাত করেন। এতে চোয়ালের নিচে গৃহবধূর রক্তক্ষরণ হয়। গৃহবধূ অজ্ঞান হয়ে গেলে এনামুল তার পোশাক খুলে হাত-মুখ বেঁধে শারীরিক লাঞ্ছিত করেন। এর মধ্যে গৃহবধূর জ্ঞান ফিরলে ধস্তাধস্তি হয়। ওই সময় আশপাশের লোকজন জেগে উঠে চোর চোর বলে চিৎকার করলে এনামুল গৃহবধূর কান থেকে সোনার দুল টান দিয়ে ছিনিয়ে নিয়ে পালিয়ে যান। এতে কানের লতি ছিঁড়ে যায়। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সুশান্ত সরকার বলেন, পুরো ঘটনার সময় বাড়িতে ভিকটিম একাই ছিলেন। তার স্বামী কাঁচামাল ব্যবসায়ী ব্যবসার কাজে বাইরে ছিলেন। এরপর ১৩ ফেব্রুয়ারি পাইকগাছার বিরাশির মোড় ও ১৪ ফেব্রুয়ারি গদাইপুরে রাতে দুই বাড়িতে ঢুকে এনামুল মোবাইল ফোন ও স্বর্ণালংকার চুরি করেন। তবে বিরাশির মোড়ে চুরির সময় তার পকেট থেকে রাড়ুলিতে গৃহবধূকে নির্যাতনের পর ছিনিয়ে আনা মোবাইল ফোনটি পড়ে যায়।

সেখানে তার ব্যবহৃত স্যান্ডেলও পাওয়া যায়। পুলিশ মোবাইল ফোন ও স্যান্ডেলের সূত্র ধরে তাকে ১৫ ফেব্রুয়ারি কপিলমুনি পূর্বকাশিমপুর থেকে গ্রেফতার করে। এ সময় তার থেকে ওয়ান শুটার গান, চেতনানাশক ট্যাবলেট ও ইয়াবা উদ্ধার হয়। পুলিশ জানায়, জিজ্ঞাসাবাদে এনামুল ১১ ফেব্রুয়ারি রাড়ুলিতে সন্ধ্যার পর ওই গৃহবধূর রাইসকুকারে ভাতের সঙ্গে চেতনানাশক ট্যাবলেট মিশিয়ে রাতে চুরির কথা স্বীকার করেছেন। তবে ধর্ষণের কথা স্বীকার করেননি।