শনিবার, ১৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ ০০:০০ টা

সন্তান বিক্রি করলেন জুয়ায় ঋণগ্রস্ত বাবা

গাইবান্ধা প্রতিনিধি

গাইবান্ধার পলাশবাড়ীতে ২ লাখ টাকার বিনিময়ে একদিনের ছেলে সন্তানকে বিক্রির অভিযোগ উঠেছে জুয়ায় ঋণগ্রস্ত বাবা হিরেণ চন্দ্রের বিরুদ্ধে। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ঘটনাটি প্রকাশ পেলে এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়। বুধবার বিকালে জেলার পলাশবাড়ী উপজেলার বরিশাল ইউনিয়নের ভবানীপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। অভিযুক্ত হিরেণ ওই গ্রামের মৃত নয়ন চন্দ্র বিশ্বাসের ছেলে। তিনি পেশায় কর্মকার। এ ঘটনায় জড়িত অপর দুজন গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার প্রান্ত ও পান্থপাড়া এলাকার গোবিন্দের স্ত্রী ভক্তি রানী। তাদের দাবি সন্তান বিক্রি করেননি, দত্তক দিয়েছেন তারা। জানা গেছে, জুয়া খেলায় আসক্ত হিরেণ সংসারের সবকিছু বিক্রি করে এখন নিঃস্ব। একদিকে জুয়া খেলার নেশা অপরদিকে সংসারের অভাবে সদ্য ভূমিষ্ঠ একদিনের ছেলে সন্তানকে বিক্রি করেন হিরেণ। এতে সহযোগিতা করেন গোবিন্দগঞ্জের প্রান্ত ও তারই এলাকার ভক্তি রানী নামের এক নারী। স্থানীয়রা জানান, প্রায় দুই যুগ আগে বিয়ে হয় হিরেণ-ঝুম্পা দম্পতির। রনি, নিরঞ্জন, রাবিন্দ্র ও জয়দেব নামের চারটি পুত্র সন্তানও আছে এ দম্পতির। মঙ্গলবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) রাতে আরও এক পুত্র (পঞ্চম) সন্তানের জন্ম হয় তাদের। ওই সন্তানকে দুই লাখ টাকায় বিক্রি করে দেন হিরেণ।

অভিযুক্ত বাবা হিরেণ চন্দ্র বলেন, সন্তান বিক্রির অভিযোগ মিথ্যা। তবে দত্তক দিয়েছি। গোবিন্দগঞ্জের প্রান্ত আর ভক্তি রানীর সাথে তিনজন নারী ও একজন পুরুষ লোক মাইক্রোবাস যোগে সন্তানকে নিয়ে গেছে। তাদের চেনেন না তিনি। হিরেণ বলেন, শুনেছি তাদের বাড়ি রাজশাহীতে। হিরেণের স্ত্রী ওই শিশুর মা ঝুম্পা রানী দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, হিরেণ জুয়ায় হেরে সংসারের সবকিছু শেষ করে ফেলেছে। এবার আমার কোলের সন্তান বিক্রি করে দিয়েছে। সন্তান নিয়ে যাওয়ার সময় তারা আমাদের কাছ থেকে একটা কাগজে সই নিয়েছেন।

গোবিন্দগঞ্জের প্রান্তের সঙ্গে ফোনে কথা হলে তিনি বলেন, ওই দম্পত্তি নিজের ইচ্ছায় তাদের সন্তান দিয়েছে। আমাদের কাছে পেপার আছে। কার কাছে শিশুটিকে দেওয়া হয়েছে তাদের নাম-পরিচয় দিতে রাজি হননি প্রান্ত।

ভক্তি রানী বলেন, শিশুটিকে যাদের কাছে দেওয়া হয়েছে তাদের সঙ্গে এক বিয়ের অনুষ্ঠানে পরিচয় হয়। সেখানেই জেনেছি তারা নিঃসন্তান। পরে ফোনে যোগাযোগের একপর্যায়ে তাদের শিশুটিকে দত্তক দেওয়া হয়েছে। তাদের বাড়ি কোথায় জানতে চাইলে তিনি পরিচয় দিতে রাজি হননি। বরিশাল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম বলেন, সন্তান বিক্রি কিংবা দত্তক রাখার বিষয়টি অবগত নই। পলাশবাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আরজু মো. সাজ্জাদ হোসেন বলেন, কেউ যদি সন্তান বিক্রি করে থাকে তাহলে সেটি অপরাধ। জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। পলাশবাড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কামরুল হাসান বলেন, অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সর্বশেষ খবর