সোমবার, ১৯ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ ০০:০০ টা

কঠিন চ্যালেঞ্জে সব চেয়ারম্যান

যশোরে আট উপজেলা পরিষদ নির্বাচন

সাইফুল ইসলাম, যশোর

কঠিন চ্যালেঞ্জে সব চেয়ারম্যান

উপজেলা পরিষদ নির্বাচনকে সামনে রেখে যশোরের আট উপজেলায় সম্ভাব্য চেয়ারম্যান ও ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থীরা দৌড়ঝাঁপ শুরু করেছেন। বিশেষ করে আওয়ামী লীগ এবার দলীয় মনোনয়ন না দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়ায় হিসাব-নিকাশ অনেকটাই পাল্টে যাচ্ছে। নিজ দলের নেতাদের কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে যাচ্ছেন বর্তমান চেয়ারম্যানরা। সম্ভাব্য প্রার্থীরা স্থানীয় সংসদ সদস্য ও শীর্ষ নেতাদের বিভিন্ন বলয়ে সক্রিয় হচ্ছেন। সব মিলিয়ে উপজেলা পরিষদ নির্বাচন ঘিরে এখন যশোরে আওয়ামী লীগের রাজনীতি চাঙ্গা হয়ে উঠেছে।

সবশেষ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে যশোরের আট উপজেলার মধ্যে ছয়টিতে নৌকা প্রতীক নিয়ে বিজয়ী হয়েছিলেন প্রার্থীরা। তারা হলেন যশোর সদর উপজেলায় মোস্তফা ফরিদ আহমেদ চৌধুরী, চৌগাছা মোস্তানিছুর রহমান, শার্শায় সিরাজুল হক মঞ্জু, মনিরামপুরে নাজমা খানম, অভয়নগরে শাহ ফরিদ জাহাঙ্গীর ও বাঘারপাড়ায় ভিক্টোরিয়া পারভীন সাথী। এ ছাড়া আওয়ামী লীগেরই দুই নেতা কেশবপুরে কাজী রফিকুল ইসলাম ও ঝিকরগাছায় মনিরুল ইসলাম স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নৌকার প্রার্থীদের পরাজিত করে উপজেলা চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। বর্তমান সব চেয়ারম্যানই এবার দলীয় প্রতিপক্ষের কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখে পড়বেন বলে স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা মনে করছেন।

সম্ভাব্য প্রার্থীরা নানা কৌশলে ইতোমধ্যেই তাদের প্রার্থী হওয়ার বিষয়টি জানান দিচ্ছেন। সদর উপজেলায় বর্তমান চেয়ারম্যান মোস্তফা ফরিদ আহমেদ চৌধুরী আবারও প্রার্থী হবেন। তবে ভাইস চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন বিপুলও আর ভাইস থাকতে চাচ্ছেন না, পুরোপুরি চেয়ারম্যান হতে চান। ব্যানার, ফেস্টুন ও গণসংযোগের মাধ্যমে ইতোমধ্যেই জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি মেহেদী হাসান মিন্টু, যুবলীগ নেতা তৌহিদ চাকলাদার ফন্টু, জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক শফিকুল ইসলাম জুয়েল, যুবমহিলা লীগের নেত্রী ফাতেমা আনোয়ার তাদের প্রার্থিতার বিষয়টি জানান দিয়েছেন।

চৌগাছায় বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান মোস্তানিছুর রহমানকে চ্যালেঞ্জ জানাতে গণসংযোগ চালিয়ে যাচ্ছেন একাধিক নেতা। উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এস এম হাবিবুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক মেহেদী মাসুদ চৌধুরী, বর্তমান উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান দেবাশীষ মিশ্র জয় এবার উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থী হবেন বলে শোনা যাচ্ছে। ঝিকরগাছা উপজেলা চেয়ারম্যান মনিরুল ইসলামকে এবার নিজ দলেরই কয়েকজন শক্তিশালী প্রার্থীর বিরুদ্ধে লড়তে হবে। চেয়ারম্যান প্রার্থী হতে বর্তমান ভাইস চেয়ারম্যান সেলিম রেজা, জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি আলী রায়হান, উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি জাহাঙ্গীর আলম মুকুল মাঠে গণসংযোগ চালিয়ে যাচ্ছেন।  শার্শা উপজেলা চেয়ারম্যান সিরাজুল হক মঞ্জুর সঙ্গে এবার প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন বর্তমান ভাইস চেয়ারম্যান মেহেদী হাসান। আওয়ামী লীগ নেতা অধ্যক্ষ ইব্রাহিম খলিল, উপজেলা যুবলীগের নেতা অহিদুজ্জামান, আওয়ামী লীগ নেতা সোহরাব উদ্দিন, হাসান ফিরোজ টিংকু, হাদিউজ্জামানও মাঠে আছেন উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থী হতে।

মনিরামপুর উপজেলা পরিষদের বর্তমান চেয়ারম্যান নাজমা খানম এবারও প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন। তবে তার সামনে কয়েকজন শক্তিশালী সম্ভাব্য প্রার্থী রয়েছেন। সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান আমজাদ হোসেন লাভলু, যশোর-৫ আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য ইয়াকুব আলীর ভাই অলিয়ার রহমান, সাবেক উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান মিকাইল হোসেন, আওয়ামী লীগ নেতা হাবিব খানও প্রার্থী হতে গণসংযোগ করে যাচ্ছেন।

কেশবপুর উপজেলা পরিষদের বর্তমান চেয়ারম্যান আওয়ামী লীগ নেতা কাজী রফিকুল ইসলাম এবারও প্রার্থী হবেন। তিনি গত নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে বিজয়ী হন। এবার তাকে লড়তে হবে একাধিক দলীয় প্রার্থীর বিরুদ্ধে। এই উপজেলায় প্রার্থী হতে নিয়মিত গণসংযোগ করে যাচ্ছেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক গাজী গোলাম মোস্তফা, যুগ্ম সম্পাদক নাসিমা সাদেক, দফতর সম্পাদক মফিজুর রহমান মফিজ, উপজেলা কৃষক লীগের সভাপতি সৈয়দ নাহিদ হাসান প্রমুখ।

বাঘারপাড়া উপজেলা পরিষদের বর্তমান চেয়ারম্যান ভিক্টোরিয়া পারভীন সাথী উপনির্বাচনে বিজয়ী হন। তার স্বামী আওয়ামী লীগ নেতা নাজমুল ইসলাম কাজলের মৃত্যুতে চেয়ারম্যান পদ শূন্য হলে পরবর্তীতে উপনির্বাচনে সাথী দলীয় মনোনয়ন পান। এবারও তিনি প্রার্থী হবেন। তবে এবার দলীয় মনোনয়নের বিষয়টি না থাকায় তাকে শক্তিশালী দলীয় প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে নির্বাচন করতে হবে। নির্বাচন সামনে রেখে এ উপজেলায় সাথী ছাড়াও গণসংযোগ ও শোডাউন করে চলেছেন যশোর জেলা আওয়ামী লীগের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিবিষয়ক সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার আশরাফুল কবীর বিপুল ফারাজি, বর্তমান ভাইস চেয়ারম্যান আবদুর রউফ, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হাসান আলী ও উপজেলা যুবলীগের আহ্বায়ক রাজীব রায়।

অভয়নগর উপজেলা পরিষদের বর্তমান চেয়ারম্যান শাহ ফরিদ জাহাঙ্গীর এবারও প্রার্থী হবেন। পাশাপাশি শ্রমিক নেতা রবিন অধিকারী ব্যাচা, ভাইস চেয়ারম্যান আকতারুজ্জামান তারুও প্রার্থী হবেন বলে শোনা যাচ্ছে।

 

সর্বশেষ খবর