মঙ্গলবার, ২০ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ ০০:০০ টা

অমর একুশে প্রস্তুতি সম্পন্ন

বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক

অমর একুশে প্রস্তুতি সম্পন্ন

দেয়ালে দেয়ালে নানা চিত্রকর্মে প্রস্তুতি অমর একুশে পালনের -জয়ীতা রায়

বছর ঘুরে আবার এসেছে ভাষার মাস। বায়ান্নর সেই একুশে ফেব্রুয়ারি বাঙালির বুকে চির সতেজ। এই একটি দিনকে ঘিরে কত আবেগ, কত কবি লিখেছেন কত কবিতা আর লেখা হয়েছে বিস্তর গল্প ও উপন্যাস। শহীদ মিনারের বেদিতে একটি ফুল দেওয়া যেন শহীদদের চরণ ছুঁয়ে একটিবার সালাম করা।

আনুষ্ঠানিক-অনানুষ্ঠানিক দুভাবেই প্রতিবছর শহীদ মিনারে বাঙালিরা তাদের সম্মান ও ভালোবাসার মিশেলে জানায় বিনম্র শ্রদ্ধা।

মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে সব ধর্ম-বর্ণ-লিঙ্গ-শ্রেণির মানুষ প্রতিবছর পুষ্পস্তবক অর্পণ করতে জমায়েত হন কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে। আত্মত্যাগের বিনিময়ে যারা বাংলা ভাষার মর্যাদা রক্ষায় স্বীকার করেছেন চরম ত্যাগ সেই ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদনে পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হয় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে।

রাষ্ট্রাচার অনুযায়ী রাত ১২টা ১ মিনিটে একুশের প্রথম প্রহরে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের বেদিতে প্রথম পুষ্পস্তবক অর্পণ করবেন রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, জাতীয় সংসদের স্পিকার, বাংলাদেশের প্রধান বিচারপতি, মন্ত্রিবর্গ, জাতীয় সংসদের ডেপুটি স্পিকার ও জাতীয় সংসদের বিরোধীদলীয় নেতা। এরপর পর্যায়ক্রমে পুষ্পস্তবক অর্পণ করবেন তিন বাহিনীর প্রধান, ভাষাসৈনিক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, সিনেট ও সিন্ডিকেট সদস্য, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি, অনুষদের ডিনবৃন্দ ও হলের প্রাধ্যক্ষবৃন্দ। এরপর সর্বস্তরের জনসাধারণের শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পণের জন্য শহীদ মিনার উন্মুক্ত থাকবে। এ বছর ২১তম বার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে সরকারপ্রধান হিসেবে পুষ্পস্তবক অর্পণ করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এর আগে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে ১৯৯৬ সাল-২০০১ এবং ২০০৮ সাল থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত মোট ২০ বার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন শেখ হাসিনা। শেখ হাসিনার প্রধানমন্ত্রী হিসেবে ২১ বার পুষ্পস্তবক অর্পণের দুর্লভ ছবি নিয়ে এবারের অমর একুশে ভাষা শহীদ দিবসে থাকছে বিশেষ প্রদর্শনী।

সোমবার দুপুরে মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস সার্বিক প্রস্তুতি নিয়ে সংবাদ সম্মেলনে ছবি প্রদর্শনীর কথা জানান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল। সার্বিক প্রস্তুতি বিষয়ে উপাচার্য বলেন, রাষ্ট্রাচার অনুযায়ী একুশের প্রথম প্রহরে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণের উদ্দেশ্যে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের বেদিমূল প্রস্তুত করার কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে এবং যথাসময়েই তা সম্পন্ন হবে। অন্যান্য বারের তুলনায় এবার নিরাপত্তার বিষয়টি জোরদার করা হয়েছে। পুরো এলাকা সিসি ক্যামেরার আওতায় আনা হয়েছে। নিরাপত্তার বিষয়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী গভীরভাবে তদারকি করছে। এ বছর প্রতিটি সংগঠন ও প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে এবং ব্যক্তি পর্যায়ে শহীদ মিনারের বেদিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করতে পারবেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃক এই রাষ্ট্রাচার সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে রাত ১২টা ৩০ মিনিট পর্যন্ত ধৈর্য ধারণ করে সুশৃঙ্খলভাবে অবস্থান করতে সর্বস্তরের জনসাধারণের প্রতি উপাচার্য আহ্বান জানান।

পথনির্দেশনা : সর্বস্তরের জনসাধারণ পলাশী মোড় হয়ে সলিমুল্লাহ মুসলিম হল ও জগন্নাথ হলের সামনে দিয়ে শহীদ মিনারে যাবেন এবং পুষ্পস্তবক অর্পণ করবেন। শহীদ মিনারে শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পণের পর সেখান থেকে বিশ্ববিদ্যালয় খেলার মাঠের সামনের রাস্তা দিয়ে দোয়েল চত্বর ও ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের রাস্তা দিয়ে চানখাঁর পুল হয়ে শুধু প্রস্থান করা যাবে, শহীদ মিনারের দিকে আসা যাবে না। প্রবেশপথে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারীসহ বিএনসিসি, রেড ক্রিসেন্ট, রোভার স্কাউটস, রেঞ্জার ও স্বেচ্ছাসেবকবৃন্দ বিভিন্ন দায়িত্বে নিয়োজিত থাকবেন।

সর্বশেষ খবর