রবিবার, ২৫ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ ০০:০০ টা

দল শক্তিশালী করতে মাঠে আওয়ামী লীগ

♦ ঈদের পর টানা সম্মেলনে দল পুনর্গঠনের পরিকল্পনা ♦ রমজানে চলবে প্রস্তুতিমূলক তৎপরতা

শরিফুল ইসলাম সীমান্ত

দল শক্তিশালী করতে মাঠে আওয়ামী লীগ

দলীয় সাংগঠনিক কর্মকাণ্ড গতিশীল করে দলকে শক্তিশালী করার জন্য মাঠে নেমেছে আওয়ামী লীগ। আসন্ন ঈদুল ফিতরের পর থেকে শুরু হবে দলটির টানা সম্মেলন। প্রস্তুতি হিসেবে পুরো রমজান মাসব্যাপী চলবে জোর তৎপরতা। দলের বিভিন্ন পর্যায়ের মেয়াদোত্তীর্ণ কমিটিগুলোর পুনর্গঠন ও নেতা-কর্মীদের মধ্যকার বিরোধ মিটিয়ে ফেলাই হবে লক্ষ্য। দলীয় সভানেত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে ইতোমধ্যে মাঠে নেমেছেন দলের কেন্দ্রীয় নেতারা।

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ধকল সামলে ওঠার পর এখন দলকে গুছিয়ে নিতে চায় ক্ষমতাসীনরা। দলের সর্বশেষ যৌথ সভায় বিভাগীয় দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতাদের উদ্দেশ করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের জানিয়েছেন, মেয়াদোত্তীর্ণ বিভিন্ন শাখার সম্মেলন, সহযোগী সংগঠনগুলোর অসমাপ্ত সম্মেলন, কমিটি গঠন প্রক্রিয়ায় বিলম্ব নিয়ে সব সাংগঠনিক সমস্যার সমাধান জরুরি হয়ে পড়েছে। বিভাগীয় দায়িত্বপ্রাপ্তরা এসব সমস্যার সমাধান করতে প্রয়োজনে সমস্যা জর্জরিত শাখাগুলোকে ঢাকায় ডেকে এনে বসতে পারেন। এটি দলীয় সভানেত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশ। তিনি আরও জানান, আগামী রমজানে এসব সাংগঠনিক কর্মকাণ্ডের ওপর জোর দিতে হবে। দলীয় সূত্রে বলছে, দলীয় প্রধানের কাছ থেকে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দলীয় ও স্বতন্ত্র প্রার্থীদের মধ্যে জন্ম নেওয়া অন্তঃকোন্দল দূর করার নির্দেশনা পেয়ে এরই মধ্যে মাঠে নেমে পড়েছেন দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতারা। ইতোমধ্যে কয়েকটি জেলাকে ঢাকায় বৈঠকের জন্য সম্ভাব্য তারিখ দেওয়া হয়েছে। বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয় ও ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে এসব বৈঠক করা হবে। বিরোধ মেটাতে তেজগাঁওয়ের ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে আগামী বুধবার ডেকে পাঠানো হয়েছে চট্টগ্রাম বিভাগীয় আওয়ামী লীগ, সহযোগী ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনের সব ইউনিটকে। আওয়ামী লীগের ৭৮টি সাংগঠনিক জেলা ও ৪৯৫টি উপজেলার মধ্যে ৩০টির বেশি জেলা-উপজেলায় কমিটির মেয়াদ শেষ হলেও যথাসময়ে সম্মেলন হয়নি। আর ১৮টি জেলা ও মহানগরে সম্মেলন হলেও পূর্ণাঙ্গ কমিটি নেই বেশ কয়েক বছর ধরে। মেয়াদোত্তীর্ণ কমিটি নিয়ে খোদ রাজধানীতেই বেহাল অবস্থা আওয়ামী লীগের। আওয়ামী লীগের ‘ভ্যানগার্ড’ হিসেবে পরিচিত ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ আওয়ামী লীগ এক বছর ধরে চলছে মেয়াদোত্তীর্ণ কমিটি দিয়ে। উভয় কমিটির আওতাধীন ওয়ার্ড ও থানাগুলোর সম্মেলন হলেও দেওয়া হয়নি কমিটি। জানা যায়, ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সর্বশেষ সম্মেলন হয়েছিল ২০১৯ সালের ৩০ নভেম্বর। ওই দিন উভয় শাখার সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদে চারজনের নাম ঘোষণা করা হলেও পূর্ণাঙ্গ কমিটি দেওয়া হয় প্রায় এক বছর পর, ২০২০ সালের ১৯ নভেম্বর। নিয়ম অনুযায়ী, ২০২২ সালের নভেম্বরে সম্মেলন হওয়ার কথা থাকলেও তা এখন পর্যন্ত হয়নি। ফলে এক বছরের অধিক সময় ধরে রাজধানীতে মেয়াদোত্তীর্ণ কমিটি দিয়েই চলছে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক কার্যক্রম। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পূর্বে রাজধানীতে আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক কর্মসূচিগুলোতে মেয়াদোত্তীর্ণ কমিটির নেতিবাচক প্রভাব লক্ষ্য করা গেছে। রাজধানী কেন্দ্রিক বিএনপির রাজনৈতিক কর্মসূচির পাল্টা কর্মসূচি হিসেবে আওয়ামী লীগ শান্তি সমাবেশ কর্মসূচিতে লোকসমাগম বাড়াতে রাজধানীর আশপাশের জেলাগুলো থেকে নেতা-কর্মীদের ডেকে আনতে হয়েছে। তবে দল পুনর্গঠনের জোর তৎপরতার এই পর্বে অবশেষে সুসংবাদ পেতে যাচ্ছেন মহানগর আওয়ামী লীগের পদপ্রত্যাশী নেতা-কর্মীরা। দলকে শক্তিশালী করতে সাংগঠনিক গতিশলীতা বৃদ্ধি ও ঐক্যবদ্ধ থাকার কোনো বিকল্প নেই জানিয়ে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, আওয়ামী লীগ দেশের বৃহৎ ও গতিময় রাজনৈতিক সংগঠন। সংগঠনের চাকা সচল রাখতে তৃণমূল থেকে কেন্দ্র সকল পর্যায়েই আমরা সমান গুরুত্ব দিই। নির্বাচনি ডামাডোলে জেলা, উপজেলা, মহানগর ও পৌর আওয়ামী লীগের সম্মেলন সময়মতো হয়নি। কিছু জায়গায় আবার সম্মেলন হলেও কমিটি করা হয়নি। আর কিছু কমিটি অপূর্ণাঙ্গ রয়েছে। এগুলোর বিষয়ে দলীয় সভানেত্রীর নির্দেশনা অনুযায়ী দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর