নরসিংদীর রায়পুরায় তালাক দেওয়ার জেরে স্ত্রীসহ নিজের গায়ে পেট্রল ঢেলে আগুন দেন এক ব্যক্তি। পরে তাদের উদ্ধার করে নারীকে ঢাকায় শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে এবং স্বামীকে নরসিংদী সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। ওই নারীর শরীরের ৮০ শতাংশ দগ্ধ হয়েছে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসক। রবিবার রায়পুরা উপজেলার মরজাল ইউনিয়নের ব্রাহ্মণেরটেক এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। গতকাল এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন রায়পুরা থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আলমগীর হোসেন। দগ্ধ লতা আক্তার (৩২) ঢাকার গুলশানের শাহাবুদ্দিন মেডিকেল কলেজ থেকে এমবিবিএস পাস করে বর্তমানে নারায়ণগঞ্জে একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসক হিসেবে কর্মরত।

তিনি ব্রাহ্মণেরটেক গ্রামের মফিজ উদ্দিনের মেয়ে। লতার প্রাক্তন স্বামী খলিলুর রহমান (৪০) গাজীপুরের কাপাসিয়া উপজেলার বেলাশী গ্রামের আতর আলী ব্যাপারীর ছেলে। এ বিষয়ে শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের আবাসিক চিকিৎসক ডা. তরিকুল ইসলাম বলেন, ‘নরসিংদী থেকে দগ্ধ অবস্থায় ওই নারীকে জরুরি বিভাগে আনা হয়। তার শরীরের ৮০ শতাংশ পুড়ে গেছে। বর্তমানে তাকে জরুরি বিভাগে অবজারভেশনে রাখা হয়েছে। তার অবস্থা আশঙ্কাজনক।’ পুলিশ ও স্থানীয়রা বলছে, দীর্ঘদিন প্রেমের পর লতা ও খলিল গোপনে বিয়ে করেন। বিয়ের কিছুদিন পর জানতে পারেন খলিল একজন ড্রাইভার। প্রায় দুই মাস আগে লতা উকিলের মাধ্যমে খলিলকে তালাকনামা পাঠান। কিন্তু খলিল তাকে নিয়ে ঘরসংসার করতে চান। এ নিয়ে উভয়ের মতামতের ভিত্তিতে গত মাসে গ্রামে সালিশ দরবার হয়। এরই মধ্যে রবিবার দুপুরে লতার বাবার বাড়িতে গিয়ে ঘরে ঢুকে দরজা বন্ধ করে দেন খলিল। এ সময় লতা ও নিজের গায়ে পেট্রল ঢেলে আগুন লাগিয়ে দেন খলিল। তাদের চিৎকারে স্থানীয়রা গিয়ে দগ্ধ অবস্থায় তাদের উদ্ধার করে নরসিংদী সদর হাসপাতালে নিয়ে যায়। লতার অবস্থা গুরুতর হওয়ায় তাকে ঢাকায় শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে রেফার করেন চিকিৎসক। এ বিষয়ে মরজাল ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য তুহিন ভূইয়া বলেন, ‘জানতে পেরেছি দীর্ঘদিনের প্রেমের সম্পর্ক থেকে তাদের গোপনে বিয়ে হয়েছিল। কিছুদিন তাদের সংসারও চলে। পরে ওই নারী স্বামীকে তালাক দেন। কিন্তু স্বামী তাকে নিয়ে সংসার করতে চান। এ নিয়ে গ্রাম্য সালিশে বোঝানোর চেষ্টা করা হয়েছিল। নারী সংসার করতে চান না।’ রায়পুরা থানার উপপরিদর্শক আলমগীর হোসেন বলেন, ‘খবর পেয়ে তৎক্ষণাৎ ঘটনাস্থলে গিয়ে তাদের দগ্ধ অবস্থায় উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠাই। উভয়ের শরীরের অধিকাংশ পুড়ে গেছে। এখন পর্যন্ত থানায় কোনো অভিযোগ আসেনি।’