বুধবার, ২৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ ০০:০০ টা

সরকার নির্ধারিত দামেই বিক্রি করতে হবে হার্ট রিং

নিজস্ব প্রতিবেদক

হার্টের রিংয়ের (স্টেন্ট) দাম নির্ধারণ করে দেওয়ার পর পুনর্নির্ধারণের দাবিতে দুই মাসের বেশি সময় আগে হাসপাতালগুলোয় রিং ব্যবহার না করতে চিঠি দিয়েছে ইউরোপীয় স্টেন্ট আমদানিকারকরা। তবে তাদের দাবি উপেক্ষা করে নির্ধারিত দামেই হার্টের রিং বিক্রির নির্দেশ দেয় ওষুধের মূল্য নির্ধারণ কমিটি।

ঔষধ প্রশাসন অধিদফতরের উপপরিচালক ও আইন কর্মকর্তা মো. নুরুল আলম বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, গত বছরের ১২ ডিসেম্বর হার্ট রিংয়ের যে দাম নির্ধারণ করা হয়েছিল, সে দামেই বিক্রি করতে হবে বলে সিদ্ধান্ত হয়েছে। এর ব্যত্যয় ঘটলে ওষুধ ও কসমেটিকস আইন অনুযায়ী ২ লাখ টাকা জরিমানা, দুই বছরের সশ্রম কারাদণ্ড কিংবা উভয় দণ্ড ভোগ করতে হবে। গতকাল বিকালে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণায়ের সভাকক্ষে স্বাস্থ্যসেবা সচিব মো. জাহাঙ্গীর আলমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় এ সিদ্ধান্ত হয়। এ সময় ঔষধ প্রশাসন অধিদফতরের মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মোহাম্মদ ইউসুফসহ অন্য প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন বলে জানান তিনি। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দাম নির্ধারণ কমিটির এক সদস্য বলেন, কমিটি এর আগে হার্টের রিংয়ের যে দাম নির্ধারণ করেছে সেটিই থাকবে। নতুন করে দাম কমছে না বা বাড়ছে না। এরপর দামের বিষয়ে কোনো আলোচনার প্রয়োজন হলে স্টেন্ট আমদানিকারকদের সঙ্গে বৈঠক করবে না ঔষধ প্রশাসন অধিদফতর, মূল কোম্পানির প্রতিনিধির সঙ্গে বসবে। গত বছরের ১২ ডিসেম্বর ২৭টি উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানের ৪৪ ধরনের হার্টের স্টেন্টের দাম কমিয়েছে ঔষধ প্রশাসন অধিদফতর (ডিজিডিএ)। রিংপ্রতি ৩% থেকে ৪৬% পর্যন্ত দাম কমিয়েছিল ডিজিডিএ। কিন্তু সে সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের দিনই (১৬ ডিসেম্বর) ইউরোপীয় স্টেন্ট আমদানিকারকরা দাম পুনর্নির্ধারণের দাবি জানিয়ে হাসপাতালগুলোকে তাদের রিং ব্যবহার না করার জন্য চিঠি দেয়। এর পর থেকে হার্টের রিং পরাতে ভোগান্তিতে রয়েছেন হৃদরোগীরা। হার্টের রিংয়ের দাম নির্ধারণ বৈষম্যমূলক উল্লেখ করে নতুন দাম নির্ধারণের জন্য হাই কোর্টে রিট করেছিল ইউরোপীয় স্টেন্ট আমদানিকারকরা। তবে দাম পুনর্নির্ধারণের বিষয়ে ডিজিডিএ’র আশ্বাসের পরিপ্রেক্ষিতে ১০ জানুয়ারি রিট প্রত্যাহার করে নিয়েছিল তারা। ইউরোপীয় রিং আমদানিকারকরা তখন থেকে বলছে, এ দাম নির্ধারণে শুধু যুক্তরাষ্ট্রের তিনটি প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে ঔষধ প্রশাসন অধিদফতরের ২০১৭ সালে মার্কআপ ফর্মুলা অনুসরণ করা হয়েছে। আমদানিকারক বাকি ২৪ প্রতিষ্ঠানের স্টেন্টের মূল্য নির্ধারণের ক্ষেত্রে মার্কআপ ফর্মুলা মানা হয়নি। তাই মূল্য নতুন করে সমন্বয় না করা পর্যন্ত স্টেন্ট সরবরাহ ও বিক্রি বন্ধ রেখেছে তারা। এপিক টেকনোলজিসের স্বত্বাধিকারী ওয়াসিম আহমেদ বলেন, ‘আমরা ঔষধ প্রশাসনের মিটিংয়ে থাকার জন্য ফোন করেছিলাম কিন্তু তারা আমাদের মিটিংয়ে রাখেনি। তাদের আশ্বাসে আমরা হাই কোর্ট থেকে রিট প্রত্যাহার করেছি, আর এখন তারা দাম বাড়াল না। এখন আমরা কী করব জানি না। মার্কিন স্টেন্ট আমদানিকারক তিন কোম্পানিকে সুবিধা দিতেই তারা এটি করল।’ হাসপাতালগুলো ইউরোপীয় স্টেন্ট এখন থেকে ব্যবহার করতে পারবে কি না-জানতে চাইলে তিনি বলে, ‘এ বিষয়ে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত নিইনি আমরা।’

 

সর্বশেষ খবর