বুধবার, ২৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ ০০:০০ টা

বাড়িতে উড়োজাহাজ তৈরি আলমগীরের

দিনাজপুর প্রতিনিধি

বাড়িতে উড়োজাহাজ তৈরি আলমগীরের

টাকার অভাবে ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ার স্বপ্ন পূরণ হয়নি আলমগীর ইসলামের। তাতে কী! অনলাইন ও ইউটিউব থেকে ধারণা নিয়ে তিনি তিন-চার বছর ধরে বিভিন্ন মডেলের উড়োজাহাজ বানিয়ে ওড়ানোর চেষ্টা করেছেন। অবশেষে সফল হলেন ২০২৪ সালে।

২৩ বছর বয়সী আলমগীরের বাড়ি দিনাজপুরের খানসামা উপজেলার খামারপাড়া ইউনিয়নের ভান্ডারদাহ গ্রামের নূরুল মেম্বার পাড়ায়। তার বানানো উড়োজাহাজটি ১ কিলোমিটার দূরত্বে প্রায় আধা ঘণ্টা উড়তে পারে। যুবকের এই উদ্ভাবন দেখতে এখন প্রতিদিন ভিড় করেন আশপাশের গ্রামের অনেক মানুষ। গতকাল ওই এলাকায় দেখা যায় রিমোট কন্ট্রোল প্রয়োগ করে স্থানীয় খেলার মাঠে উড়োজাহাজ ওড়াচ্ছেন-নামাচ্ছেন আলমগীর।

ভান্ডারদাহ গ্রামের আবদুল মজিদ ও জাহানারা বেগমের টানাটানির সংসার। তাদের তিন ছেলে। ছোট ছেলে আলমগীর। বাড়ির কাজের পাশাপাশি চুক্তিভিত্তিক শ্যালো মেশিন দিয়ে পানি দেওয়া ও বিভিন্ন কাজে সম্পৃক্ত। প্রাইমারি স্কুলে পড়ার সময় থেকেই বিভিন্ন ইলেকট্রনিকস পণ্য বানানোর কাজে সময় ও টাকা ব্যয় করেছেন। ২০১৯ সালে উচ্চমাধ্যমিকেই থেমে যায় তার পড়ালেখা।

প্রায় তিন-চার বছর ধরে বিভিন্ন মডেলের বিমান তৈরি করে উড্ডয়নের চেষ্টার পর সফল হয়েছেন ২০২৪ সালে। এর আগে অনেক বিমান তৈরি করেছেন, ভেঙেছে, আবার নতুন করে তৈরি করেছেন। গেল ডিসেম্বরে নতুন একটি উড়োজাহাজ শুরু করলেন; নির্মাণকাজ ফেব্রুয়ারির শুরুতে শেষ হয়। এরপর বাড়ির পাশে খেলার মাঠে পরীক্ষামূলকভাবে উড়োজাহাজটি আকাশে ওড়ালেন আলমগীর। এলাকায় হইচই পড়ে গেল। ১২ হাজার টাকায় তৈরি এই উড়োজাহাজের বডি ককশিটের। এ ছাড়া ট্রান্সমিটার, রিসিভার, লিপো ব্যাটারি, শক্তির জন্য ব্রাসলেস মোটর, ছোট ফ্যান ও চাকা রয়েছে। আলমগীর ইসলাম বলেন, ছোটবেলার স্বপ্ন ছিল বিমান তৈরির। সেটি আজ পূরণ হয়েছে। তবে একটি ল্যাপটপ ও আর্থিক সক্ষমতা থাকলে এই ছোট বিমানটি আরও উন্নত করা যেত। পৃষ্ঠপোষকতা পেলে আমার শৈশবের এই স্বপ্ন পূরণের ধাপ আরও এগিয়ে যেত। খানসামা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) তাজউদ্দিন বলেন, এমন উদ্ভাবনী কার্যক্রম স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার অগ্রযাত্রার জন্য গুরুত্বপূর্ণ একটা উদাহরণ। এই প্রযুক্তি বিকাশে প্রশাসন আলমগীরের পাশে থাকবে।

 

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর