সোমবার, ৪ মার্চ, ২০২৪ ০০:০০ টা

বিরল আট শকুন অবমুক্তির অপেক্ষায়

দিনাজপুর প্রতিনিধি

বিরল আট শকুন অবমুক্তির অপেক্ষায়

বাংলাদেশে বিলুপ্তপ্রায় বিরল প্রজাতির আট শকুন অসুস্থ অবস্থায় দিনাজপুরে উদ্ধার হয়েছে। তিন দিন আগে এসব শকুন দিনাজপুর জেলার বীরগঞ্জ সিংড়া জাতীয় উদ্যানের চিকিৎসা কেন্দ্রে পাঠানো হয়। তীক্ষ দৃষ্টি ও বিশালাকার পাখি শকুন। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, উদ্ধার হওয়া শকুনগুলো হিমালয় অঞ্চলের। শকুন দেখতে অনেকে ভিড় করছেন। পুরোপুরি সুস্থ হলে এসব শকুনকে প্রকৃতির ভারসাম্য রক্ষায়

অবমুক্ত করা হবে বলে জানান বীরগঞ্জ সিংড়া জাতীয় উদ্যানের বনবিট কর্মকর্তা গয়া প্রসাদ। শকুন প্রশস্ত ডানার ওপর ভর করে উঁচু আকাশে উড়তে পারে। এদের মাথা, গলা বা ঘাড়ে পালক নেই। ডানার প্রবল ঝাপটা আর সমস্বরে বিকট শব্দে মানুষ বুঝতে পারে শকুন এসেছে। কিন্তু এখন আর সেই চিরচেনা শকুনের দেখা পাওয়া যায় না। বট, পাকুড় কিংবা অশ্বত্থের মতো বড় বড় গাছে সাধারণত লোকচক্ষুর অন্তরালে শকুন বাসা বাঁধে। সাধারণত গুহায়, গাছের কোটরে বা পর্বতের চূড়ায় দু-তিনটি সাদা বা ফ্যাকাশে ডিম পাড়ে। বিভিন্ন প্রাণীর মৃতদেহ শকুনের দল মুহূর্তেই খেয়ে সাবাড় করে ফেলে। ফলে পচন ধরা গলিত মৃতদেহগুলো থেকে সংক্রামক রোগ ছড়াতে পারে না। শকুন মানবসমাজের জন্য উপকারী পাখি। বীরগঞ্জের সিংড়ায় চিকিৎসাধীন আট শকুনের জন্য গড়ে প্রতিদিন বয়লার মুরগি দেওয়া হয়। এ ছাড়া স্যালাইন, পানি ওষুধ দেওয়া হয় বলে জানায় শকুনের দেখভালের তদারককারী বেলাল হোসেন। প্রতিটি শকুনকে খাদ্য হিসেবে দুই দিন পর পর দেওয়া হয় আধা কেজি বয়লার মুরগি। বীরগঞ্জ সিংড়া জাতীয় উদ্যানের বনবিট কর্মকর্তা গয়া প্রসাদ আরও জানান, হিমালয়ে শীতের প্রকোপ বাড়লে দল বেঁধে শকুনগুলো আসে। বড় বড় গাছে আশ্রয় নেয়। বিলুপ্ত প্রায় এই শকুন বিশেষ করে শীতের সময় অন্য এলাকা থেকে দিনাজপুরসহ এ অঞ্চলে অসুস্থ বা খাদ্যাভাবে ক্লান্ত অবস্থায় আসে। ঠিকমতো উড়তে না পারায় সেসব শকুনকে উদ্ধার করা হয়। উল্লেখ্য, উত্তরাঞ্চলের বিভিন্ন এলাকায় আহত অবস্থায় শকুন উদ্ধার করে বীরগঞ্জ সিংড়া জাতীয় উদ্যানের কর্মকর্তাদের কাছে হস্তান্তর করা হয়। হিমালয়ের পাদদেশে দিনাজপুর, ঠাকুরগাঁও এবং পঞ্চগড় জেলার অবস্থানের কারণে এ এলাকায় এখনো কিছু শকুন দেখা যায়। অনেক সময় এগুলো অতিথি হয়ে আসে। মানুষ যদি সচেতন হয় এবং শকুন উদ্ধার করে অথবা বনবিভাগকে সংবাদ দেয়, তাহলে উদ্ধার করে পুনর্বাসন কেন্দ্রে পরিচর্যার মাধ্যমে তাদের বিলুপ্তি থেকে রক্ষা করা সম্ভব।

 

সর্বশেষ খবর