মঙ্গলবার, ৫ মার্চ, ২০২৪ ০০:০০ টা

বেগুনিকোমর মৌটুসি পলাশের ডালে

দীপংকর ভট্টাচার্য লিটন, শ্রীমঙ্গল

বেগুনিকোমর মৌটুসি পলাশের ডালে

মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে পলাশের ডালে ডালে পাখির বিচরণ বেড়েছে। এ ডাল থেকে ও ডালে নেচে গেয়ে মধু আহরণ করে পাখিরা। তেমনই একটি অনন্য সুন্দর পাখি বেগুনিকোমর মৌটুসি। এদের ইংরেজি নাম purple-rumped sunbird. বৈজ্ঞানিক নাম Leptocma zeylonica. তবে এরা সানবার্ড নামেই বেশি পরিচিত। অঞ্চল ভেদে মৌটুসি নামেও ডাকা হয়। এরা আমাদের দেশের আবাসিক পাখি। ভারতীয় উপমহাদেশের স্থানীয়ভাবে এরা সূর্য পাখি। সম্প্রতি মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল হাইল হাওর থেকে বেগুনিকোমর মৌটুসির ছবি তুলেছেন শৌখিন ফটোগ্রাফার তারেক হাসান।

পাখি বিষারদরা জানান, অন্যান্য সানবার্ডের মতো বেগুনিকোমর মৌটুসিও আকারে ছোট। এদের দৈর্ঘ্যে ১০ সেন্টিমিটার পর্যন্ত হয়। ডানা ৫.২ ও লেজ ৩.৩ সেন্টিমিটার। ওজন ৯ গ্রামের মতো। তবে আকারে ছোট হলেও ঠোঁট লম্বা। সরু ঠোঁটের অগ্রভাগ নিচের দিকে সামান্য ঝুঁকে থাকে। তাই এরা ফুল থেকে খুব সহজেই মধু আহরণ করতে পারে। এরা দেখতে খুব সুন্দর। যেন প্রকৃতির রং তুলিতে নিখুঁত আঁকা ছবি। এরা সুন্দর গান গাইতে মধু আহরণ করে। এদের চোখ গোলাকার। মাঝখান বাদামি। চোখের বৃত্তাকারে ঘিরে আছে লাল রঙে। পুরুষরা উজ্জ্বল রঙের হয়। স্ত্রী পাখিরা ওপরে জলপাই এবং নিচে হলুদ রঙের। রঙের ভিন্নতায় পুরুষ স্ত্রী সহজেই আলাদা করা যায়। এই পারি কোমর ও গলা বেগুনি। ডানা ও লেজের ওপরের আচ্ছাদন কালচে বাদামি। মাথার চাঁদি ও কাঁধের পট্টি ধাতব সবুজ। মাথার পাশে আবার মেরুন রং। তাদের বুক ও পেটে কাঁচা হলুদ রঙা। পাখির দেহের পেছনের অংশ, কাঁধ-ঢাকনি গাঢ় তামাটে ও মেরুন। এভাবে নানা রঙে রঙিন বেগুনি কোমরম ৗটুসি। এরা সারা বছর বংশবৃদ্ধি করে, তবে বর্ষাকালই উপযুক্ত সময়। প্রজননের সময় স্ত্রী পাখি একাই বাসা তৈরি করে। তখন পুরুষ পাখি পাশাপাশি উড়ে বেড়ায়। স্ত্রী পুরুষ উভয়েই ডিমে তা দেয়। ১৪ থেকে ১৬ দিনের মধ্যে ডিম ফুটে। রাজধানী ঢাকা শহর ছাড়াও চট্টগ্রাম, খুলনা ও সিলেট বিভাগের বিভিন্ন গ্রামে এই পাখিটি দেখা যায়।

সর্বশেষ খবর