রবিবার, ১০ মার্চ, ২০২৪ ০০:০০ টা

হত্যা না আত্মহত্যা আদালতে মামলা

ফেনী প্রতিনিধি

ফাতেমা আক্তার আঁখি নামে এক কলেজছাত্রীর লাশ ৩ মার্চ রবিবার শহরের সালাহউদ্দিন মোড়ে প্রেমিকের বড় বোনের বাসা থেকে উদ্ধার করেছে পুলিশ। নিহত ফাতেমা শর্শদী ইউনিয়নের সফিয়াবাদ গ্রামের জাহাঙ্গীর আলমের মেয়ে। তিনি ফেনী সরকারি কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করে অনার্সে ভর্তির প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন।

ফাতেমার ছোট ভাই জোবায়ের হোসেন টুটুল ও বড় বোন শিল্পী আখতারের দাবি- তাদের বোন আত্মহত্যা করার মানুষ নয়। সে কিছুতেই আত্মহত্যা করতে পারে না। তার বোনকে হত্যা করা হয়েছে। তাদের দাবি- ফাতেমার প্রেমিক সালাউদ্দিনের বোন নাদিয়া বেগম তাকে ফোন করে তাদের বাসায় নেয়। যখন নাদিয়ার বাসা থেকে আঁখির মৃতদেহ পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিস উদ্ধার করে তখন দেখা যায় সিলিং ফ্যানের একটি ডানায় ফাঁসিতে ঝুলছেন আঁখি। তার পা ছিল সম্পূর্ণরূপে ঘরের ফ্লোরে। তাদের দাবি- ফ্লোরে পা থাকা অবস্থায় কিছুতেই ফাঁসি হয় না। তারা জানান, ঘটনার পর তারা লিখিত অভিযোগ নিয়ে ফেনী মডেল থানায় গেলে পুলিশ তা গ্রহণ করেনি। পুলিশ তাদের মামলার এজহারে আত্মহত্যা লেখার জন্য চাপ প্রয়োগ করেন। থানায় মামলা দায়ের করতে ব্যর্থ হয়ে তারা পরবর্তীতে আদালতে মামলা দায়ের করেন। নিহত আঁখির বড় বোন শিল্পী আক্তার বাদী হয়ে মঙ্গলবার (৫ মার্চ) আদালতে মামলা করেন। বাদীপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট এমদাদ হোসেইন জানান, আদালতে মামলাটি দায়েরের পর অধিকতর তদন্তের জন্য সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট সৈয়দ সাফায়েত সিআইডিকে দায়িত্ব প্রদান করেন। মামলায় সদর উপজেলার শর্শদী ইউনিয়নের চোছনা এলাকার মো. মিয়াধনের ছেলে আঁখির প্রেমিক সালাহউদ্দিন আহমেদ, তার বড় ভাই আদনান বাপ্পী, বোন নাদিয়া বেগম ও ভগ্নিপতি বেলাল হোসেনকে আসামি করা হয়। আদালত বিষয়টি আমলে নিয়ে সিআইডিকে তদন্তভার প্রদান করেন। নিহতের পরিবারের সদস্যদের দাবি, বিভিন্ন সময় আঁখির পক্ষ থেকে বিয়ের কথা বলা হলেও সময়ক্ষেপণ করতে থাকে সালাউদ্দিন। পরবর্তীতে বিষয়টি নিয়ে তাদের দুজনের মধ্যে মনোমালিন্যের সৃষ্টি হয়। একপর্যায়ে আঁখিকে বিয়ে করতে অস্বীকৃতি জানায় সালাউদ্দিন। তাছাড়া শুরু থেকেই সালাউদ্দিনের ভাই বাপ্পি ও বোন নাদিয়া আঁখির বিষয়ে হস্তক্ষেপ করে আসছিলেন। কারণ তারা এ সম্পর্ক কখনো মেনে নিতে পারেনি। এ জন্য কৌশলে আঁখিকে ওই বাসায় ডেকে নিয়ে হত্যা করা হয়। ঘটনার পর পুলিশ নিহতের লাশ উদ্ধার করে ফেনী জেনারেল হাসপাতালে ময়নাতদন্তের পর পারিবারিক কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়।

ফেনী মডেল থানার ওসি মো. শহিদুল ইসলাম চৌধুরী অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, এ ব্যাপারে নিহতের স্বজনদের কেউ মামলা নিয়ে থানায় আসেননি। ফায়ার সার্ভিসের কর্মীদের সহযোগিতায় একটি কক্ষের দরজা ভেঙে ঘটনার প্রয়োজনীয় আলামত সংগ্রহ ও নিহত আঁখির ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এ সময় তার পরিবারের লোকজনও সেখানে উপস্থিত ছিলেন। এরপর ময়নাতদন্তের জন্য লাশ ফেনী জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়।

সর্বশেষ খবর