মঙ্গলবার, ১২ মার্চ, ২০২৪ ০০:০০ টা
এমপিপুত্রের হাতে ছাত্রলীগ কর্মী প্রহৃত

মহাসড়ক অবরোধ, ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষ

ময়মনসিংহ প্রতিনিধি

এমপিপুত্রের হাতে ছাত্রলীগকর্মী ফয়সাল প্রহৃত হওয়ার জের ধরে ময়মনসিংহের ত্রিশালে তুলকালাম অবস্থা তৈরি হয়েছে। ঘটনার জের ধরে মহাসড়ক অবরোধ, দুই পক্ষের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া এবং সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। জানা গেছে, ত্রিশাল পৌরসভা নির্বাচনে মেয়র পদে প্রার্থী হয়ে অর্ধেকের বেশি ভোটে হেরে যান স্থানীয় এমপি এ বি এম আনিছুজ্জামানের সহধর্মিণী শামীমা আক্তার। এ নিয়ে ফেসবুকে একটি পোস্ট দেন ছাত্রলীগকর্মী ফয়সাল আহমেদ। এই পোস্টের জের ধরেই ফয়সালকে তুলে নিয়ে যাওয়া হয় এমপির বাসায়। পরে তাকে বেধড়ক পেটান এমপিপুত্র ও তার অনুসারীরা। উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মোমিনুল হাসান সোহান জানান, রবিবার বেলা ১১টায় ছাত্রলীগ নেতাকে রাস্তা থেকে ধরে নিয়ে বাসায় এই নির্মম নির্যাতন করা হয়।

এদিকে এ ঘটনার প্রতিবাদে রবিবার রাতে লাঠিসোঁটা নিয়ে উপজেলা ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীরা বের হলে এমপিপন্থিরা তাদের ওপর চড়াও হন। তারা লাঠিসোঁটা ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীদের ধাওয়া করেন। একপর্যায়ে দুই পক্ষের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষ শুরু হয়। এ সময় উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ইমরান হোসেনসহ আহত হন কমপক্ষে ১০ জন। তাদের মধ্যে উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ইমরান হোসেন ও আওয়ামী লীগ নেতা আবদুুস সাত্তারকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। জানা গেছে, এ ঘটনার পর সাবেক এমপি মাদানী গ্রুপের লোকজন ও উপজেলা ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীরা ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক অবরোধ করে রাস্তায় টায়ারে আগুন জ্বালিয়ে প্রতিবাদ জানাতে থাকেন।

পরে গতকাল দুপুরে ময়মননসিংহ প্রেস ক্লাব মিলনায়তনে ত্রিশাল উপজেলা ছাত্রলীগ এক সংবাদ সম্মেলন করে। সংবাদ সম্মেলনে সাধারণ সম্পাদক মোমিনুল হাসান সোহান অভিযোগ করে বলেন, ৯ মার্চ মেয়র পদে ত্রিশাল পৌরসভার উপনির্বাচনে এমপিপত্নী শামীমা আক্তার হেরে যাওয়ায় ছাত্রলীগকর্মী ফয়সালের ফেসবুকে একটি পোস্টকে কেন্দ্র করে প্রতিহিংসা থেকে এই নির্মম নির্যাতন চালায় এমপিপুত্র ও অনুসারীরা। এ সময় এমপি নিজেও সম্পৃক্ত হন। পরে গুরুতর আহত ছাত্রলীগ নেতা ফয়সালকে ত্রিশাল স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়।

লিখিত বক্তব্যে তিনি আরও জানান, পরে কৌশলে আহত ছাত্রলীগকর্মী ফয়সালকে পুলিশে সোপর্দ করে। এ ঘটনার তীব্র নিন্দা জানান এবং দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন উপজেলা ছাত্রলীগ সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক সভাপতি হাসান মাহমুদসহ ছাত্রলীগ ও ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্যরা।

সংবাদ সম্মেলনে উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ইমরান হোসেনের বাবা সাবেক ওয়ার্ড কাউন্সিলর দুলাল মণ্ডল জানান, এমপি ও এমপিপত্নীর নির্বাচন না করায় তার ছেলেকে নির্মমভাবে পিটিয়ে রক্তাক্ত জখম করেছে এমপি অনুসারীরা। তিনি তার ছেলের ওপর হামলার বিচার দাবি করেন।

সংবাদ সম্মেলনে উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি আশরাফুল ইসলাম ম ল, উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি হাসান মাহমুদসহ ছাত্রলীগ ও ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।

ত্রিশাল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা কামাল হোসেন জানান, ফয়সালের শরীরে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। তাকে মারধর করে থানায় দিয়ে যাওয়া হয়।

ঘটনার ব্যাপারে এমপি আনিসুজ্জামান আনিস বলেন, ফয়সাল ছাত্রলীগ করে না। তাকে মারধরও করা হয়নি। সে ফেসবুকে অনেক উল্টা-পাল্টা লিখেছে। ত্রিশালে ইয়াবা ব্যবসা বন্ধ করবে বলেও ছাত্রলীগের এই গ্রুপটি উঠেপড়ে লেগেছে। খুব শিগগিরই তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর