বুধবার, ১৩ মার্চ, ২০২৪ ০০:০০ টা

চাহিদা বাড়ায় দাম বাড়ে

হেলাল উদ্দিন

নিজস্ব প্রতিবেদক

চাহিদা বাড়ায় দাম বাড়ে

বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতির সভাপতি হেলাল উদ্দিন বলেছেন, রমজান এলে চাহিদা বাড়ে। যে মানুষটি তিন মাসে জিলাপি খায় না, সে প্রথম রোজায় ইফতারিতে জিলাপি চায়, খেজুর চায়, শসা চায়, ধনেপাতা চায়, বেগুনি চায়, পিঁয়াজু চায়। চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় দামও বেড়ে যায়। এটা স্বাভাবিক। এই দামটাই এক সপ্তাহের মধ্যে কমে যাবে। রমজান এলে নিত্যপণ্যের দাম বেড়ে যাওয়ার কারণ প্রসঙ্গে গতকাল তিনি বাংলাদেশ প্রতিদিনকে এ কথা বলেন।

হেলাল উদ্দিন বলেন, সাহরি-ইফতারে যেসব পণ্যের চাহিদা বাড়ে সেগুলো বিক্রি করে মূলত দরিদ্র শ্রেণির মানুষ। তারা চিন্তা করে যেহেতু মানুষ বেশি বেশি কিনছে, একটু বেশি দামে বিক্রি করতে পারলে ১০টা টাকা বেশি লাভ হবে। পরিবারকে একটু ভালো খাওয়াতে পারবে। ঈদে কাপড়-চোপড় দিতে পারবে। এ জন্য ভালো জিনিসগুলোও রমজানে বিক্রির জন্য জমা রাখে। খেয়াল করলে দেখবেন, প্রথম রোজায় যে বেগুন বাজারে উঠেছে, এটা সবচেয়ে ভালো মানের। পাইকারির তুলনায় খুচরা দামে ব্যবধানটা একটু বেশি হয়। কারণ, পাইকারি ব্যবসায়ীরা টন টন পণ্য বিক্রি করে। তাদের লাভ কম রাখলেও চলে। খুচরা বিক্রেতারা এক-দেড় শ কেজির বেশি বিক্রি করতে পারে না। তাই তারা লাভ বেশি রাখে। দিনশেষে হাজার-বারো শ টাকা আয় না হলে তাদের সংসার চলে না। এই ব্যবসায়ী নেতা বলেন, ভারতে আমাদের চেয়ে কম দামে পণ্য পাওয়া যায়। কারণ তারা সারা বছর দ্রব্যমূল্য নিয়ে চিন্তা করে, কখন তারা ট্যাক্স কমাবে, কখন রপ্তানি বন্ধ করবে, কখন আমদানি করবে তা বাজার গবেষণা করে নির্ধারণ করে। এই জায়গায় আমরা অনেক পিছিয়ে আছি। কখন আমাদের আমদানি করতে হবে তা আমাদের দায়িত্বপ্রাপ্ত মানুষগুলো বোঝেই না। ব্যবসায়ীরা অনুমানের ওপর ভিত্তি করে আমদানি করে। এতে কখনো পণ্যের সংকট হয়, অনেক সময় উদ্বৃত্ত হয়। যেমন ২০৫ টাকার ভোজ্য তেল এখন ১৫৫ টাকায় পাওয়া যাচ্ছে। এতে ব্যবসায়ীদের লস হচ্ছে না? কিন্তু এটাই বাজার ব্যবস্থাপনা। যখন দাম কম থাকে তখন কম দামে খাব, দাম বাড়লে বেশি দামে খাব। রমজানে এক দিনের ব্যবধানেই দাম বেড়ে যায় কেন- এমন প্রশ্নের জবাবে বলেন, হঠাৎ চাহিদা বাড়ায় দাম বাড়ে। এক দিনের ব্যবধানে বেড়েছে, আবার তিন দিনের ব্যবধানে দাম কমেও যাবে। দাম বাড়লে যার টাকা আছে সে কেনে, যার নেই সে অপেক্ষা করে দুই দিন পরে কেনার জন্য। আমি দায়িত্ব নিয়ে বলছি এই বেগুন আর সাত দিন পরে ৩০-৪০ টাকায় কেজি বিক্রি হবে। অন্যান্য সবজি নাগালের মধ্যেই আছে। রোজার শুরুতে বেগুনের চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় দামটা বেড়ে যায়। এতে নিম্নআয়ের মানুষদের কষ্ট হচ্ছে। এ জন্য তো সরকার আবার এক কোটি পরিবারকে ভর্তুকি মূল্যে খাবার দিচ্ছে। অনেক বড় ব্যবসায়ী পণ্যমূল্য কমিয়ে ট্রাকসেল করছে। মধ্যবিত্ত শ্রেণি হয়তো বেশি বিপদে আছে। তারা হাতও পাততে পারে না, আবার বেশি দাম দিয়ে কিনতেও পারে না। তবে সারা পৃথিবীতেই একটা শ্রেণিকে কষ্ট করতে হয়।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর