শুক্রবার, ১৫ মার্চ, ২০২৪ ০০:০০ টা

পিঠে স্যাটেলাইট বসিয়ে দুই কুমির নদীতে অবমুক্ত

নিজস্ব প্রতিবেদক, খুলনা

সুন্দরবনে কুমিরের গতিবিধি জানতে প্রথমবারের মতো দুটি কুমিরের শরীরে স্যাটেলাইট ট্রান্সমিটার বসিয়ে অবমুক্ত করা হয়েছে। এর মাধ্যমে ওই কুমিরের গতিবিধি জানতে পারবে গবেষক দল ও বন বিভাগ। জানা যায়, লোনা পানির প্রায় বিপন্ন প্রজাতির এই কুমিরকে প্রাকৃতিক পরিবেশে শুধু সুন্দরবনেই দেখা যায়। এর আগে কুমিরের প্রজনন বৃদ্ধির জন্য ২০০০ সালে সুন্দরবনের করমজলে কুমির প্রজনন কেন্দ্র স্থাপন করে বন বিভাগ। তবে এবার বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে কুমিরের গতিবিধি, জীবনবৃত্তান্ত, মৃত্যুর হার জানতে গবেষণামূলক পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।

কুমির বিশেষজ্ঞ ডা. রুচিরা সোমাবীরা (প্র্যাকটিস লিড ফর ইকোলজি, মারডক ইউনিভার্সিটি) ও পল বেরি (প্রিন্সিপাল রেঞ্জার কুইন্সল্যান্ড পার্কস অ্যান্ড ওয়াইল্ডলাইফ সার্ভিসেস অস্ট্রেলিয়া) এ কার্যক্রম পরিচালনায় সহায়তা করছেন। তারাই বন বিভাগের কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণ দেবেন। বুধবার রাতে সুন্দরবনের ভদ্রা নদীতে স্যাটেলাইট ট্রান্সমিটার বসানো দুটি কুমির অবমুক্ত করা হয়।

এর মধ্যে পুরুষ কুমির জুলিয়েট সুন্দরবনের করমজলে কুমির প্রজনন কেন্দ্রের পুকুরে ছিল। আর স্ত্রী কুমির মধুকে যশোর কেশবপুর উপজেলার সাগরদাঁড়ি মাইকেল মধুসূদন দত্তের বাড়ির এলাকা থেকে উদ্ধার করা হয়। ১৯ মার্চের মধ্যে আরও তিনটি কুমিরের শরীরে স্যাটেলাইট বসিয়ে অবমুক্ত করা হবে। বন বিভাগ ও আইইউসিএনের (আন্তর্জাতিক প্রকৃতি ও প্রাকৃতিক সম্পদ সংরক্ষণ সংঘ) সহযোগিতায় এই কার্যক্রম হাতে নিয়েছে বন বিভাগ। সুন্দরবন পশ্চিম বন বিভাগের বিভাগীয় কর্মকর্তা আবু নাসের মোহসিন হোসেন জানান, সুন্দরবনের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো কুমিরের শরীরে স্যাটেলাইট ট্রান্সমিটার সংযুক্ত করা হয়েছে। প্রায় এক বছর ধরে মনিটরিংয়ে পর কুমির কোন স্থানে থাকে, কবে প্রজননকাল, কোথায় ডিম পাড়ে বিস্তারিত জানা যাবে। এতে কুমিরের প্রতি ঘণ্টার অবস্থান সম্পর্কে তথ্য দিতে পারবে। ট্রান্সমিটারটি সরাসরি উপগ্রহের মাধ্যমে দায়িত্বরত কর্মকর্তাদের কাছে সংকেত পাঠাবে। এই তথ্যের ভিত্তিতে কুমিরের অভয়ারণ্য ঘোষণা করা যেতে পারে। গবেষক দল এক বছর ধরে গবেষণার ফলাফল বন বিভাগের কাছে হস্তান্তর করবে। নদীতে কুমির অবমুক্তর করার সময় সুন্দরবন পূর্ব বন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) মুহাম্মদ নুরুল করিম, সুন্দরবন পশ্চিম বন বিভাগের ডিএফও আবু নাসের মোহসিন হোসেন, আইইউসিএনের প্রতিনিধি মো. সরোয়ার আলম, বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের ডিএফও নির্মল কুমার পাল উপস্থিত ছিলেন।

সর্বশেষ খবর