মঙ্গলবার, ১৯ মার্চ, ২০২৪ ০০:০০ টা

ফরিদপুর মুন্সীগঞ্জে আওয়ামী লীগের সংঘর্ষ, আহত ২৪

প্রতিদিন ডেস্ক

ফরিদপুর ও মুন্সীগঞ্জে আওয়ামী লীগের দুই গ্রুপের সংঘর্ষে ২৪ জন আহত হয়েছেন। আটক করা হয়েছে ১১ জনকে। ফরিদপুর প্রতিনিধি জানান, জেলার সালথায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগের দুই গ্রুপের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়েছে। এতে দুই পক্ষের অন্তত ২০ জন আহত হয়েছেন। এ সময় বেশ কয়েকটি বাড়ি-ঘর ভাঙচুর করা হয়। রবিবার সন্ধ্যা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত উপজেলার রামকান্তপুর ইউনিয়নের মদনদিয়া গ্রামে এ সংঘর্ষ চলে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে ফাঁকা গুলি ছুড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এ ঘটনায় উভয় পক্ষের ১১ জনকে আটক করেছে পুলিশ। উদ্ধার করা হয় বেশ কিছু দেশি অস্ত্র। জানা গেছে, রামকান্তপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা কৃষকলীগের সাবেক যুগ্ম সম্পাদক মো. ইশারত হোসেনের সঙ্গে সালথা উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাবেক সভাপতি ইমারত হোসেনের বিরোধ চলছিল। ইশারত ও পিকুল আপন মামাতো-ফুফাতো ভাই। তারা দুজন গত ইউপি নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। নির্বাচনে ইশারত হোসেন চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। সম্প্রতি রামকান্তপুর ইউনিয়নের মদনদিয়া গ্রামের ওমর ও বাসার মাস্টার কিছুদিন আগে পিকুল মোল্লার দল ত্যাগ করে ইশারত চেয়ারম্যানের দলে যোগদান করায় গত শুক্রবার ওমর বাড়ি ফেরার পথে পিকুলের সমর্থক ফজলু মাতব্বরের সঙ্গে ইশারতের সমর্থক ওমরের কথা কাটাকাটি হলে তাকে মারধর করে পিকুল মোল্লা ও তার লোকজন। ঘটনাটি নিয়ে কয়েকদিন ধরে ওই এলাকায় উত্তেজনা চলছিল। এরই জের ধরে রবিবার ইশারত চেয়ারম্যানের বাবা হাজী আবুল কালাম, চাচা আজিজাল, চাচাতো ভাই রাকিবুল ইসলাম কুব্বাত সন্ধ্যায় নামাজ পড়তে যাওয়ার সময় মিরাজ মোল্লার দোকানের সামনে পিকুল মোল্লার সঙ্গে কথা কাটাকাটি হয়। এ সময় পিকুলের নেতৃত্বে ইশারত চেয়ারম্যানের বাবা ও চাচার ওপর হামলা করা হয়। বিষয়টি ইশারত চেয়ারম্যানের সমর্থকদের মধ্যে জানাজানি হলে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। পরে দুই পক্ষের সমর্থকেরা দেশি অস্ত্র, লাঠিসোঁটা নিয়ে একে অপরের ওপর হামলা চালালে সংঘর্ষ শুরু হয়। সহকারী পুলিশ সুপার (নগরকান্দা সার্কেল) মো. আসাদুজ্জামান শাকিল বলেন, খবর পেয়ে ওসিসহ সঙ্গীয় পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে শটগানের ১১ রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছুড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। মুন্সীগঞ্জ প্রতিনিধি জানান, মুন্সীগঞ্জে আওয়ামী লীগের দুই পক্ষের সংঘর্ষে চারজন আহত হয়েছে। রবিবার বিকাল সাড়ে পাঁচটায় সদর উপজেলার পঞ্চসার ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের চর সন্তোষপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। এ সময় আহত হন, নাজির ইসলাম (৫৫), নাজির ইসলামের স্ত্রী খোরশেদা বেগম (৫০), ছেলে মোহাম্মদ রাজু (৩২), মেয়ে সাথী আক্তার (২৫) তাদের মুন্সীগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। স্থানীয়রা জানায়, চরসন্তোষপুর গ্রামের নাজির ইসলাম নিজেকে শ্রমিক লীগের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের সভাপতি ঘোষণা করে ব্যানার টানিয়ে ইফতার ও দোয়া মাহফিলের আয়োজন করলে স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও শ্রমিক লীগের নেতা-কর্মীরা বাধা দেন। এ সময় স্থানীয় নেতা-কর্মীরা নাজির ইসলামকে চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ী উল্লেখ করে ইফতার মাহফিল বন্ধ করতে বলেন। নাজির ইসলাম অনুষ্ঠান চালিয়ে গেলে এক পর্যায়ে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয়। মুন্সীগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক রুহুল আমিন জানান, সন্ধ্যায় আহত চারজনকে হাসপাতালে আনা হয়। এদের মধ্যে একজনের মাথায় গুরুতর আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়। তাকে সিটি স্ক্যানের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। অন্য তিনজনকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। সংঘর্ষের ঘটনা সম্পর্কে মুন্সীগঞ্জ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আমিনুল ইসলাম জানান, সংঘর্ষের ঘটনা শুনেছি। এখন পর্যন্ত কেউ লিখিত অভিযোগ করেনি। ঘটনাস্থলে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। লিখিত অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

সর্বশেষ খবর