বুধবার, ২০ মার্চ, ২০২৪ ০০:০০ টা

বর্জ্য পোড়ানো নীতি অন্যতম কারণ

ইকবাল হাবিব

নিজস্ব প্রতিবেদক

বর্জ্য পোড়ানো নীতি অন্যতম কারণ

নগর ও পরিবেশবিদ স্থপতি ইকবাল হাবিব বলেছেন, আমাদের রিসাইক্লিং ইন্ডাস্ট্রিগুলো এবং একই সঙ্গে বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় দায়িত্বপ্রাপ্ত সংস্থাগুলো নিয়মিতভাবে পোড়ানীতিতে বিশ্বাস করে। অর্থাৎ তারা বর্জ্য পুড়িয়ে ফেলার চেষ্টা করে। এটিও বায়ুদূষণের অন্যতম প্রধান কারণ। এই পোড়ানীতিতে ঢাকার রায়ের বাজার থেকে সূত্রাপুর পর্যন্ত পুরো বেল্টে অসংখ্য রিসাইক্লিং ইন্ডাস্ট্রি রয়েছে। তারা সবাই এই কার্যক্রম নির্দ্বিধায় করে চলেছে। কামরাঙ্গীরচর এবং কেরানীগঞ্জে এসব কার্যক্রম দেদার চলছে। এর বাইরে শিল্পদূষণ রয়েছে। শিল্পের মালিকরা একটুখানি তাদের পাইপ উঁচু করে সব দূষণ আমাদের ঘাড়ে পাঠিয়ে দিচ্ছে। এটিও আরেকটি দূষণের জায়গা। এগুলো যতক্ষণ না পর্যন্ত ঠিক হচ্ছে ততক্ষণ পর্যন্ত বায়ুদূষণ থেকে নিস্তারের কোনো সুযোগ নেই।

এই স্থপতি বলেন, পরিবেশ অধিদফতর ইট বানানোর কার্যক্রম বন্ধ করতে পারবে না যতক্ষণ না সরকার এর বিকল্পের ব্যাপারে উদ্যোগী হয়ে একটি বাস্তবোচিত পদক্ষেপ গ্রহণ করে। এখন যত স্থাপনা নির্মাণ করা হচ্ছে তার সিংহভাগই সরকার বা সরকারি অর্থায়নে হচ্ছে। কিন্তু এসব কাজে এখনো ইটকে মূল নির্মাণ উপাদান হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে। এর বিকল্প হিসেবে যা ব্যবহার করা হচ্ছে তা অনেক কষ্টে টেন্ডার ডকুমেন্টে পিডব্লিউডি’র রেট শিডিউলে ঢোকানো হচ্ছে। কিন্তু এখন পর্যন্ত ইটের বিকল্প হিসেবে যা ব্যবহৃত হচ্ছে তা ব্যবহার করতে বাধ্য করার যে সরকারি সিদ্ধান্ত সে কাজের অগ্রগতি নেই। ইটের বিকল্প যারা তৈরি করছে তাদের প্রণোদনা দিতে হবে। ইটের বিকল্প হিসেবে যা ব্যবহার হবে তা ইটের চেয়ে সাশ্রয়ী দামে ব্যবহার করার সক্ষমতা অর্জন করতে হবে। এখন পর্যন্ত এই উদ্যোগ গণপূর্ত মন্ত্রণালয়, সড়ক ও জনপথ এবং যে প্রতিষ্ঠানগুলো সরকারি স্থাপনা নির্মাণে জড়িত তারা কেউই নিচ্ছে না। ফলে ইট তৈরির কার্যক্রম বন্ধ করা কঠিন। আর এটি কার্যকর না করে ইটের ভাটা বন্ধ করে নির্মাণ কার্যক্রম বন্ধ করা যাবে না। তিনি আরও বলেন, নির্মাণ কাজে অন্যান্য সব ম্যাটেরিয়াল এবং পদ্ধতিগতভাবে নির্মাণ কার্যক্রম অর্থাৎ ম্যাটেরিয়ালের উৎপাদন, পরিবহন, প্রক্রিয়াকরণ এবং এর বাস্তবায়নসহ কার্যক্রমের প্রতিটি স্তরে পরিবেশ দূষণ বন্ধ করতে হবে। অর্থাৎ ধূলিদূষণ, বালুর পরিবহন সঠিক ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে করতে হবে। আমাদের এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েসহ বিরাট কার্যক্রম হচ্ছে। কিন্তু তারা নির্মাণস্থল ঢেকে কার্যক্রম করছে না। দূষণরোধে এই বিষয়টিও আমাদের নিশ্চিত করতে হবে। ইকবাল হাবিব বলেন, সিটি করপোরেশন শহরের ৫৫ শতাংশ বর্জ্য সংগ্রহ করতে পারে। অবশিষ্ট ৪৫ শতাংশ বর্জ্য সংগ্রহ করার সক্ষমতা তারা রাখে না। তাহলে এই বর্জ্য কোথায় যাচ্ছে। এই বর্জ্যগুলো উদোম অবস্থায় থাকে। ভোর বেলায় যখন সড়কগুলো ঝাড়ু দেওয়া হয় তখন শিশুরা স্কুলে যায় এবং মানুষজন অফিসে যেতে শুরু করলে সে সময় তারা দূষণের শিকার হয়।

সর্বশেষ খবর