বিমার টাকা মেরে ৫ কোটি ৫৬ লাখ টাকার অবৈধ সম্পদ গড়েছেন এক দম্পতি। প্রথম ন্যাশনাল লাইফ ইনস্যুরেন্স এবং পরে সানলাইফ ইনস্যুরেন্স কোম্পানি লিমিটেডের কর্মী হিসেবে ওইসব টাকা আত্মসাৎ করেন বলে অভিযোগ।
টানা ১৯ বছরের প্রতারণা ও জালিয়াতি শেষে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) মামলার আসামি হয়েছেন শহীদুল ইসলাম চৌধুরী ও তার স্ত্রী নাজনীন চৌধুরী। গতকাল দুদকের গাজীপুর সমন্বিত জেলা কার্যালয়ে সংস্থাটির সহকারী পরিচালক সেলিম মিয়া তাদের বিরুদ্ধে পৃথক মামলা করেন।
দুদক সূত্র জানায়, শহীদুল ইসলাম চৌধুরী ও নাজনীন চৌধুরীর সম্পদের তথ্য চেয়ে দুদক থেকে সম্পদ বিবরণী দাখিলের আদেশ জারি করা হয়। এরপর তারা গত বছরের ৫ মার্চ সম্পদ বিবরণী দাখিল করেন। দাখিল করা সম্পদ বিবরণী যাচাই করে শহীদুল ইসলাম চৌধুরীর বিরুদ্ধে মোট ৪০ লাখ ৫১ হাজার ১৬০ টাকার সম্পদের তথ্য গোপন ও ৩৭ লাখ ৩৪ হাজার ২৮৮ টাকার জ্ঞাত আয়ের উৎসের সঙ্গে অসংগতিপূর্ণ সম্পদের তথ্য পান অনুসন্ধানকারী কর্মকর্তা। এ কারণে শহীদুল ইসলামের বিরুদ্ধে প্রথম মামলা করা হয়।এদিকে নাজনীন চৌধুরীর নামে ৭১ দশমিক ৭৫ শতাংশ জমি, ১ হাজার ৫৪০ বর্গফুটের একটি ফ্ল্যাট এবং চারতলা বাড়িসহ ৪ কোটি ৭৬ লাখ ৭ হাজার ১৬৯ টাকার অবৈধ সম্পদের তথ্য পাওয়া যায়। মূলত শহীদুল ইসলাম চৌধুরী তার সম্পদের উৎস আড়াল করার উদ্দেশ্যে স্ত্রীর নামে এই বিপুল সম্পদ গড়েছেন বলে দুদকের প্রাথমিক অনুসন্ধানে বেরিয়ে আসে।
নাজনীন চৌধুরী নিজ নামের সম্পদের তথ্য গোপন করার উদ্দেশ্যে তার বাবার কাছ থেকে বিভিন্ন সময় হেবা দলিল করিয়ে নিলেও দুদকের অনুসন্ধানে তা ভুয়া প্রমাণিত হয়। এতে করে নাজনীন চৌধুরীর বিরুদ্ধে ৩ কোটি ৫৪ লাখ ১৭ হাজার ১৬৯ টাকার সম্পদের তথ্য গোপনসহ ৪ কোটি ৭৬ লাখ ৭ হাজার ১৬৯ টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অপরাধে অন্য মামলা করা হয়।
জানা যায়, ১৯৯৭ সালে গাজীপুরে ন্যাশনাল লাইফ ইনস্যুরেন্সে চাকরিতে যোগ দেন শহীদুল। তিন বছর বাদে ২০০০ সালে চলে যান সানলাইফ ইনস্যুরেন্সে। এখানেই থিতু হন দীর্ঘ সময়। ২০১৭ সালে তিনি যখন ১৯ বছরের চাকরিজীবনের ইতি টানছিলেন, তখন তাকে ঘিরে এলাকার বহু মানুষের ছিল অভিযোগ। বীমার টাকা সংগ্রহ করে অফিসে জমা না দেওয়া, পরিপক্ব বীমার পুরো অর্থ গ্রাহককে না বুঝিয়ে দেওয়াসহ অনেক অভিযোগ নিয়ে গ্রামছাড়া হন তিনি।