শিরোনাম
শুক্রবার, ২২ মার্চ, ২০২৪ ০০:০০ টা

পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর এপিএস ছিলেন ভুয়া বিসিএস

নিজস্ব প্রতিবেদক

রাষ্ট্রবিজ্ঞানের প্রভাষক থেকে প্রেষণে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর এপিএস এবং তৃতীয় সচিব হিসেবে মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশ হাইকমিশনে চাকরি করার ১৮ বছর পর জানা গেল ওই বিসিএস কর্মকর্তার নিয়োগই ভুয়া। ১০ শতাংশ সরাসরি কোটায় বিসিএস সাধারণ শিক্ষা ক্যাডারে যোগ দিয়েছিলেন তিনি। বর্তমানে নিয়োজিত আছেন যুব উন্নয়ন অধিদফতরের ইমপ্যাক্ট তৃতীয় পর্বের প্রকল্প পরিচালক হিসেবে। এস এম আলমগীর কবীর নামের এই সরকারি কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। মামলায় তার বিরুদ্ধে জাল জালিয়াতি ও প্রতারণার অভিযোগ আনা হয়েছে। গতকাল দুদকের ঢাকা সমন্বিত জেলা কার্যালয়ে সংস্থাটির সহকারী পরিচালক সহিদুল ইসলাম তার বিরুদ্ধে মামলাটি করেন। দুদকের বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।

মামলার আর্জিতে বলা হয়, এস এম আলমগীর কবীর বিসিএস সাধারণ শিক্ষা ক্যাডারের প্রভাষক রাষ্ট্রবিজ্ঞান পদ থেকে প্রেষণে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর এপিএস এবং তৎপরবর্তীতে তৃতীয় সচিব হিসেবে মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশ হাইকমিশনে কর্মকালীন সরকারি কর্মচারী হয়ে জাল-জালিয়াতির আশ্রয় নিয়েছেন। তিনি বিসিএস সাধারণ শিক্ষা ক্যাডারের ১০ শতাংশ সরাসরি কোটায় সহযোগী অধ্যাপক (রাষ্ট্রবিজ্ঞান) পদে অবৈধ পন্থায় জাল-জালিয়াতি ও প্রতারণার আশ্রয় নেওয়ায় ১৮৬০ সালের দণ্ডবিধির ৪২০/৪৬৭/৪৬৮/৪৭১ ধারা ও ১৯৪৭ সালের দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫(২) ধারায় তার বিরুদ্ধে মামলাটি হয়েছে।

দুদকের অনুসন্ধানে দেখা যায়, এস এম আলমগীর কবীর ২০০৬ সালে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতরের আওতাধীন বিসিএস সাধারণ শিক্ষা ক্যাডারের ১০ শতাংশ সরাসরি কোটায় সহযোগী অধ্যাপক (রাষ্ট্রবিজ্ঞান) পদে বাংলাদেশ পাবলিক সার্ভিস কমিশন কর্তৃক নিয়োগ পান। নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিতে ওই পদে নিয়োগে চারটি শর্ত ছিল। যার মধ্যে রয়েছে- প্রার্থীদের ডক্টরেট ডিগ্রিসহ সংশ্লিষ্ট বিষয়ে দ্বিতীয় শ্রেণির স্নাতকোত্তর ডিগ্রি বা দ্বিতীয় শ্রেণির সম্মান ডিগ্রিসহ কলেজ যা বিশ্ববিদ্যালয়ে ন্যূনতম ৮ বছরের শিক্ষকতার অভিজ্ঞতা, প্রার্থী যে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান হতে শিক্ষাগত যোগ্যতা অর্জন করেছেন সেই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রধান কর্তৃক চরিত্রগত সনদ, প্রার্থী যেসব সরকারি/বেসরকারি কলেজ/শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষকতা করেছেন সেসব কলেজ/শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান/ডিগ্রি কলেজ/অথবা বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ের হতে হবে এবং তার অর্জিত শিক্ষকতার অভিজ্ঞতা ডিগ্রি পর্যায়ের অভিজ্ঞতার সনদে তা অবশ্যই উল্লেখ থাকতে হবে। এ ছাড়া অভিজ্ঞতার সনদে কলেজটি ডিগ্রি কলেজ/বিশ্ববিদ্যালয় এবং অর্জিত অভিজ্ঞতা ডিগ্রি পর্যায়ের না থাকলে এবং অভিজ্ঞতার সনদ জমা না দিয়ে যোগদানপত্র জমা দিলে প্রার্থিতা বাতিল হবে বলেও শর্ত ছিল। অনুসন্ধানে দেখা যায়, এস এম আলমগীর কবীর কামডেন ইউনিভার্সিটি, মালয়েশিয়া ক্যাম্পাসের পিএইচডি ডিগ্রি সংযুক্ত করে যে সনদ দাখিল করেছেন, তা ভুয়া। মালয়েশিয়ায় ওই নামের কোনো রেজিস্টার্ড শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পাওয়া যায়নি। একই সঙ্গে সহযোগী অধ্যাপক পদে চাকরির আবেদনের জন্য ন্যূনতম আট বছরের শিক্ষকতার অভিজ্ঞতার শর্ত থাকলেও এ ক্ষেত্রে ২ বছর ৩ মাস ১১ দিনের ঘাটতি ছিল তার।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর