রবিবার, ২৪ মার্চ, ২০২৪ ০০:০০ টা

টংক আন্দোলনের শেষ সাক্ষী কুমুদিনী হাজং আর নেই

নেত্রকোনা প্রতিনিধি

টংক আন্দোলনের শেষ সাক্ষী কুমুদিনী হাজং আর নেই

নেত্রকোনার সীমান্তবর্তী পাহাড়ি এলাকা দুর্গাপুর উপজেলার ঐতিহাসিক টংক আন্দোলনের শেষ সাক্ষী কুমুদিনী হাজং আর নেই। গতকাল দুপুরে তিনি সীমান্ত গ্রাম বহেরাতলীতে স্বামীর ভিটায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। দুর্গাপুর কালচারাল একাডেমির পরিচালক সুজন হাজং এ তথ্য নিশ্চিত করেন। আজ কুমুদিনী হাজংয়ের শেষকৃত্য সম্পন্ন হবে বলে জানিয়েছেন তার মেজো ছেলে অর্জুন হাজং। ভারতের মেঘালয় রাজ্যের তলদেশে বিজয়পুর সীমান্তের দুর্গাপুর উপজেলার কুল্লাগড়া ইউনিয়নের বহেরাতলী গ্রাম। যে গ্রাম থেকে খাজনা প্রথা বিলুপ্তিতে আন্দোলনের গণজাগরণ হয়েছিল কয়েকজনের মৃত্যুতে। সেই স্মৃতি ধরে রেখেছিলেন কুমুদিনী হাজং। সেই মৃত্যুর মধ্য দিয়ে খাজনা বিদ্রোহে প্রজা আন্দোলনের ইতিহাস রচিত হয়। এ এলাকায় কুমুদিনী হাজংয়ের কাছে মানুষ শুনতে আসতেন টংক প্রথা বিলুপ্তির কথা। উল্লেখ্য, ১৯৪৬ সালে কমরেড মণিসিংহ ভারত থেকে দুর্গাপুর মামাবাড়িতে চলে আসেন। শুরু করেন টংক প্রথা বা ধান কড়াড়ি খাজনা বাতিল আন্দোলন। আন্দেলনে যোগ দেন সীমন্তের কুল্লাগড়া ইউনিয়নের লঙ্কেশ্বর হাজং, রাশিমণি হাজংসহ ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর কয়েকজন। এরই জেরে ওই বছরের ৩১ জানুয়ারি লঙ্কেশ্বর হাজংসহ বেশ কয়েকজন বিদ্রোহী নেতাকে ধরে নিতে ব্রিটিশ ফন্ট্রিয়ার পুলিশ বহেরাতলী গ্রামে আসে। তাদের না পেয়ে লঙ্কেশ্বর হাজংয়ের সদ্য বিয়ে করা স্ত্রী কুমুদিনী হাজংকে তুলে নিয়ে যায়। কৃষক বিদ্রোহ সভা চলাকালীন রাশিমণি হাজংয়ের কাছে সে খবর পৌঁছে। ছুটে যান তিনি। নারীকে নেওয়া মানে মান নিয়ে যাওয়া উল্লেখ করে তিনি হাতে থাকা দা দিয়েই পুলিশের ওপর হামলা চালান। পরে পুলিশের বন্দুকের গুলিতে তিনিসহ দুজন হাজং নেতা নিহত হন। তবে রক্ষা পান   গৃহবধূ কুমুদিনী হাজং এবং বিলুপ্ত হয় খাজনা প্রথা।

 

সর্বশেষ খবর