সোমবার, ২৫ মার্চ, ২০২৪ ০০:০০ টা

ঈদযাত্রা নির্বিঘ্ন করতে একগুচ্ছ সুপারিশ

হাসান ইমন

ঈদযাত্রা নির্বিঘ্ন করতে একগুচ্ছ সুপারিশ

আসন্ন ঈদযাত্রা নির্বিঘ্ন করার জন্য সড়ক, মহাসড়ক ও সেতুগুলোর মেরামত এবং সংস্কারের কাজ ঈদের সাত দিন আগে শেষ করতে বলা হয়েছে। একই সঙ্গে সেতুগুলোয় ইলেকট্রনিক টোল আদায় সিস্টেম জরুরিভাবে চালু ও সড়কগুলোর প্রয়োজনীয় ডিভাইডার সংস্কার এবং নির্মাণ জরুরিভাবে শেষ করার কথা বলা রয়েছে। এ ছাড়া ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক, ঢাকা-উত্তরবঙ্গ, ঢাকা-সিলেট মহাসড়কসহ যানজট প্রবণ ১৫৫টি স্থানে সার্বক্ষণিক মনিটরিংয়ের আওতায় আনাসহ একগুচ্ছ নির্দেশনা দিয়েছে সড়ক ও জনপথ অধিদফতর, সিটি করপোরেশন, বিআরটিএ, পুলিশ, জেলা প্রশাসক, ইউএনও এবং পরিবহন মালিক-শ্রমিক সংগঠনগুলো। আর এ নির্দেশনাগুলো বাস্তবায়ন করবে সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানগুলোই।

সড়ক পথের ঈদযাত্রা নিয়ে সড়ক ও জনপথ অধিদফতর, সিটি করপোরেশন, পুলিশ, বিআরটিএসহ সংশ্লিষ্ট সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানগুলো সমন্বিতভাবে এক প্রতিবেদন তৈরি করেছে। সেই প্রতিবেদনে সড়কপথে ঈদযাত্রায় স্বস্তি নিয়ে আসতে এসব নির্দেশনা দেওয়া  হয়। নির্দেশনায় বলা হয়েছে, ঢাকা বাইপাস মদনপুর-ভুলতা-ভোগড়া, নবীনগর-চন্দ্রা, ঢাকা-জয়দেবপুর-ময়মনসিংহ, ঢাকা-জয়দেবপুর, ঢাকা ভোগড়া-চন্দ্রা-এলেঙ্গা, এলেঙ্গা-হাটিকুমরুল-বগুড়া-রংপুর, ঢাকা-সিলেট, ঢাকা-চট্টগ্রাম, ঢাকা-গোপালগঞ্জ-খুলনা এবং ভাঙ্গা-বরিশাল-এর সংস্কার কাজ ঈদের সাত দিন আগেই শেষ করতে হবে। এ ছাড়া যানজটের সম্ভাব্য ১৫৫ স্থান চিহ্নিত করা হয়েছে। এই স্থানগুলোয় সার্বক্ষণিক তদারকির নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে ঢাকা-চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের ৪৮টি স্পট। ঢাকা-উত্তরবঙ্গ মহাসড়কের ৫২টি, ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের ছয়টি, ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের ৪১টি ও ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের আটটি স্থান। যানজটপ্রবণ এ স্থানগুলো তদারকি ও পর্যবেক্ষণ করবে সিটি করপোরেশন, বিআরটিএ, জেলাপ্রশাসক, পুলিশ সুপার ও হাইওয়ে পুলিশ। একই সঙ্গে সড়ক ও মহাসড়কে যাত্রীদের যাতায়াত নির্বিঘ্ন করতে সড়ক নিরাপত্তা কমিটি করা হয়েছে। এর মধ্যে উপজেলা সড়ক নিরাপত্তা কমিটি, জেলা সড়ক নিরাপত্তা কমিটি ও মেট্রোপলিটন সড়ক নিরাপত্তা কমিটি। ঈদযাত্রা নিরাপদ রাখতে বিআরটিএ, পুলিশ কমিশনার, সিটি করপোরেশন, জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার, সওজ অধিদফতর, উপজেলা নির্বাহী অফিসার এবং পরিবহন মালিক ও শ্রমিক সংগঠনের প্রতিনিধিদের সমন্বয়ে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করবে। একই সঙ্গে দেশের সব বাস টার্মিনাল ও মহাসড়কে চাঁদাবাজি বন্ধ করা এবং সড়কপথে চুরি, ডাকাতি, ছিনতাই, পকেটমার, মলম পার্টি, অজ্ঞান পার্টির দৌরাত্ম্য রোধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া লক্কড়-ঝক্কড় ফিটনেসবিহীন ও ত্রুটিপূর্ণ গাড়ি চলাচল বন্ধ, ধারণক্ষমতার অতিরিক্ত মালামাল যাত্রী পরিবহন না করা, সড়কের উভয় পাশে অস্থায়ী ও ভাসমান বাজার অপসারণ করা এবং নসিমন, করিমন, ইজিবাইক, ইত্যাদি থ্রি-হুইলার জাতীয় ও আঞ্চলিক মহাসড়কে চলাচল বন্ধ নিশ্চিত করতে বলা হয়েছে। টোল প্লাজা যানজটমুক্ত রাখতে কর্ণফুলী, মেঘনা, গোমতী, পায়রা, খান জাহান আলী (রূপসা), চরসিন্দুর, শহীদ ময়েজউদ্দিন সেতুসহ আত্রাই টোল প্লাজা, নাটোর, লালন শাহ, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মহাসড়ক ইটিসি বুথ চালুর মাধ্যমে সার্বক্ষণিক টোল আদায় অব্যাহত রাখতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া সেতু বিভাগের আওতাধীন পদ্মা সেতু, বঙ্গবন্ধু সেতু ও কর্ণফুলী টানেলে ইটিসি বুথ সার্বক্ষণিক চালু রাখতে নির্দেশনা রয়েছে।

ঈদযাত্রায় বিআরটিসির ঢাকা মহানগরী থেকে বিভিন্ন জেলা শহর ও গুরুত্বপূর্ণ স্থানে স্পেশাল ঈদ সার্ভিস পরিচালনা করা এবং বিষয়টি বিজ্ঞপ্তি দিয়ে জনসাধারণকে অবহিত করা এবং স্পেশাল সার্ভিসের জন্য স্ট্যান্ডবাই বাস প্রস্তুত রাখতে বলা হয়েছে। একই সঙ্গে ঈদের আগের তিন দিন ও পরের তিন দিন মহাসড়কে ট্রাক, কাভার্ড ভ্যান ও লরি চলাচল বন্ধ রাখতেও বলা হয়েছে। আর সিএনজি ও ফিলিং স্টেশন সার্বক্ষণিক খোলা রাখা, পণ্য পরিবহনকারী যানবাহনে যাত্রী বহন না করা ও গার্মেন্টসসহ সব শিল্প, কল-কারখানার কর্মীদের পর্যায়ক্রমে ছুটির ব্যবস্থা করতে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে বিআরটিএর সদর কার্যালয়ে সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগ, বিআরটিএ, বিআরটিসি এবং সড়ক ও জনপথ অধিদফতরের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের সমন্বয়ে সাত দিনের জন্য একটি কেন্দ্রীয় নিয়ন্ত্রণ কক্ষ খুলতে বলা হয়েছে। সার্বিক বিষয়ে গতকাল সচিবালয়ে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, ঈদের আগে ও পরে ট্রাক-ভারী পরিবহন বন্ধ রাখা বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়েছে। যার যেটি কাজ সেটি তারা নিষ্ঠার সঙ্গে পালন করবে। আর যানজট নিয়ন্ত্রণে সংশ্লিষ্টদের বলা হয়েছে। গাজীপুর কিছুটা সমস্যার কারণ ছিল কিন্তু সেটিও এবার সমাধান হয়ে গেল। এবার ঈদযাত্রা পুরোপুরি স্বস্তিদায়ক হবে বলে আশা করছি।

সর্বশেষ খবর