বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ, ২০২৪ ০০:০০ টা
বিভিন্ন জেলায় ইফতারে খুশি রোজাদাররা

আল্লাহ বসুন্ধরাকে ইসলামের খেদমত করার মন দিয়েছেন

নিজস্ব প্রতিবেদক (রংপুর), মানিকগঞ্জ ও কেরানীগঞ্জ প্রতিনিধি

আল্লাহ বসুন্ধরাকে ইসলামের খেদমত করার মন দিয়েছেন

প্রথম রোজা থেকে দেশের বিভিন্ন মসজিদ, মাদরাসা, এতিমখানায় ধর্মপ্রাণ মুসল্লিদের জন্য ইফতারের ব্যবস্থা করছে দেশের শীর্ষস্থানীয় শিল্পপরিবার বসুন্ধরা গ্রুপ। প্রতিদিন বিকালে ইফতার পৌঁছে যাচ্ছে রাজধানী থেকে শুরু করে রংপুরের প্রত্যন্ত এলাকার তিস্তা চরের মসজিদ, মাদরাসা, এতিমখানাতেও। ইফতার পাঠানো হচ্ছে রোজা রেখে মানুষের জানমালের নিরাপত্তা রক্ষার দায়িত্ব পালন করা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের জন্য। দরিদ্র ও ছিন্নমূল মানুষের হাতেও তুলে দেওয়া হচ্ছে বসুন্ধরার ইফতার।

বসুন্ধরা গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সায়েম সোবহান আনভীরের পক্ষ থেকে মাসব্যাপী এ ইফতার আয়োজনে হাসি ফুটেছে এতিমখানার সাত বছরের ছোট্ট শিশুটি থেকে দুর্গম চরের সত্তরোর্ধ্ব অভাবী মানুষটির মুখেও। মাসব্যাপী ইফতারের নিশ্চয়তা পেয়ে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন বিভিন্ন মাদরাসা ও এতিমখানার শিক্ষকরা। গতকাল সন্ধ্যায় কেরানীগঞ্জে বসুন্ধরা রিভারভিউ এলাকার জামিয়া রাব্বানিয়া বসুন্ধরা মাদরাসার নায়েবে মুহতামিম শিক্ষক মাওলানা আবুল বাসার বলেন, রমজান এলে সাহরি ও ইফতার নিয়ে ভাবতে হয়। বসুন্ধরা গ্রুপের কারণে ইফতার আয়োজনে কোনো বেগ পেতে হচ্ছে না। এ জন্য আল্লাহর দরবারে শুকরিয়া। রমজানের শুরু থেকেই বসুন্ধরা গ্রুপ ইফতার দিয়ে যাচ্ছে। সারা মাস দেবে। গত বছরও দিয়েছিল। সবই আল্লাহর ইচ্ছা। আল্লাহ তাদের সম্পদ দিয়েছেন, ইসলামের খেদমত করার মন দিয়েছেন। আমরা সব সময় তাদের জন্য দোয়া করি। মহান আল্লাহ বসুন্ধরা গ্রুপের খেদমত কবুল করুন। জানা গেছে, রমজান মাসজুড়ে কেরানীগঞ্জের থানা পুলিশ, ঢাকা জেলা ডিবি পুলিশ (দক্ষিণ) কার্যালয়, ট্রাফিক পুলিশ কার্যালয়, হাসারা হাইওয়ে থানা এবং বেশ কয়েকটি মাদরাসা ও এতিমখানায় ইফতার সামগ্রী বিতরণ করছে বসুন্ধরা গ্রুপ। গ্রুপটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বাজুস) প্রেসিডেন্ট সায়েম সোবহান আনভীরের উদ্যোগে প্রথম রমজান থেকেই বসুন্ধরা গ্রুপের মাইক্রোবাসে করে বিকাল ৪টা থেকে সাড়ে ৪টার মধ্যে দুই হাজার ইফতারের প্যাকেট পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে। ইফতার সামগ্রীতে রয়েছে খেজুর, ছোলা, মুড়ি, বেগুনি, পিঁয়াজু, জিলাপি, কলা ইত্যাদি ও পানির বোতল। গতকাল জামিয়া রাব্বানিয়া বসুন্ধরা মাদরাসায় গিয়ে দেখা যায়, শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা বসুন্ধরা গ্রুপের ইফতার সামনে নিয়ে দোয়া পড়ছেন। ইফতারের পর মাদরাসাটির ছাত্র আবদুল মাজিদ বলেন, আমাদের মাদরাসায় প্রতিদিন বসুন্ধরা গ্রুপ ইফতার দিচ্ছে। আল্লাহর কাছে দোয়া করি তারা যেন সব সময় অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়াতে পারেন। এদিকে গতকাল বাদ আসর মানিকগঞ্জের শিবালয় উপজেলার মহাদেবপুরের প্রত্যন্ত এলাকায় বসুন্ধরা গ্রুপের পক্ষ থেকে ৫০০ মানুষের মধ্যে ইফতার বিতরণ করা হয়। ৭৭ বছর বয়সী রমেনা বেগম বলেন, ৬০ বছর আগে এ গ্রামে বউ হয়ে এসেছি। ইফতারিতে এমন সুন্দর প্যাকেট আগে কেউ দেয়নি। আমরা গ্রামের মানুষ, এত কিছু দিয়ে ইফতার করতে পারি না। এবার প্রথম শহরের মতো ইফতার পাইলাম। আল্লাহর দরবারে দোয়া করি, প্রতি বছর যেন এমন ইফতারি তারা দান করেন। এলাকার শত শত নারী-পুরুষ উৎসাহ-উদ্দীপনা নিয়ে ইফতার গ্রহণ করেন। হাফিজ উদ্দিন নামে এক ব্যক্তি বলেন, বসুন্ধরার কাছ থেকে আগে আমি কম্বল পেয়েছি, এবার ইফতারি পেলাম। তারা সারা বছর আমাদের সহযোগিতা করেন। এদিকে প্রতিদিনের মতো গতকালও রংপুরের গঙ্গাচড়া উপজেলার গজঘণ্টা ইউনিয়নের বিভিন্ন মসজিদ-মাদরাসায় বসুন্ধরার পক্ষ থেকে রোজাদারদের ইফতার করানো হয়। সরকারপাড়া জামে মসজিদের ইমাম ইসমাইল হোসেন বলেন, বসুন্ধরা গ্রুপের এমডি সাহেবের পক্ষ থেকে মসজিদের মুসল্লিদেও যে উন্নতমানের ইফতার করানো হচ্ছে তা সত্যিই প্রশংসনীয়। শুনেছি উনি সারা দেশেই এভাবে ইফতার বিতরণ করেন। আগের বছরও করেছেন। তবে কোনো দিন ভাবতে পারিনি এই প্রত্যন্ত এলাকায় বসুন্ধরা গ্রুপের পক্ষ থেকে ইফতার করানো হবে। গজঘণ্টা ইউনিয়নের ছালাপাক জামিয়া কারিমিয়া হাফেজিয়া মাদরাসার শিক্ষক মসিউর রহমান বলেন, বসুন্ধরা গ্রুপ তিস্তার চর এলাকার মানুষকে যেভাবে ইফতার করাচ্ছেন, তাতে অনেক খুশি এই এলাকার বাসিন্দারা। উন্নতমানের এই ইফতার খাওয়ানের জন্য মাদরাসার শিক্ষার্থীরাও বসুন্ধরা গ্রুপের জন্য দোয়া করেন। সারা মাসই এভাবে ইফতার দেওয়া হবে বলে আমাদের জানানো হয়েছে।

সর্বশেষ খবর