ঈদ কেনাকাটায় জমজমাট রাজধানীবাসীর আস্থার জায়গা বসুন্ধরা সিটি। সকাল থেকেই তিল ধারণের ঠাঁই হচ্ছে না দেশের এ মেগা শপিং মলে। সব ধরনের পণ্যে ক্রেতারা মন মজাচ্ছেন এখানে।
গতকাল দেখা গেছে ৮ তলা মার্কেটের প্রতিটি ফ্লোরেই লোকে লোকারণ্য। লিফট কিংবা চলন্ত সিঁড়িতে উঠতে গেলেও মানুষের ঠেলাঠেলি। সবচেয়ে বেশি ভিড় পোশাকের দোকানগুলোতে।
বসুন্ধরা শপিং মলে ঈদ শপিং করতে এসেছিলেন মাজহারুল ইসলাম। তিনি বলেন, এবারের ঈদে আজই প্রথম শপিংয়ে এলাম পরিবার নিয়ে। অনেক ভিড় হলেও শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত হওয়ায় পরিবার নিয়ে স্বাচ্ছন্দ্যে পছন্দমতো শপিং করা যায় বলেই এখানে আসি।ঈদ বাজারের বিক্রির বিষয়ে ফ্যাশন হাউস দর্জিবাড়ির বিক্রয়কর্মী জাহিদুল ইসলাম বলেন, এবার রোজার শুরু থেকেই বেশ ভালো বিক্রি হচ্ছে। আমরা যতটা আশা করেছি তার চেয়ে বেশি ক্রেতার সাড়া পাচ্ছি। আমাদের আরও আউটলেট রয়েছে সারা দেশে, তবে বসুন্ধরা সিটিতেই সবচেয়ে বেশি বিক্রি হয়। আমাদের এখানে পাঞ্জাবি বেশি চলছে। পাশাপাশি ক্যাজুয়াল শার্টও বিক্রি হচ্ছে।
জ্যোতি ফ্যাশনের ম্যানেজার আরিফ হোসেন বলেন, গত বছর থেকে এ বছর ঈদ উপলক্ষে বসুন্ধরা সিটিতে কেনাবেচা বেশি হচ্ছে। শুক্র-শনিবার বা ছুটির দিনগুলোতে বাম্পার সেল হচ্ছে। এ বছর নতুন পণ্য অনেক বেশি। অরগাঞ্জা, মসলিনের ওপর শাড়িগুলো অনেক বেশি চলছে। পাশাপাশি গাদওয়াল, কাঞ্জিপুরাম শাড়িগুলো ক্রেতারা খুব পছন্দ করছেন। পার্টি লেহেঙ্গা, গাউনও বেশ ভালো বিক্রি হচ্ছে। তিনি আরও জানান, কাপ ড্রেস ৬ হাজার থেকে ১২ হাজার, গাউন ১০ হাজার থেকে ৩০ হাজার, সারারা বিক্রি হচ্ছে ৪ হাজার থেকে ২৫ হাজার টাকায়।
অন্যদিকে বসুন্ধরা সিটির খাবারের দোকানগুলোতেও ইফতারের সময় অনেক ভিড় দেখা গেছে। শপিং মলে ঘুরতে ঘুরতে ক্লান্ত হয়ে খেতে আসেন ক্রেতারা। ইন্ডিয়ান শাহি দরবারের ম্যানেজার মিজানুর রহমান বলেন, ঈদ উপলক্ষে শপিংয়ে এসে আমাদের ফুডকোর্টে মানুষ ইফতারের জন্য আসছে। আমরা মানসম্পন্ন খাবার সরবরাহ করছি। ফলে ক্রেতারাও সন্তুষ্ট। এখানে সব ধরনের খাবার পাওয়া যায়। ইন্ডিয়ান, চাইনিজ, সি ফুড বেশি চলছে।
বসুন্ধরা সিটিতে পোশাকের পাশাপাশি অলংকারের দোকানগুলোতেও অনেক ভিড়। ১৪ বছর ধরে এখানে ব্যবসা করছে জুয়েলারি প্রতিষ্ঠান কেজেট ইন্টারন্যাশনাল। এখানের বিক্রয়কর্মী মোহাম্মদ ইয়াসিন বলেন, ঈদ উপলক্ষে ছোট ছোট আইটেমগুলো বেশি বিক্রি হচ্ছে- যেমন লকেট, গলার চেইন, ব্রেসলেট, চুড়ি, ইয়ার রিংস, ফিঙ্গার রিং ইত্যাদি।
বসুন্ধরা সিটিতে জুতার দোকানগুলোতেও ছিল নানা বয়সী মানুষের ভিড়। নিজেদের পছন্দের জুতা কিনতে তাদের যাচাই-বাছাইয়ের শেষ ছিল না। আর বিক্রয়কর্মীরাও ক্রেতার চাহিদা পূরণে ছিলেন মরিয়া। বাটার বিক্রয়কর্মী জমসেদ মজুমদার জানান, রমজানের শুরু থেকেই তাদের কেনাবেচা একেবারে খারাপ ছিল না। তবে এখন ঈদের সময় যত ঘনিয়ে আসছে বিক্রি তত বাড়ছে। সামনে বিক্রি আরও বাড়বে বলে জানান তিনি।