মঙ্গলবার, ২ এপ্রিল, ২০২৪ ০০:০০ টা

শিকলে বেঁধে ধর্ষণ নির্যাতনের রোমহর্ষক বর্ণনা

নিজস্ব প্রতিবেদক

রাজধানীর মোহাম্মদপুর নবীনগর হাউজিংয়ের একটি ভবন থেকে শিকলবন্দি এক তরুণীকে (২৩) উদ্ধার করেছে পুলিশ। জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯ এর ফোনকলে ওই তরুণীকে উদ্ধার করা হয়। সান ও তার বন্ধুরা ওই তরুণীকে শিকলে বেঁধে ২৫ দিন ধরে ধারাবাহিক শারীরিক ও যৌন নির্যাতন চালায়। ধারণ করে বিকৃত যৌনাচারের ভিডিও। এসব ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে চারজনকে গ্রেফতার করেছে মোহাম্মদপুর থানা পুলিশ। গ্রেফতার ব্যক্তিরা হলেন- ভুক্তভোগী তরুণীর বর্তমান প্রেমিক সান ও তার দুই বন্ধু হিমেল, রকি এবং সালমা ওরফে ঝুমুর। গতকাল রাজধানীর শ্যামলীর নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানান ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) তেজগাঁও বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) এইচ এম আজিমুল হক। গত রবিবার রাতভর টানা অভিযান চালিয়ে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা থেকে তাদের গ্রেফতার করা হয়। পরে তাদের আদালতে হাজির করা হলে তিনদিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করে আদালত। ডিসি আজিমুল হক বলেন, গত ২৯ মার্চ রাত ১১টায় ৯৯৯ এর কলের মাধ্যমে ভুক্তভোগী তরুণীর সন্ধান পায় পুলিশ। পরে শেকলে বাঁধা অবস্থায় তাকে উদ্ধার করা হয়। বর্তমানে মেয়েটি ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তরুণী জানায়, প্রতিদিন সন্ধ্যায় তাকে ঘুমের ওষুধ খাওয়ানো হয়। সে ঘুমিয়ে গেলে বাইরে যায় সালমা, সান ও অন্যরা। এবার আগেভাগে ঘুম ভেঙে গেলে ও বাসায় কেউ না থাকার সুযোগে সে চিৎকার দেয়। কেউ তা শুনে ৯৯৯ নম্বরে কল দিয়ে পুলিশকে জানায়। তরুণী জানায়, নির্যাতনের বেশিরভাগ ভিডিও ও ছবি সালমার মোবাইলে ধারণ করা হয়। পুলিশ মোবাইলটি উদ্ধারের চেষ্টা করছে। ঘটনার বিবরণে জানা যায়, বাবা-মায়ের মধ্যে বিচ্ছেদ এবং পরে তারা অন্যত্র বিয়ে করায় ভুক্তভোগী তরুণী তার বড় বোনের বাসায় থাকতেন। সে সময় ভগ্নিপতির মাধ্যমে ব্যারিস্টার মাসুদ নামে এক আইনজীবীর সঙ্গে পরিচয় হয় ওই তরুণীর। মাসুদের সঙ্গে লিভ-টুগেদারে জড়িয়ে পড়েন তিনি। কিন্তু মাসুদ বেশিরভাগ সময় বিদেশে থাকতেন। এ সময় সান নামের এক ছেলের সঙ্গে সম্পর্কে জড়ানোয় ক্ষিপ্ত হন মাসুদ। প্রতিশোধ নিতে টাকার প্রলোভন দেখিয়ে সান ও তার বন্ধুদের দিয়ে ওই তরুণীকে শেকলে বেঁধে শারীরিক ও যৌন নির্যাতন চালানো হয়। এতে সহযোগিতা করেন সালমা ওরফে ঝুমুর নামে এক নারী। তারা নির্যাতন ও বিকৃত যৌনাচারের ভিডিও ধারণ করে ব্যারিস্টার মাসুদের কাছে পাঠাতো। গতকাল মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদপুর থানার এসআই ফারুকুল ইসলাম আসামিদের আদালতে হাজির করে সাত দিনের রিমান্ডের আবেদন করেন। আসামিপক্ষের আইনজীবীরা রিমান্ড বাতিল ও জামিন চেয়ে আবেদন করেন। উভয়পক্ষের শুনানি শেষে ঢাকার মহানগর হাকিম মোহাম্মদ জসিম এ রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

সর্বশেষ খবর