বুধবার, ৩ এপ্রিল, ২০২৪ ০০:০০ টা
সন্তান প্রসব

বাড়ছেই সিজারিয়ান

♦ এক বছরের ব্যবধানে বেড়েছে ৯.৩ শতাংশ ♦ শহরাঞ্চলের তুলনায় পল্লী অঞ্চলে সিজারিয়ান বাড়ছে দ্রুত

নিজস্ব প্রতিবেদক

এক বছরের ব্যবধানে সিজারিয়ান পদ্ধতিতে সন্তান জন্মদানের হার বেড়েছে ৯.৩ শতাংশ। শহরাঞ্চলের তুলনায় পল্লী অঞ্চলে সিজারিয়ানের হার বাড়ছে দ্রুত। গত মার্চে প্রকাশিত বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) ‘বাংলাদেশ ভাইটাল স্যাম্পল স্ট্যাটিসটিকস-২০২৩’ শীর্ষক প্রতিবেদনে এসব তথ্য তুলে ধরা হয়েছে। স্যাম্পল ভাইটাল রেজিস্ট্রেশন সিস্টেমের (এসভিআরএস) প্রকল্প পরিচালক আলমগীর হোসেন বলেছেন, সিজারিয়ানের এই হার উদ্বেগজনক এবং বিষয়টি নিয়ে আরও গবেষণার প্রয়োজন।

শিশু জন্মের সময় জটিলতা দেখা দিলে অপারেশনের মাধ্যমে স্বাভাবিক প্রসবের বিকল্প ব্যবস্থা করা হয়। এটাই সিজারিয়ান বা সি-সেকশন। বাংলাদেশে দিন দিন বেড়েই চলেছে এই পদ্ধতিতে সন্তান জন্মদানের প্রবণতা। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২২ সালে সিজারিয়ান পদ্ধতিতে সন্তান প্রসবের হার ছিল ৪১.৪ শতাংশ। ২০২৩ সালে এই হার বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫০.৭ শতাংশে। অর্থাৎ এক বছরের ব্যবধানে বেড়েছে ৯.৩ শতাংশ। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের অবস্ অ্যান্ড গাইনি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক বেগম নাসরীন বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, রোগীর আত্মীয়-স্বজনের চাপের কারণে অনেক সময় নরমাল ডেলিভারি সম্ভব হলেও ডাক্তারদেরকে অস্ত্রোপচারের দিকে যেতে হয়। রোগীর প্রসব যন্ত্রণা উপস্থিত হলে আত্মীয়-স্বজনরা সময়ক্ষেপণ করে ঝুঁকি নিতে চান না বলে দিন দিন সিজারিয়ানের সংখ্যা বাড়ছে। বিবিএসের প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, শহরাঞ্চলের তুলনায় পল্লী অঞ্চলে সিজারিয়ানের সংখ্যা দ্রুত বাড়ছে। এক বছরের ব্যবধানে শহরাঞ্চলে সিজারিয়ান পদ্ধতিতে সন্তান প্রসবের হার বেড়েছে ৬.১ শতাংশ। ২০২২ সালে এই হার ছিল ৫৩ শতাংশ। ২০২৩ সালে এই হার দাঁড়িয়েছে ৫৯.১ শতাংশে। অন্যদিকে এক বছরের ব্যবধানে পল্লী অঞ্চলে সিজারিয়ানের সংখ্যা বেড়েছে ৯.৯ শতাংশ। ২০২২ সালে পল্লী অঞ্চলে অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে সন্তান প্রসবের হার ছিল ৩৮.৫ শতাংশ। ২০২৩ সালে এটি বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪৮.৪ শতাংশে। নরমাল ডেলিভারির বিষয়ে রোগীদের কাউন্সিলিংয়ের অভাবে সিজারিয়ান ডেলিভারির সংখ্যা বাড়ছে বলে মন্তব্য করেছেন অবস্টেট্রিকাল অ্যান্ড গাইনোকোলজিক্যাল সোসাইটি অব বাংলাদেশের (ওজিএসবি) প্রাক্তন সভাপতি অধ্যাপক ফেরদৌসী বেগম। তিনি বলেন, প্রেগনেন্সির প্রথম থেকে যদি বোঝানো যেত যে, নরমাল ডেলিভারির জন্য কীভাবে চেষ্টা করতে হবে তাহলে সিজারিয়ানের হার অনেক কমে যেত। অনেকে ব্যথা সহ্য করতে চায় না। সে জন্য এপিডুরাল অ্যানেসথেশিয়া দিতে হয়, আমাদের এখানে তো হাসপাতালগুলোতে সে সুযোগ নেই। তিনি আরও বলেন, প্রেগনেন্সি কিন্তু আনপ্রেডিকটেবল কন্ডিশন, হঠাৎ মা ও শিশুর অবস্থা খারাপ হয়ে যেতে পারে। কিন্তু এখন মানুষ একটুতেই রেগে যায়। রোগী খারাপ হলে দ্রুত চিকিৎসা শুরুর জন্য যেসব যন্ত্রপাতির প্রয়োজন হয় আমাদের অধিকাংশ হাসপাতালে তা নেই। এ ছাড়া একজন রোগীর জন্য একজন নার্স, একজন মিডওয়াইফ প্রয়োজন কিন্তু আমাদের এখানে ১০০ জনেও একজন নার্স, মিডওয়াইফ নেই।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর