শুক্রবার, ৫ এপ্রিল, ২০২৪ ০০:০০ টা
চালের বাজার অস্থির

সরকারের নানা পদক্ষেপের পরও বাড়ছে দাম

রাশেদ হোসাইন

সরকারের নানা পদক্ষেপের পরও বাড়ছে দাম

সারা দেশে অভিযান, জরিমানা, শুল্ক ছাড়ের পরও বাড়ছে চালের দাম। বাজার নিয়ন্ত্রণে ৩০ প্রতিষ্ঠানকে ৮৩ হাজার টন চাল আমদানির অনুমতি দেওয়া হলেও এসব পদক্ষেপকে পাত্তাই দিচ্ছেন না অসাধু চাল ব্যবসায়ীরা। সরকারের এত আয়োজনেও নিয়ন্ত্রণে আসেনি বাজার। উল্টো লাফিয়ে বেড়েছে দাম। গেল এক সপ্তাহে সব ধরনের চালের দাম কেজিতে বেড়েছে ৩ থেকে ৫ টাকা। সর্বশেষ পদক্ষেপ হিসেবে মৌসুমভিত্তিক উৎপাদন খরচ ও জাতভিত্তিক চালের দাম নির্ধারণ করতে চাইছে সরকার।

বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম টিটু বলেছেন, আগামী পয়লা বৈশাখ থেকে সরু চাল, চিকন চাল, মোটা চাল এসব থেকে বের হয়ে জাতভিত্তিক চালের দাম নির্ধারণ করা হবে। একই সঙ্গে মৌসুমভিত্তিক উৎপাদন খরচ নির্ধারণে মিলার, পাইকারি এবং খুচরা পর্যায়ের জন্য একটা রূপরেখা তৈরি হয়েছে। এ জন্য খাদ্য, কৃষি ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় যৌথভাবে বৈঠক করে এটা চূড়ান্ত করে জানিয়ে দেব। পয়লা বৈশাখ থেকে তা কার্যকর হবে। এদিকে দাম বাড়ানো নিয়ে একে অপরের ওপর দোষ চাপাচ্ছেন। খুচরা ও পাইকাররা দুষছেন মিলারদের। তারা বলছেন, রোজার সময় বাজারে চালের ক্রেতা থাকে কম। তাই দামও স্বাভাবিক থাকার কথা। তবে বাজারে সেই চিত্র নেই। তাদের দাবি, কোনো কারণ ছাড়াই মিলগেটে বস্তাপ্রতি চালের দাম বেড়েছে ১০০ থেকে ১৫০ টাকা, যার প্রভাব পড়েছে খুচরা বাজারে।

রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে, মাঝারি চালের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৫৬ থেকে ৫৮ টাকা দরে এবং গুটি স্বর্ণা বা মোটা চালের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৫২ থেকে ৫৪ টাকায়। ৮-১০ দিন আগে এ দুই জাতের চালের দর ছিল যথাক্রমে ৫২ থেকে ৫৪ ও ৪৮ থেকে ৫২ টাকা। একই সময় চিকন বা মিনিকেট চালের কেজি ছিল ৬৮ থেকে ৭২ টাকা, ভোক্তাদের এখন কিনতে হচ্ছে ৭০ থেকে ৭৬ টাকা দরে। সেই হিসাবে এ তিন জাতের চাল কেজিতে বেড়েছে ২ থেকে ৪ টাকা।

চাল কিনতে আসা বেসরকারি চাকরিজীবী শরিফুল ইসলাম বলেন, সবকিছুর দাম দিন দিন বাড়ছে কোনো কিছুর দাম কমতির দিকে নেই। সেই হিসেবে আমাদের বেতন বাড়ছে না। রমজানের শুরু থেকে প্রতিটি জিনিস বাড়তি দামে ক্রয় করেছি। এ রোজার শুরুতে আটাশ চাল কিনেছি ৫৪ টাকা। ২০ দিন পর একই চাল দামাদামি করে আজ (বৃহস্পতিবার) নিতে হলো ৫৮ টাকা করে। মিলারদের দাবি, ধান সংকট। এ জন্য দায়ী মৌসুমি মজুতদাররা। কৃষকের কাছ থেকে কম দরে মৌসুমি ব্যবসায়ীরা ধান কিনে রেখেছেন। ফলে কৃষকের কাছে ধান নেই। মিলাররা বাধ্য হচ্ছেন বেশি দামে মজুতদারের কাছ থেকে ধান কিনতে। ধানের দাম বেশি হওয়ায় মিল পর্যায়ে চালের কেজিতে ৫০ পয়সা থেকে ১ টাকার মতো দর বেড়েছে।

কৃষি বিপণন অধিদফতরের প্রতিবেদন বলছে, গত এক মাসের তুলনায় বাজারে এখন সব ধরনের চালের দর বেশি। সংস্থাটির তথ্যানুযায়ী, ঢাকার বাজারে গতকাল প্রতি কেজি চিকন চাল ৬৮ থেকে ৮০, মাঝারি চাল ৫৫ থেকে ৬০ ও মোটা চাল ৫০ থেকে ৫২ টাকায় বিক্রি হয়েছে। গত মাসের এ সময় চিকন চালের কেজি ৬৪ থেকে ৭৮ টাকা, মাঝারি চাল ৫২ থেকে ৫৬ ও মোটা চাল ৪৮ থেকে ৫০ টাকা ছিল। সে হিসাবে গত এক মাসে এ তিন ধরনের চাল কেজিতে ২ থেকে ৫ টাকা বেড়েছে। শতাংশের হিসাবে দেখা গেছে, এক মাসের ব্যবধানে মোটা চালে ৪ দশমিক ০৮ শতাংশ, মাঝারি চালে ৬ দশমিক ৪৮ এবং চিকন চালের দর ৪ দশমিক ২৩ শতাংশ দাম বেড়েছে।

 

সর্বশেষ খবর