শুক্রবার, ৫ এপ্রিল, ২০২৪ ০০:০০ টা

নাচে গানে সম্প্রীতির মেলবন্ধন

রাঙামাটি প্রতিনিধি

নাচে গানে সম্প্রীতির মেলবন্ধন

চাকমা, মারমা, ত্রিপুরা ও তঞ্চঙ্গ্যা নারী-পুরুষের নাচ, গান এবং খেলাধুলায় জমে উঠেছে রাঙামাটির বৈসাবি উৎসব। উৎসবের দ্বিতীয় দিনে গতকাল দশ ভাষাভাষী ১২টি ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর মানুষের এই মিলনমেলায় সম্প্রীতির মেলবন্ধন রচনা করেন অন্যান্য সম্প্রদায়ের মানুষেরাও।

রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদের উদ্যোগে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী সাংস্কৃতিক ইনস্টিটিউটের চত্বরে বসেছে এই বৈসাবি মেলা। চার দিনব্যাপী মেলার আয়োজন থাকলেও উৎসব চলবে প্রায় অর্ধ মাসব্যাপী। গতকাল ছিল মেলার দ্বিতীয় দিন। বিকাল ৩টা থেকে শুরু হয় মেলার আনুষ্ঠানিকতা। ঐতিহ্যবাহী পোশাকে নানা রঙে ও ঢংয়ে সেজে মেলায় যোগ দিতে আসে তরুণ-তরুণীরা। মেলায় যোগ দেন অপর দুই পার্বত্য জেলা খাগড়াছড়ি ও বান্দরবানের লোকেরা। তাদের নাচে গানে মাতোয়ারা হয় গোটা মেলা। সরেজমিনে দেখা গেছে, চাকমা, মারমা, ত্রিপুরা ও তঞ্চঙ্গ্যা তরুণ-তরুণীরা মেতে উঠেছেন তাদের ঐতিহ্যবাহী খেলাধুলায়। ত্রিপুরা সম্প্রদায়ের গড়াই নৃত্য, তঞ্চঙ্গ্যা ঘিলা খেলা ও চাকমাদের ছিল বেম্ব খেলা। খেলা দেখতে ভিড় জমান পাহাড়ি ও বাঙালি সম্প্রদায়ের শত শত মানুষ। এতে করে রচিত হয় সব সম্প্রদায়ের সম্প্রীতির মেলবন্ধন। শুধু তাই-ই নয়, এ মেলায় দূর-দূরান্ত থেকে আসেন দেশি-বিদেশি পর্যটক। দেখা গেছে, পুরো মেলাজুড়ে রয়েছে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর ইতিহাস ঐতিহ্যের চিত্র। তাদের পরিধানে পোশাক, বস্ত্র, অলংকার, বাঁশ ও বেতের তৈরি পণ্য আর জীবন-জীবিকার সব সরঞ্জাম মেলায় স্থান পেয়েছে। মেলায় কথা হয় স্নেহা চাকমার সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘বৈসাবি ঘিরেই আমাদের যত উৎসব। নানা আয়োজনে পালন করা হয় বৈসাবি উৎসব। উৎসবে যোগ দিতে আমাদের ভালোলাগে, কারণ এখানে বিভিন্ন জাতি গোষ্ঠী ও ধর্ম-বর্ণের মানুষের দেখা মেলে।’ মেলার রাতটি সাজানো হয়েছিল ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর ঐতিহ্যবাহী নৃত্য-সংগীত, চাকমা, বম, চাক, ত্রিপুরা ও মারমা সাংস্কৃতিক দলের পরিবেশনায় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান দিয়ে। পাহাড়ি-বাঙালি নির্বিশেষে সব সম্প্রদায়ের অগণিত নারী-পুরুষের ঢল থাকে এসব অনুষ্ঠানে। রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান অং সুই প্রু চৌধূরী বলেন, সরকার রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদের মাধ্যমে পাহাড়ের ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর উৎসবে সহায়তা করেছে। সরকার নৃ-গোষ্ঠীর উৎসব-সংস্কৃতি-কৃষ্টি সংরক্ষণের জন্য বিশেষ পরিকল্পনাও গ্রহণ করেছে। রাঙামাটিতে নির্মাণ করা হবে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর জন্য আধুনিকমানের ইনস্টিটিউট ভবন। এরই মধ্যে এই বৈসাবি মেলা পরিদর্শন করেছেন সংস্কৃতিক বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী নাহিদ ইজাহার খান, পরিবেশ বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের স্থায়ী কমিটির সভাপতি ও রাঙামাটি সংসদ সদস্য দীপংকর তালুকদার, সংরক্ষতি মহিলা আসনের সংসদ সদস্য জ্বরতী তঞ্চঙ্গ্যা, রাঙামাটি রিজিয়নের ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সোহেল আহমেদ, রাঙামাটি জেলা প্রশাসক মো. মোশারফ হোসেন খান, রাঙামাটি জেলা পুলিশ সুপার মীর আবু তৌহিদ।

সর্বশেষ খবর