রবিবার, ৭ এপ্রিল, ২০২৪ ০০:০০ টা

ওপারে আবার বিস্ফোরণ

টেকনাফ (কক্সবাজার) প্রতিনিধি

বাংলাদেশ সীমান্তের ওপারে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে জান্তা বাহিনীর সঙ্গে বিদ্রোহী আরাকান আর্মির (এএ) যুদ্ধ আরও তীব্রতর হয়েছে। এ অবস্থায় গতকাল দিনভর ওপারে থেমে থেমে বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেছে। এর আগে রাতভর প্রচণ্ড গোলাগুলি ও অবিরাম বিস্ফোরণের শব্দ পাওয়া গেছে।

সীমান্তের একাধিক সূত্রে জানা গেছে, হোয়াইক্যং ও হ্নীলা সীমান্তের পূর্বদিকে মিয়ানমারের মংডু শহরের উত্তরে বলিবাজার, শিলখালী, নাকপুরা, হাস্যুরাতা ও নাইক্ষ্যংদিয়া থেকে মর্টার শেলের বিস্ফোরণের বিকট শব্দ ভেসে আসছে। নতুন করে ওইসব এলাকায়ও সংঘাত ছড়িয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এসব এলাকায় আরাকান আর্মি ও সেদেশের সামরিক বাহিনীর মধ্যে তুমুল সংঘাত           চলমান রয়েছে। সীমান্তের এসব এলাকায় গতকাল ভোররাত পর্যন্ত অর্ধশতাধিক বিস্ফোরণের বিকট শব্দ ভেসে এসেছে। বিশেষ করে উপজেলার সাবরাং ইউনিয়ন, সেন্টমার্টিন, শাহপরীর দ্বীপ, হোয়াইক্যংয়ের খারাংখালী, ঝিমংখালী, হ্নীলা ইউনিয়নের মৌলভীবাজার, ওয়াব্রাং, পুরানবাজার, ফুলের ডেইল, চৌধুরীপাড়া, আলীখালি, লেদা, মুচনী, জাদীমুড়া, দমদমিয়া, টেকনাফ পৌরসভার নাইট্যংপাড়া, চৌধুরীপাড়া, কেকেপাড়া, জালিয়াপাড়াসহ অন্তত ৩০টি গ্রামে বিস্ফোরণের বিকট শব্দ শোনা গেছে। হোয়াইক্যংয়ের বাসিন্দা দিনমজুর আবদুল কুদ্দুস বলেন, ‘কী এক অদ্ভুত আওয়াজ ভেসে আসে, বাড়িতে ঘুমাইতে পারি না। খেতে কাজ করতে গেলে ভয়ে ভয়ে কোদাল মারি। কোন সময় যেন এসে গায়ে লাগে ভয়ে ভয়ে থাকি।’ টেকনাফের নাজিরপাড়ার বাসিন্দা আন্টু মিয়া ইজিবাইকচালক হিসেবে কাজ করেন। তিনি বলেন, ‘আজকে (শনিবার) ভোরে ইজিবাইক চালাতে বের হলে আমি হঠাৎ চমকে উঠি। মনে হচ্ছে ভূমিকম্পে সব উল্টে যাইতেছে।’ টেকনাফ পৌরসভার জালিয়াপাড়ার নুরুল আলম নামের এক বাসিন্দা বলেন, ‘বিকট শব্দে ঘুম থেকে বাচ্চারা চমকে উঠে কান্নাকাটি করছে।’ সেন্টমার্টিন ইউনিয়ন পরিষদের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য নজরুল ইসলাম বলেন, ‘বিস্ফোরণের শব্দ কয়েকদিন তেমন শোনা না গেলেও এখন থেমে থেমে বিকট শব্দ শোনা যাচ্ছে। মনে হচ্ছে মিয়ানমারে দুই পক্ষের মধ্যে ব্যাপক সংঘর্ষ চলছে।’ সাবরাং ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য রেজাউল করিম রেজু বলেন, ‘থেমে থেমে বিস্ফোরণের বিকট শব্দ শোনা যাচ্ছে। মিয়ানমারের অভ্যন্তরে প্রচুর গোলাগুলি হচ্ছে। মনে হচ্ছে তাদের চলমান যুদ্ধ বেশি ভয়ংকর রূপ ধারণ করেছে।’ কোস্টগার্ড সদর দফতরের মিডিয়া কর্মকর্তা ও লে. কমান্ডার খন্দকার মুনিফ তকি বলেন, ‘রাখাইন রাজ্যের পরিস্থিতি গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। অনুপ্রবেশ ঠেকাতে নাফ নদে কোস্টগার্ডের টহল অব্যাহত রয়েছে।’        

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর