রবিবার, ৭ এপ্রিল, ২০২৪ ০০:০০ টা
বিশ্ব স্বাস্থ্য দিবস আজ

শহরে প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা সংকট

নিজস্ব প্রতিবেদক

শহরে প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা সংকট

গ্রামাঞ্চলে প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবার রোল মডেল কমিউনিটি ক্লিনিক। এ ছাড়া রয়েছে উপজেলা স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্র। কিন্তু দীর্ঘদিন আলোচনা থাকলেও শহরাঞ্চলে গড়ে ওঠেনি প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবার কোনো ব্যবস্থা। অসুস্থ হলে নগরবাসীকে যেতে হয় বিশেষায়িত হাসপাতালে।

এ পরিস্থিতিতে ‘স্বাস্থ্য অধিকার নিশ্চিতে কাজ করি একসাথে’ প্রতিপাদ্য নিয়ে আজ পালিত হচ্ছে বিশ্ব স্বাস্থ্য দিবস। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) স্যাম্পল ভাইটাল স্ট্যাটিসটিকসের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩ সালের ১ জুলাই দেশের প্রাক্কলিত জনসংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৭ কোটি ২৯ লাখ ২০ হাজারে। বাংলাদেশ সম্প্রসারিত টিকাদান কর্মসূচি, কভিড-১৯ টিকাদান কর্মসূচি, কালাজ্বর নির্মূলসহ বিভিন্ন ভার্টিক্যাল স্বাস্থ্য কর্মসূচিতে ব্যাপক সাফল্য অর্জন করলেও সর্বজনীন স্বাস্থ্যসেবার লক্ষ্য অর্জন, বৈশ্বিক স্বাস্থ্যনিরাপত্তা সূচক ও স্বাস্থ্য অন্তর্ভুক্তিমূলকতা সূচকে অনেক পিছিয়ে আছে।

সর্বজনীন স্বাস্থ্যসেবার লক্ষ্য অর্জনের সার্ভিস কভারেজ ইনডেক্সে ১০০-এর মধ্যে বর্তমান স্কোর ৫২, যা ২০৩০ সাল নাগাদ কমপক্ষে ৮০-তে উন্নীত করতে হবে। স্বাস্থ্যের মোট ব্যয়ে ব্যক্তির নিজস্ব অংশ বর্তমান ৬৮ দশমিক ৫ শতাংশ থেকে ৩০ শতাংশে নামিয়ে আনতে হবে। ২০২১ সালের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, বৈশ্বিক স্বাস্থ্যনিরাপত্তা সূচকে বাংলাদেশের স্কোর ছিল ১০০-এর মধ্যে ৩৫ দশমিক ৫ এবং ১৯৫ দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান ছিল ৯৫তম। অন্যদিকে স্বাস্থ্য অন্তর্ভুক্তিমূলকতা সূচকে ৪০ দেশের মধ্যে বাংলাদেশের স্কোর সর্বনিম্ন (৩০.৮)।

সম্প্রসারিত টিকাদান, কভিড-১৯ টিকাদান কালাজ্বর নির্মূলসহ বিভিন্ন ভার্টিক্যাল স্বাস্থ্য কর্মসূচিতে সাফল্য অর্জন করলেও সর্বজনীন স্বাস্থ্যসেবার লক্ষ্য অর্জন বৈশ্বিক স্বাস্থ্যনিরাপত্তা সূচক ও স্বাস্থ্য অন্তর্ভুক্তিমূলকতা সূচকে অনেক পিছিয়ে বাংলাদেশ

স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রী ডা. সামন্ত লাল সেন বলেছেন, দেশের মানুষের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিতে সরকার কাজ করে যাচ্ছে। ২০৩০ সালের মধ্যে এটি বাস্তবায়নের লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে। গতকাল রাজধানীর শাহবাগে বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন নেছা মুজিব কনভেনশন হলে বিশ্ব স্বাস্থ্য দিবস-২০২৪ উপলক্ষে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘দেশের প্রান্তিক অঞ্চল পর্যন্ত চিকিৎসা পৌঁছে দিতে হবে। চিকিৎসক, নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মীরা যদি ঠিকভাবে কাজ করেন তা হলেই তা সম্ভব। আমি এজন্য আপনাদের যত রকম সুযোগসুবিধা প্রয়োজন তার ব্যবস্থা করব। আপনারা আমাকে সেবা দিন, আমি প্রয়োজনীয় সব কিছুর ব্যবস্থা করব।’

আলোচনায় অংশ নিয়ে অন্য বক্তারা বলেন, ইপিআই কর্মসূচির আওতায় শিশু, কিশোরী ও নারীদের ১১টি মারাত্মক রোগের বিরুদ্ধে বিনামূল্যে টিকাদান কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে; যা বিশ্বব্যাপী প্রশংসিত। অতিসম্প্রতি জরায়ুমুখ ক্যান্সার প্রতিরোধে ১০-১৪ বছর বয়সী কিশোরীদের বিনামূল্যে এইচপিভি টিকাদান কার্যক্রম শুরু করা হয়েছে। সরকারের যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণে করোনা মহামারিতে মৃত্যু যে কোনো দেশের চেয়ে অনেক কম ছিল। এটি নিয়ন্ত্রণের লক্ষ্যে দেশের মোট জনগোষ্ঠীর ৯৪ শতাংশ মানুষকে বিনামূল্যে টিকা প্রদান করা হয়েছে।

এ ছাড়া বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা কর্তৃক ২০১৪ সালে পোলিওমুক্ত ঘোষণা এবং ২০২৩ সালে কালাজ্বর ও ফাইলেরিয়াসিস নির্মূলের স্বীকৃতি আমাদের স্বাস্থ্য খাতের অনন্য অর্জন উল্লেখ করে যক্ষ্মা ও এইচআইভি-এইডস নিয়ন্ত্রণের ক্ষেত্রেও উল্লেখযোগ্য সাফল্য রয়েছে বলে জানান স্বাস্থ্যের কর্তাব্যক্তিরা। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. এ বি এম খুরশীদ আলম, স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. মো. টিটু মিয়া, পরিবার পরিকল্পনা অধিদফতরের মহাপরিচালক সাহান আরা বানু, বিএসএমএমইউর উপাচার্য অধ্যাপক ডা. দীন মোহাম্মদ নূরুল হক, স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদের (স্বাচিপ) সভাপতি ডা. মো. জামাল উদ্দিন চৌধুরী প্রমুখ।

সর্বশেষ খবর