সোমবার, ৮ এপ্রিল, ২০২৪ ০০:০০ টা

সেইফ এক্সিটে আটকা মুক্তি

সোমালিয়ায় জিম্মি বাংলাদেশি নাবিক

মুহাম্মদ সেলিম, চট্টগ্রাম

বাংলাদেশি পতাকাবাহী জাহাজ এমভি আবদুল্লাহকে জিম্মি করা জলদস্যুদের সঙ্গে মুক্তিপণ ও অন্যান্য ইস্যু নিয়ে রফাদফা চূড়ান্ত হয়ে গেছে। কিন্তু জলদস্যুদের সেইফ এক্সিট (নিরাপদে সরে যাওয়ার সুযোগ) নিশ্চিত না হওয়ায় মিলছে না বাংলাদেশি ২৩ নাবিকের মুক্তি। সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্র থেকে এমন তথ্য জানা গেছে।

তবে জাহাজের মালিকপক্ষ চট্টগ্রাম ভিত্তিক শিল্পগোষ্ঠী কবির গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রিজের সহযোগী প্রতিষ্ঠান এসআর শিপিং করপোরেশনের দাবি ঈদের পরপরই মুক্তি মিলবে নাবিকদের। কবির গ্রুপের মিডিয়া উপদেষ্টা মিজানুল ইসলাম বলেছেন, নাবিক ও জাহাজের মুক্তির বিষয়ে জলদস্যুদের সঙ্গে ফলপ্রসূ আলোচনা চলছে। আশা করছি ঈদের পর এক সপ্তাহের মধ্যেই নাবিক ও জাহাজের মুক্তি মিলবে। এদিকে নাম প্রকাশ না করার শর্তে সংশ্লিষ্ট এক কর্মকর্তা বলেন, জলদস্যুদের সঙ্গে মুক্তিপণসহ সব ইস্যু নিয়ে রফাদফা হয়ে গেছে। কিন্তু জলদস্যুদের সেইফ এক্সিট নিশ্চত না হওয়ায় নাবিক ও জাহাজকে মুক্তি দিচ্ছে না। জলদস্যুদের মধ্যস্থতাকারী পক্ষ আশ্বস্ত করেছে ঈদের পরপরই নাবিকদের মুক্তি দেওয়া হবে।

জানা গেছে, ভারত মহাসাগর থেকে ছিনতাই হওয়া এমভি আবদুল্লাহর জিম্মিদশার আট দিনের মাথায় তৃতীয় পক্ষের মাধ্যমে জলদস্যুদের সঙ্গে প্রথম যোগাযোগ হয় মালিক পক্ষের। এরপর বিভিন্ন পক্ষের মধ্যস্থতায় দীর্ঘদিন ধরে দর কষাকষির পর চূড়ান্ত হয়েছে মুক্তিপণের অর্থের পরিমাণ। নির্ধারণ করা হয়েছে মুক্তিপণ প্রদানের স্থান এবং মুক্তিপণের অর্থ পরিবহনকারী সংস্থাও। তবে সবকিছু চূড়ান্ত হওয়ার পরও নাবিক ও জাহাজের মুক্তিতে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে জাহাজে অবস্থানকারী জলদস্যুদের ‘সেইফ এক্সিট’। দস্যুদের মধ্যস্থতাকারীদের দাবি- সোমালিয়ান উপকূলে কঠোর নজরদারি করছে পান্টল্যান্ড পুলিশ। এ ছাড়া সাগরে ইইউ নেভাল ফোর্সের তৎপরতাও দস্যুদের মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। জলে এবং স্থলে ইইউ নেভাল ফোর্স ও পান্টল্যান্ড পুলিশের তৎপরতার কারণে নিরাপদে বেরিয়ে যাওয়ার সুযোগ পাচ্ছে না জলদস্যুরা। এ কারণেই নাবিক ও জাহাজের মুক্তিতে বিলম্ব হচ্ছে। সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানায়, মুক্তির পর জাহাজকে পার্শ্ববর্তী দেশ কাতার কিংবা সংযুক্ত আবর আমিরাতের আল হামরিয়া বন্দরে নিয়ে যাওয়া হবে জাহাজকে। তবে হামরিয়া বন্দরের নিয়ে যাওয়ার সম্ভাবনাই বেশি। কারণ মোজাম্বিকের মাপুতো বন্দর থেকে কয়লা নিয়ে জাহাজটি হামরিয়া বন্দরে যাওয়ার পথে দস্যুদের কবলে পড়ে। ওই বন্দরে কয়লা খালাসের পাশাপাশি নাবিকদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হবে। জিম্মিদশা থেকে মুক্ত হওয়ার পর জাহাজে থাকার মতো মানসিক অবস্থা নাবিকদের নাও থাকতে পারে। এ জন্য বিকল্প নাবিকদের মাধ্যমে জাহাজ দেশে ফিরিয়ে আনতে আরও ২৩ নাবিককে প্রস্তুত রাখা হয়েছে। প্রসঙ্গত, গত ১২ মার্চ ভারত মহাসাগরে সোমালিয়ান জলদস্যুদের কবলে পড়ে ‘এমভি আবদুল্লাহ’। জাহাজে ২৩ নাবিক রয়েছেন, যাদের সবাই বাংলাদেশি নাগরিক। কয়লাবাহী জাহাজটি চট্টগ্রামভিত্তিক শিল্পগোষ্ঠী কবির গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রিজের সহযোগী প্রতিষ্ঠান এসআর শিপিং করপোরেশনের।

সর্বশেষ খবর