সোমবার, ৮ এপ্রিল, ২০২৪ ০০:০০ টা
দুর্যোগ-দুর্ঘটনায় নিহত

অসচ্ছল পরিবারে নগদ সহায়তা দ্বিগুণের প্রস্তাব

ওয়াজেদ হীরা

কোনো দুর্যোগ বা দুর্ঘটনায় নিহত ব্যক্তির অসচ্ছল পরিবারে নগদ সহায়তা বাড়ানো হচ্ছে। দুর্যোগে নিহত ব্যক্তির পরিবার বর্তমানে ১০ হাজার টাকা পায় আর দুর্ঘটনায় পায় ২৫ হাজার তাৎক্ষণিক নগদ সহায়তা। সেটি বৃদ্ধি করে দুর্যোগের ক্ষেত্রে ২৫ হাজার আর দুর্ঘটনায় নিহত পরিবারকে তাৎক্ষণিক ৫০ হাজার টাকা করে দেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছে এবারের ডিসি সম্মেলনে। বিষয়টি সরকারের নীতিনির্ধারণী মহলে আলোচনা হয়েছে। এখন চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত পেলে দ্রুতই বাস্তবায়ন হবে। সেই সঙ্গে ভিজিএফ কর্মসূচিতে যারা ১০ কেজি চাল পান তাদেরও চাল দ্বিগুণ অর্থাৎ ২০ কেজি করার প্রস্তাব দিয়েছেন ডিসিরা। জানা গেছে, ইতোমধ্যেই দুর্যোগব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ে বিভিন্ন মিটিংয়ে বিভিন্ন দুর্ঘটনা বা দুর্যোগে মারা যাওয়ার ক্ষেত্রে অস্বচ্ছল পরিবারে টাকা বাড়ানোর বিষয়ে কয়েকবার আলোচনা হয়। এবার চলতি বছরে ডিসি সম্মেলনেও এটি প্রস্তাব হিসেবে উঠে আসে জেলা প্রশাসকদের কাছ থেকে। দুর্যোগ মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করে বলেন, নিহত পরিবারে টাকা বাড়ানোর বিষয়ে আলোচনা হচ্ছিল অনেক দিন ধরেই। এবারের ডিসি সম্মেলনেও বেশ আলোচনা হয়। এটি হলে এটা একটি ভালো উদ্যোগ হবে। একটা পরিবারের উপার্জনক্ষম ব্যক্তি মারা গেলে টাকা দিয়ে তো আর পোষানো যায় না তবে তাৎক্ষণিক সহায়তা হিসেবে এটি তখন খুবই কার্যকর।

সংশ্লিষ্ট দায়িত্বশীল সূত্রে জানা গেছে, এবারের ডিসি সম্মেলনে দুর্ঘটনা বা দুর্যোগে নিহত অস্বচ্ছল পরিবারকে টাকা বাড়ানোর প্রস্তাব দিয়েছেন ঝালকাঠির ডিসি ফারাহ গুল নিঝুম। প্রস্তাবের পক্ষে যুক্তি তুলে ধরে ঝালকাঠির ডিসি বলেছেন, মৃত ব্যক্তিটি যদি পরিবারের উপার্জনক্ষম ও তার আয়ের ওপর নির্ভরশীল হয়, সে ক্ষেত্রে সহায়তার বেশি প্রয়োজন। সামাজিক প্রেক্ষাপট ও দুর্ঘটনার তীব্রতা বিবেচনায় সহায়তা কম। তিনি প্রস্তাবের পক্ষে আরও বলেছেন, যে পরিবারের প্রধান মহিলা এবং ওই পরিবারে স্কুলগামী শিশু থাকলে সে ক্ষেত্রে সহায়তার পরিমাণ বেশি প্রয়োজন হয়। প্রাকৃতিক দুর্যোগের শিকার হলে চরম অর্থ/খাদ্য সংকটে থাকলে সে ক্ষেত্রে সহায়তা বেশি প্রয়োজন হয় বলেও যুক্তিতে তুলে ধরেন জেলা প্রশাসক। দুর্যোগ মন্ত্রণালয় এটি বৃদ্ধি করতে পারে বলেও বাস্তবায়নের সুপারিশে ডিসি উল্লেখ করেছেন।

এদিকে, জানা গেছে, দেশে ১ কোটির বেশি ভিজিএফ কার্ডধারী রয়েছে। ভিজিএফ কার্ডধারীরা সরকার বরাদ্দ দিলে ১০ কেজি করে চাল পেয়ে থাকেন। তবে অতন্ত দুই ঈদের উৎসবে এটি দ্বিগুণ অর্থাৎ ২০ কেজি করার প্রস্তাব দিয়েছেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হাবিবুর রহমান। প্রস্তাবের পক্ষে যুক্তি তুলে ধরে ডিসি বলেছেন, ভিজিএফ কর্মসূচিতে কার্ডপ্রতি ১০ কেজি চাল দেওয়া হয় যা উৎসব বিবেচনায় একটি পরিবারের জন্য কম। নিম্নআয়ের জনগোষ্ঠী উৎসবমুখর পরিবেশে ঈদ উদযাপন করা এবং বর্তমান দ্রব্যমূল্য বিবেচনায় পরিবারপ্রতি ২০ কেজি করা প্রয়োজন হওয়ার কথা বলেছেন। প্রস্তাবের পক্ষে আরও বলেছেন, প্রতিটি অতি দরিদ্র পরিবার আর্থিকভাবে লাভবান হওয়া এবং ভিজিএফ খাদ্যসহায়তা গুরুত্ব বৃদ্ধি পাওয়ার কথা বলেছেন। বাস্তবায়নের সুপারিশে ডিসি উল্লেখ করেছেন, দুর্যোগ মন্ত্রণালয় ভিজিএফ কর্মসূচির আওতায় বছরে দুই ঈদে ২০ কেজি চাল দিতে পারে। দুর্যোগব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের কাছে উপকূলীয় জেলা সাতক্ষীরার জন্য পর্যাপ্ত সংখ্যক রেসকিউ বোট চান সাতক্ষীরার ডিসি। উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার কার্যালয়ে জনবল কাঠামো বাড়ানোর প্রস্তাবসহ মোট সাতটি প্রস্তাব দেন ডিসিরা।

সর্বশেষ খবর