এবার ঈদে দীর্ঘ ছুটি উপভোগ করবেন দেশের মানুষ। আসছে ঈদে সরকারি কর্মচারীসহ বিভিন্ন পেশার মানুষ দীর্ঘ ছুটি পাচ্ছেন। এই ছুটি কাজে লাগাতে অনেকেই দেশ ও বিদেশে ঘুরতে যাচ্ছেন।
কয়েক বছর ধরেই ঈদের ছুটিতে অবকাশযাপনের জন্য দেশ ও দেশের বাইরে ভ্রমণের প্রবণতা বাড়ছে। এই ধারাবাহিকতায় এবারও দেশের ভিতর ৩০ থেকে ৫০ লাখ পর্যটক ঈদের ছুটিতে দেশের বিভিন্ন স্থানে ঘুরতে বের হবেন। দেশের বাইরে যাবেন ৮ লাখ মানুষ। যার মধ্যে অনেকেই দেশের বাইরে তাদের পরিবারের সঙ্গে ঈদের ছুটি উপভোগ করতে যাবেন। ট্যুর অপারেটরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (টোয়াব) সূত্রে এমনটি জানা যায়। পর্যটন সংশ্লিষ্টরা জানান, ঈদকে কেন্দ্র করে জমজমাট ব্যবসা হয় পর্যটন খাতে। হোটেল-রিসোর্টের মালিকসহ পর্যটন খাতের সঙ্গে জড়িতরা বছরের এই সময়টায় ভালো ব্যবসার আশায় নানারকম প্রস্তুতিও নেন। পর্যটকদের স্বাগত জানাতে এরই মধ্যে তারা দেশের পর্যটন স্পটগুলোর প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছেন। ধারণা করা হচ্ছে, অন্যান্যবারের মতো এবারও কক্সবাজার, পার্বত্য চট্টগ্রাম, সিলেট, কুয়াকাটা ও সুন্দরবনে পর্যটকরা ভিড় করবেন। যদিও ডলার সংকট আর বিমান টিকিটের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় বিদেশের প্যাকেজগুলোতে ৩০ শতাংশ খরচ বৃদ্ধি পেয়েছে। তবে দেশের কাছের বিভিন্ন গন্তব্য যেমন- ভারতের কলকাতা, শিমলা, দার্জিলিং, নেপাল, ভুটান, মালদ্বীপ, থাইল্যান্ড, ভিয়েতনাম, শ্রীলঙ্কায় যাওয়ার আগ্রহ রয়েছে। উচ্চবিত্তদের কেউ কেউ ইউরোপের বিভিন্ন দেশেও ঘুরতে যাচ্ছেন।
দেশীয় পর্যটকের সংখ্যা বৃদ্ধি পেলেও এবার গরমের কারণে পর্যটন-সংশ্লিষ্টরা কিছুটা দুশ্চিন্তায় রয়েছেন। আবার পার্বত্য অঞ্চলের মধ্যে বান্দরবানে বর্তমান অস্থিরতার কারণে এ অঞ্চলের পর্যটক ব্যবসায়ীরা কিছুটা দুশ্চিন্তায় আছেন। তবে পর্যটন কেন্দ্র সিলেট, শ্রীমঙ্গল, মৌলভীবাজারের হোটেল-রিসোর্টগুলোতে এরই মধ্যে অর্ধেকের বেশি রুম বুকিং হয়ে গেছে। টোয়াব নেতারা জানান, পর্যটন খাতে বছরে ১০ হাজার কোটি টাকার ব্যবসা হয়। এর ৩০ শতাংশ হয় দুই ঈদে। এর মধ্যে রোজার ঈদে ২০ শতাংশ এবং কোরবানির ঈদে ১০ শতাংশ ব্যবসা হয়। টোয়াবের ভাইস প্রেসিডেন্ট মো. শাহেদ উল্লাহ বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ডলার সংকটের কারণে এবার বিমানভাড়া কিছুটা বেশি হলেও ভ্রমণপ্রেমীদের দেশের বাইরে যাওয়ার আগ্রহ কমেনি। ঈদের ছুটিতে ৮ এপ্রিল (গতকাল) থেকে মানুষ দেশের ভিতরের পর্যটন স্থানগুলোতে যাওয়া শুরু করেছেন। ২ থেকে তিন দিন আগে থেকেই দেশের বাইরে ঘুরতে যাওয়া শুরু করেছেন। গরমের কারণে এবার দেশের ভিতরে রাঙামাটি, সুন্দরবন, সিলেটে ভ্রমণপ্রেমীরা বেশি যাবেন। অনেকেই থিমপার্ক ও রিসোর্টে যাবেন। আর দেশের বাইরে ভারত, নেপাল, থাইল্যান্ডে যাচ্ছেন। অনেকেই বিদেশে থাকা সন্তান ও আত্মীয়ের সঙ্গে ঈদ কাটাতে দেশের বাইরে যাচ্ছেন। উচ্চবিত্তরা ইউরোপের বিভিন্ন দেশে যাচ্ছেন। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ঈদের ছুটিতে কক্সবাজারের তারকামানের হোটেলগুলো এরই মধ্যে শতভাগ বুকিং হয়ে গেছে। সুন্দরবনেও এই ঈদে পর্যটকদের কাছ থেকে ভালো সাড়া পাওয়া যাচ্ছে। সুন্দরবনের পর্যটকবাহী জাহাজগুলোর চারভাগের তিনভাগই বুকিং হয়ে গেছে। একইভাবে ঈদকে কেন্দ্র করে সিলেট-শ্রীমঙ্গলেও অর্ধেকের বেশি হোটেল-রিসোর্টের রুম বুকিং হয়ে গেছে। ইতিবাচক বিষয় হচ্ছে, ঈদে পর্যটকদের নিরাপত্তা দিতে এবার পর্যটন কেন্দ্রগুলোতে অ্যালার্মিং সিকিউরিটি বাটন সিস্টেম চালু করেছে ট্যুরিস্ট পুলিশ। এতে পর্যটকরা বিপদে পড়লে নির্দিষ্ট স্থানে চাপ দিলে দ্রুত সময়ের মধ্যে পুলিশ উপস্থিত হবে।