মঙ্গলবার, ৯ এপ্রিল, ২০২৪ ০০:০০ টা

উচ্ছ্বাসে মেতে উঠবে জাতি

আসছে পয়লা বৈশাখ, সময় বেঁধে দেওয়ায় প্রতিবাদমুখর সংস্কৃতিকর্মীরা

মোস্তফা মতিহার

উচ্ছ্বাসে মেতে উঠবে জাতি

দরজায় কড়া নাড়ছে বৈশাখ, নতুন বছর ১৪৩১। পুরনো হালখাতার হিসাবটা চুকিয়ে নতুন করে ভ্রাতৃত্বের বন্ধন দৃঢ় হবে নতুন বছরে। পাওয়া না পাওয়ার হিসাবের অঙ্কে সফলতা আর ব্যর্থতা ভুলে নতুন বছরে বাঙালি এগিয়ে যাবে নবোদ্যমে।

পুরনো দিনের গ্লানি ও জরাজীর্ণতা মুছে ফেলে বৈশাখ বাঙালির যাপিত জীবনে যোগ করবে নতুন প্রাণের উদ্দীপনা। দল-মত-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে এটি বাঙালির সর্বজনীন উৎসব। হিসাবের খেরোখাতায় পুরনোকে বিদায় জানিয়ে নতুনকে সানন্দচিত্তে বরণে গোটা জাতি মেতে উঠবে আবহমান বাংলার সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যে। পান্তা, ইলিশ, মুড়ি, মুড়কি, খই, বাতাসা এখন রূপকথার গল্পের মতো হলেও অন্তত বৈশাখ মনে করিয়ে দেয় এসবই বাঙালির নিজস্বতা ও বাঙালিয়ানার অস্তিত্ব। বাংলা নববর্ষ ১৪৩১ বরণে নানা কর্মসূচি হাতে নিয়েছে বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন। বরাবরের মতো এবারও পয়লা বৈশাখ উদযাপনে সব প্রস্তুতি প্রায় শেষ করেছে দেশের ঐতিহ্যবাহী সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান ছায়ানট। এদিকে বৈশাখ বরণে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদও তাদের দীর্ঘদিনের লালিত ঐতিহ্য মঙ্গল শোভাযাত্রার সব প্রস্তুতিও সম্পন্ন করেছে। বৈশাখের প্রথম দিন ভোরের আলো ফুটতেই রমনার বটমূলে ছায়ানটের বৈশাখ বরণের আয়োজন শুরু হবে। আহীর ভৈরব রাগে বাঁশির সুরে এবারের নতুন বছর আবাহনের শুরু করা হবে। পুরো অনুষ্ঠান সাজানো হয়েছে নতুন স্নিগ্ধ আলোয় স্নাত প্রকৃতির গান, মানবপ্রেম-দেশপ্রেম আর আত্মবোধন-জাগরণের সুরবাণী দিয়ে। ছায়ানট জানায়, এবারের আয়োজনে সম্মেলক গান থাকবে ১১টি, একক গান থাকবে ১৫টি এবং পাঠ ও আবৃত্তি থাকবে।

মঙ্গল শোভাযাত্রা : বৈশাখের প্রথম দিবসে সকাল সাড়ে ৯টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের আয়োজনে শুরু হবে মঙ্গল শোভাযাত্রা। শোভাযাত্রাটি চারুকলা অনুষদ প্রাঙ্গণ থেকে শুরু হয়ে শাহবাগ মোড়, হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টাল ও বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের গুরুত্বপূর্ণ জায়গা প্রদক্ষিণ করে পুনরায় চারুকলায় এসে শেষ হবে। শোভাযাত্রায় বরাবরের মতোই থাকছে টেপা পুতুল, মাটির সরা, পেঁচা, হাতপাখাসহ বিভিন্ন ধরনের মুখোশ। শোভাযাত্রায় থাকবে তিন স্তরের নিরাপত্তা। অন্যদিকে বরাবরের মতো এবারও চ্যানেল আই নানা আয়োজনে বৈশাখ বরণ করবে। চ্যানেল আইয়ের আয়োজনে দিনব্যাপী বৈশাখী মেলা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে অংশ নেবে নাচ, গান ও অভিনয়ের দেশবরেণ্য শিল্পীরা। এতে আরও থাকবেন সাংবাদিক, সাহিত্যিক, রাজনীতিবিদ ও বুদ্ধিজীবীরাও। এ ছাড়া গুলশানের বিচারপতি সাহাবুদ্দিন পার্ক, ধানমন্ডির রবীন্দ্র সরোবর, শিল্পকলা একাডেমি, শিশু একাডেমি, বিএফডিসি, জাতীয় জাদুঘর, উদীচী শিল্পী গোষ্ঠী, গ্রুপ থিয়েটার ফেডারেশনসহ বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠান বর্ণাঢ্য আয়োজনে পয়লা বৈশাখ উদযাপন করবে। অন্যদিকে, পয়লা বৈশাখ নিয়মিত উদযাপনের অংশ হিসেবে বাংলা একাডেমিতে শুরু হচ্ছে বিসিক আয়োজিত ১০ দিনের লোকমেলা ও বইয়ের আড়ং। এবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার মধ্যে বৈশাখ বরণের সব অনুষ্ঠান সম্পন্ন করার সরকারের এমন বাধ্য-বাধকতার প্রতিবাদে উত্তাল সংস্কৃতিকর্মীরা। ইতোমধ্যে গণমাধ্যমে প্রতিবাদ বিবৃতি পাঠিয়েছে সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট, উদীচীসহ বিভিন্ন সাংস্কৃতিক সংগঠন। সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার মধ্যে অনুষ্ঠান শেষ করার সিদ্ধান্ত থেকে সরকারকে সরে আসার আহ্বান জানান সংস্কৃতিকর্মীরা

 

 

 

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর