মঙ্গলবার, ৯ এপ্রিল, ২০২৪ ০০:০০ টা
পালালেন কর্মকর্তারা

বেতন-বোনাস দাবিতে ধামরাইয়ে ফের বিক্ষোভ

ধামরাই (ঢাকা) প্রতিনিধি

ঢাকার ধামরাইয়ে বেতন-বোনাস দেওয়ার কথা বলে দিনভর শ্রমিকদের বসিয়ে রেখে সন্ধ্যায় কারখানার পেছন দিয়ে পালিয়ে গেছেন ওডিসি গার্মেন্টসের কর্মকর্তারা। উপায় না পেয়ে সন্ধ্যার পর ফের বিক্ষোভ করেছেন শ্রমিকরা। এ সময় কান্নায় ভেঙে পড়েছেন অনেকেই। বেতনের টাকা পেয়ে নতুন কাপড় কিনে দেওয়ার জন্য অনেকেই কারখানায় এসেছিলেন সন্তান নিয়ে।

শ্রমিকরা জানিয়েছেন, ওডিসি কারখানার প্রশাসনিক কর্মকর্তা আমিনুর রহমান সন্ধ্যায় কারখানার পেছন দিয়ে দৌড়ে পালিয়ে কারখানার পাশের একটি বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছেন। আমরা তাকে ধরতে চাইলে ওই বাড়ির লোকজন আমাদের মারতে আসছেন। শ্রমিক আকরাম, ফাহিম, আরিফ, সনি, জেসমিন ও হাসিব জানান, আমরা খুবই কষ্টে আছি। আমাদের কারও পকেটে এক শ টাকাও নেই। আমরা এখন বাড়িতে যেতেও পারছি না। এ সময় তারা কান্নায় ভেঙে পড়েন। তারা বলেন, একটু আন্দোলন করলেই পুলিশ আমাদের লাঠিপেটা করে। এখন পুলিশ গেল কই। শিল্প পুলিশের সহকারী পুলিশ সুপার এ বি এম রাশেদুল বারী জানান, কারখানার মালিক বেতন বোনাস না দিলে আমরা কী করব। তবে কারখানা কর্তৃপক্ষ জানান, আমরা কিছু শ্রমিককে সামান্য কিছু টাকা দিয়েছি। বাকি প্রায় দুই হাজার শ্রমিকের বেতনের টাকা দেওয়ার প্রক্রিয়া চলছে। জানা গেছে, সোমভাগ ইউনিয়নের ধামরাই কালামপুর সড়কের পাশে ওডিসি গার্মেন্টস কারখানাটি শ্রমিকদের বেতন বোনাস না দিয়ে গত ৩ এপ্রিল অঘোষিত ভাবে বন্ধ করে দেওয়া হয়। পরদিন সকালে শ্রমিকরা কাজে গেলে গেটে তালা দেখতে পান। এ সময় তারা বিক্ষুব্ধ হয়ে পড়েন এবং গেট ভেঙে ভিতরে প্রবেশের চেষ্টা করেন। এতে শিল্প পুলিশ তাদের বাধা দেয়। পরে কৌশলে শ্রমিকদের কারখানার ভিতর ডেকে নিয়ে গেট আটকিয়ে শ্রমিকদের ওপর ব্যাপক লাঠিচার্জ করে পুলিশ। এতে নারীসহ ১৬ জন শ্রমিক গুরুতর আহত হন। আহতদের মধ্যে অন্তঃসত্ত্বা সামছুন্নাহার ও সাথীর অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানা গেছে। এরপর ফের শ্রমিকরা ঢাকা-আরিচা-জয়পুরা মহাসড়ক অবরোধ করার প্রস্তুতি নেয়। খবর পেয়ে শিল্প পুলিশ টিয়ার শেল ও জলকামান ব্যবহার করে তাদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। এতে কয়েকজন শ্রমিক আহত হন। পরে বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা কারখানার পাশে কালামপুর ধামরাই সড়কে রাস্তায় ড্রাম ও গাছ ফেলে সড়ক আটকিয়ে বিক্ষোভ করেন। এ সময় সোমভাগ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান প্রভাষক আওলাদ হোসেন ও ধামরাই থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) সিরাজুল ইসলাম শেখ ৮ এপ্রিল শ্রমিকদের বেতন বোনাস দেওয়ার কথা বলে আনন্দোলনরত শ্রমিকদের সঙ্গে কারখানার মালিকের সমঝোতা করে দেন। সে হিসেবে গতকাল বেতন বোনাসের জন্য কারখানায় আসেন শ্রমিকরা। এ সময় কারখানা কর্তৃপক্ষ তাদের গেটের বাইরে বসতে বলেন। শ্রমিকরা বেতন বোনাসের আশায় দিনভর বসে ছিলেন। কিন্তু সন্ধ্যায় টাকা না দিয়ে কারখানার কর্মকর্তারা পেছন দিয়ে পালিয়ে যান। এ সময় কারখানার প্রশাসনিক কর্মকর্তা আমিনুল ইসলাম কারখানার পাশের এক বাড়িতে আশ্রয় নেন। পরে শ্রমিকরা ফের বিক্ষোভ শুরু করেন।

সর্বশেষ খবর