মঙ্গলবার, ১৬ এপ্রিল, ২০২৪ ০০:০০ টা
ঈদের ছুটিতেও খুনোখুনি

মাকে গাছে বেঁধে ছেলেকে হত্যা

ফেনী প্রতিনিধি

ফেনীর ছাগলনাইয়ায় মাকে গাছের সঙ্গে বেঁধে রেখে ছেলেকে পিটিয়ে হত্যার দায়ে অভিযুক্ত ব্যাংক কর্মকর্তা মাইনউদ্দিনকে জেলে পাঠানো হয়েছে। এর আগে রবিবার রাতে তাকে গ্রেফতার করে গতকাল ফেনীর আদালতে নেওয়া হলে বিচারক তাকে জেলে পাঠানোর নির্দেশ দেন।

টাকা চুরির অভিযোগে মাকে গাছের সঙ্গে বেঁধে নূর মোহাম্মদ (১৮) নামের এক ছেলেকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। গত শনিবার সন্ধ্যায় ছাগলনাইয়া উপজেলার পাঠান নগর ইউনিয়নের বাথানিয়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। নিহত নূর মোহাম্মদ নোয়াখালীর সুধারাম থানার আন্দারচর গ্রামের নূর ইসলামের ছেলে। সে ওই বাড়িতে দীর্ঘদিন কেয়ারটেকার হিসেবে ছিল। এ ঘটনায় নিহতের মা খাতিজা আক্তার বাদী হয়ে সাতজনের নাম উল্লেখ করে ও অজ্ঞাত আরও ৫-৬ জনের বিরুদ্ধে থানায় মামলা করেন। নিহত নূর মোহাম্মদের মা খাতিজা আক্তার জানান, চার বছর আগে অভাবের কারণে নূর মোহাম্মদকে ব্যাংক কর্মকর্তা মাইনউদ্দিনের বাড়িতে কেয়ারটেকার হিসেবে দিয়ে যান তিনি। ছেলেটির মাসিক বেতন ধরা হয়েছিল ২ হাজার টাকা। চার বছরে তাকে কখনো ছুটি দিত না ওই পরিবার। সেই ক্ষোভে গত ২৭ রমজানে ওই বাসা থেকে ৮০ হাজার টাকা ভর্তি একটি খাম নিয়ে নিজ বাড়িতে চলে যায় নূর মোহাম্মদ। এরপর থেকে মোবাইল ফোনে হুমকি দিতে থাকেন ব্যাংক কর্মকর্তার পরিবারের সদস্যরা। তাদের অব্যাহত হুমকিতে ঈদের পরদিন শুক্রবার ছেলেকে নিয়ে ব্যাংক কর্মকর্তার বাড়িতে হাজির হন তিনি। একই সঙ্গে চুরি করে নেওয়া টাকাগুলোও ফেরত দেন। বিবি খাতিজার অভিযোগ, ব্যাংক কর্মকর্তা মাইনউদ্দিনের বাড়িতে ঢোকা মাত্রই ব্যাংক কর্মকর্তার চার ভাই মিলে তার ছেলেকে মারধর শুরু করেন। বাধা দিলে তাকেও মারধর করে গাছের সঙ্গে বেঁধে রাখেন। এরপর সারা রাত দফায় দফায় এবং পরদিনও তার ছেলেকে মারধর করা হয়। তাদের মারধরের এক পর্যায়ে গত শনিবার সন্ধ্যায় মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে নূর মোহাম্মদ। বিবি খাতিজা বলেন, আমার ছেলের যদি কোনো অন্যায় থাকত, তাহলে তারা তাকে পুলিশে দিতে পারত। আমি তাদের কাছে আমার ছেলের জীবন ভিক্ষা চেয়েছি। তবুও তাদের মন গলেনি।

এভাবে নির্যাতন করে আমার চোখের সামনেই ছেলেটিকে মেরে ফেলল। আমি এ হত্যার বিচার চাই। ছাগলনাইয়া থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হাসান ইমাম বলেন, মৃতদেহের পিঠ, কোমর, হাত-পাসহ পুরো শরীরে অসংখ্য আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। এ ঘটনায় নিহতের মা বাদী হয়ে সাতজনের নাম উল্লেখ করে আরও ৫-৬ জনকে অজ্ঞাত আসামি করে মামলা দায়ের করেন। পুলিশের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতার ব্যাংক কর্মকর্তা মাইনউদ্দিন নূর মোহাম্মদকে মারধরের কথা স্বীকার করেছেন। গ্রেফতার মাইনউদ্দিন বাথানিয়া গ্রামের হাবিবুর রহমানের ছেলে। তিনি আল আরাফাহ্ ইসলামী ব্যাংকে কর্মরত আছেন বলে পুলিশ জানায়।

 

সর্বশেষ খবর