মঙ্গলবার, ১৬ এপ্রিল, ২০২৪ ০০:০০ টা

শীর্ষ সন্ত্রাসী জয় মারা গেছেন মালয়েশিয়ায়

সাখাওয়াত কাওসার

ঢাকার আন্ডারওয়ার্ল্ডের অন্যতম সদস্য পলাতক শীর্ষ সন্ত্রাসী খোন্দকার তানভীর ইসলাম জয় মালয়েশিয়ায় মারা গেছেন। কুয়ালালামপুরের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ১২ এপ্রিল তার মৃত্যু হয়। ওই হাসপাতালের চিকিৎসক প্রফেসর ডা. ফারিদা মোহা. নুর স্বাক্ষরিত ডেথ সার্টিফিকেট বাংলাদেশ প্রতিদিনের হাতে এসেছে। হাসপাতালের ডেথ সার্টিফিকেটে তার নাম লেখা হয় তারেক রানা। তিনি তারেক রানা পাসপোর্টে সেখানে বসবাস করছিলেন। যুক্তরাষ্ট্র থেকে জয়ের বোন কুয়ালালামপুর পৌঁছানোর পর গত রবিবার তাকে সেখানেই দাফন করা হয় বলে সূত্র নিশ্চিত করেছে। গত ১৩ এপ্রিল রাতে বাংলাদেশ প্রতিদিন অনলাইনে প্রতিবেদনটি প্রকাশের পর বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে থাকা ঢাকার আন্ডারওয়ার্ল্ডের সদস্যদের মধ্যে অস্থিরতা দেখা দেয়। এর বাইরেও বিষয়টি সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে রাজধানীসহ দেশের অনেক উৎসুক মানুষ বাংলাদেশ প্রতিদিনে ফোন করেন খবরটির বিস্তারিত আরও জানতে। একাধিক সূত্র বলছে, নব্বই দশকের আতঙ্ক ‘সেভেন স্টার’ গ্রুপের অন্যতম সদস্য তানভীর ইসলাম জয় দীর্ঘদিন ধরে কিডনি রোগে ভুগছিলেন। নিয়মিত তাকে ডায়ালাইসিস করতে হতো। সবশেষ গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়লে তিনি ভর্তি হন কুয়ালালামপুরের ‘হসপিটাল কাউন্সিলর টংকু ইউ কে এম’-তে। তবে এ বিষয়ে পুলিশ সদর দফতরের ন্যাশনাল সেন্ট্রাল ব্যুরোর (এনসিবি) কাছে জানতে চাওয়া হলে ডেস্কের সহকারী মহাপরিদর্শক (এআইজি) আলী হায়দার চৌধুরী বলেন, যথাযথ চ্যানেলে বিষয়টি নিশ্চিত হওয়ার পরই আমরা মন্তব্য করতে পারব। একাধিক সূত্র বলছে, শীর্ষ সন্ত্রাসী জয় বাংলাদেশে কয়েক ডজন খুন, চাঁদাবাজি ও অপহরণ মামলায় অভিযুক্ত। বাড্ডার রাইন হত্যাকাণ্ডের পর আত্মগোপনে চলে যান জয়। ২০০৫ সালে বাংলাদেশের অনুরোধে ইন্টারপোল ‘রেড কর্নার নোটিস’ জারি করে তার বিরুদ্ধে। ২০০৬ সালের ১৪ মে ম্যানপাওয়ার এজেন্সি ‘তুর্কি অ্যাসোসিয়েট’-এর মালিককে ৮ লাখ মার্কিন ডলার চাঁদা দাবি করে বিদেশ থেকে ফোন করেন জয়। টাকা না দেওয়ায় ওই সংস্থার অফিসে ঢুকে ছয়জনকে গুলি করে খুন করে জয়ের দলবল। হাসপাতালের ডেথ সার্টিফিকেটে তার নাম লেখা আছে তারেক রানা। কলকাতায় তারেক রানা নামে পাসপোর্ট তৈরি করেন জয়। ২০০৭ সালে বাগুইআটির চিনার পার্কের একটি বাড়ি থেকে ভারতের সিআইডি জয়কে গ্রেফতারের পর এ বিষয়টি উঠে আসে। সেখানে তিনি সেখানকার আদালত থেকে জামিনে বের হন। তারেক রানা নামেই ভারতীয় পাসপোর্টে ২০১১ সালে পর্যটক ভিসা নিয়ে জয় পাড়ি জমান কানাডায়।

টরোন্টোর শহরতলি আয়াক্সে একজন সফল ব্যবসায়ী হিসাবে প্রতিষ্ঠিত হন। সেখানে তাঁর প্রতিষ্ঠানের নাম ছিল ‘এসজে ৭১’। ২০১৮ সালে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের আনন্দবাজার পত্রিকায় ‘বাংলাদেশের শীর্ষ সন্ত্রাসী জয়-ই কি কানাডার ব্যবসায়ী তারেক?’ শিরোনামে প্রতিবেদন প্রকাশ হওয়ার পরই বিষয়টি নিয়ে তোলপাড় সৃষ্টি হয়। দফায় দফায় কানাডার অভিবাসন দফতর ডাকা হয় তাকে। তবে এর মাঝেই ওই বছরের অক্টোবরের মাঝামাঝি সময়ে কানাডা থেকে উধাও হয়ে যান তিনি। ২০১৯ থেকে তিনি মালয়েশিয়া, অস্ট্রেলিয়া এবং থাইল্যান্ডে বসবাস শুরু করেন। তবে বেশিরভাগ সময় তিনি মালয়েশিয়াতেই অবস্থান করতেন।

 

 

সর্বশেষ খবর