শিরোনাম
বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল, ২০২৪ ০০:০০ টা

স্বাধীনতাবিরোধী শক্তিকে প্রতিহত করার প্রত্যয়

মেহেরপুর প্রতিনিধি

স্বাধীনতাবিরোধী ও সাম্প্রদায়িক শক্তিকে প্রতিহত করার প্রত্যয় ব্যক্ত করে গতকাল ঐতিহাসিক মুজিবনগর দিবস পালিত হয়েছে। গতকাল সকালে মেহেরপুরের মুজিবনগর আম্রকাননের শেখ হাসিনা মঞ্চে আয়োজিত জনসভায় আওয়ামী লীগের জ্যেষ্ঠ নেতারা এ প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।

বাংলাদেশের প্রথম সরকার গঠনের স্থানে নানা কর্মসূচির মধ্য দিয়ে পালিত হয় মুজিবনগর দিবস। সকালে সূর্যোদয়ের সঙ্গে সঙ্গে জাতীয় পতাকা উত্তোলনের মধ্য দিয়ে দিবসের কর্মসূচি শুরু হয়। সকাল সাড়ে ৯টায় মুজিবনগর আম্রকাননের শেখ হাসিনা মঞ্চের সামনে আনুষ্ঠানিকভাবে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হয়। ১০টায় মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয় ও জেলা প্রশাসনের সহযোগিতায় আওয়ামী লীগের আয়োজনে দিবসটি উপলক্ষে আলোচনা সভা হয়। এর আগে অতিথিদের গার্ড অব অনার প্রদান ও কুচকাওয়াজ প্রদর্শন করা হয়। আওয়ামী লীগ আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন দলীয় প্রেসিডিয়াম সদস্য কাজী জাফরউল্লাহ। আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিমের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন দলীয় প্রেসিডিয়াম সদস্য এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটন, সিমিন হোসেন রিমি, আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ, মুক্তিযোদ্ধা বিষয়কমন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক, সাংগঠনিক সম্পাদক এস এম কামাল হোসেন, জনপ্রশাসন মন্ত্রী ও মেহেরপুর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ফরহাদ হোসেন, সাধারণ সম্পাদক এম এ খালেক, মেহেরপুর-২ (গাংনী) আসনের সংসদ সদস্য নাজমুল হক সাগর প্রমুখ। সভা পরিচালনা করেন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক বি এম মোজাম্মেল হক। প্রধান অতিথির বক্তব্যে কাজী জাফরউল্লাহ বলেন, যারা মুক্তিযুদ্ধকে মানে না, তারা দেশকেও মানে না। মুজিবনগর দিবসকেও মানে না। ওরা পাকিস্তানের দোসর হিসেবে কাজ করছে। ১৭ এপ্রিল মুজিবনগরে শপথ অনুষ্ঠানের পর থেকেই বাংলাদেশকে আন্তর্জাতিক স্বীকৃতির বিষয়টি রূপলাভ করে। তিনি বলেন, অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশকে যারা সাম্প্রদায়িক শক্তির হাতে সপে দিতে চায় তাদের প্রতিরোধ করাই হোক আজকের ?মুজিবনগর দিবসের শপথ। আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটন বলেন, যে চেতনা নিয়ে ১৯৭১ সালের ১৭ এপ্রিল মুজিবনগর সরকার গঠিত হয়েছিল, সেই চেতনা বাস্তবায়নে বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা কাজ করে যাচ্ছেন। তিনি অনেক দূর এগিয়েছেন। বাকি কাজ তাঁর নেতৃত্বেই সমাপ্ত হবে। তিনি বলেন, এই মুজিবনগরে সিমিন হোসেন রিমি ও আমার অন্যরকম অনুভূতি কাজ করে। কারণ আমাদের বাবা বঙ্গবন্ধুর নির্দেশে অত্যন্ত সাহসিকতার সঙ্গে প্রথম সরকারের শপথ অনুষ্ঠানের আয়োজন ও পরিচালনা করেছিলেন। 

প্রেসিডিয়াম সদস্য সিমিন হোসেন রিমি বলেন, বঙ্গবন্ধুর অসাম্প্রদায়িক চেতনার বাংলাদেশ শুরু হয় ’৭১-এর ১৭ এপ্রিল। ওইদিন পাশের ভবেরপাড়া খ্রিস্টান মিশনের সিস্টাররা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন। তাদের দু-একজন আজও বেঁচে আছেন। আগামীতে কোনো ১৭ এপ্রিলে তাদের আমন্ত্রণ জানানো হবে। মুক্তিযুদ্ধ বিষয়কমন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেন, মুজিবনগর সরকার বাংলাদেশর প্রথম সরকার। ’৭১ সালের ১৭ এপ্রিল গঠিত মুক্তিযুদ্ধকালীন সরকারের ধারাবাহিকতায় আজকের এ সরকার। তিনি বলেন, দেশের প্রতিটি উপজেলা পর্যায়ে মুক্তিযোদ্ধা যাচাই-বাছাই কমিটি রয়েছে। তারা স্থানীয়ভাবে যাচাই-বাছাই শেষে মুক্তিযোদ্ধা জাতীয় কাউন্সিলে পাঠান। তারপর মুক্তিযোদ্ধাদের গেজেট প্রকাশ করা হয়। যদি কোনো ব্যক্তি মিথ্যা তথ্য দিয়ে মুক্তিযোদ্ধা হয়ে থাকে সেটা কেউ অভিযোগ করলে বা মন্ত্রণালয়ের নজরে এলে সেগুলো বাতিল করা হবে। ইতোমধ্যে প্রমাণ হওয়ায় ৮ হাজার ভুয়া মুক্তিযোদ্ধার সনদ বাতিল করা হয়েছে। ভুয়া তথ্য দিয়ে মুক্তিযোদ্ধা হওয়ার কোনো সুযোগ নেই। বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে উদ্দেশ করে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ বলেন, এই সরকারকে উৎখাত করার জন্য, এই দেশের উন্নয়ন অগ্রযাত্রাকে বাধা সৃষ্টির জন্য শুধু দেশেই নই, আন্তর্জাতিক চক্রান্তকারীদের সঙ্গে হাত মিলিয়ে যড়ষন্ত্র করেছিলেন, সেটা তিনি নিজেই স্বীকার করছেন। তাই আমি সবাইকে আহ্বান জানাব, এই পাকিস্তানি এজেন্টদের উৎখাত করতে হবে।

সভাপতির বক্তব্যে আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম বলেন, অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ ও সোনার বাংলা বিনির্মাণের প্রশ্নে যেখানেই বাধা আসবে সেখানেই প্রতিহত করা হবে। এই হোক মুজিবনগর দিবসের শপথ। আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এস এম কামাল হোসেন বলেন, যারা স্বাধীনতা মানে না, মুজিবনগর দিবস পালন করে না, তাদের বাংলাদেশে থাকার অধিকার নেই।

 

 

সর্বশেষ খবর