বুধবার, ২৪ এপ্রিল, ২০২৪ ০০:০০ টা
চট্টগ্রামে বেসরকারি হাসপাতাল

চিকিৎসাসেবা বন্ধ বিপাকে রোগীরা

নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম

চিকিৎসাসেবা বন্ধ বিপাকে রোগীরা

চট্টগ্রামে দুই চিকিৎসককে মারধরের প্রতিবাদে বেসরকারি হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারে সব ধরনের সেবা বন্ধ রাখা হয়েছে। একই সঙ্গে চিকিৎসকদের প্রাইভেট চেম্বারেও রোগী দেখা বন্ধ। ফলে চিকিৎসাসেবা না পেয়ে চরম বিপাকে পড়তে হয়েছে রোগীদের। বিশেষ করে গ্রাম ও দূর-দূরান্ত থেকে আসা রোগীদের অন্তহীন দুর্ভোগে পড়তে হয়। বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন (বিএমএ) চট্টগ্রাম শাখার আহ্বানে গতকাল ভোর ৬টা থেকে আজ (বুধবার) ভোর ৬টা পর্যন্ত চিকিৎসকদের এ কর্মবিরতির ডাক দেওয়া হয়। এতে মহাদুর্ভোগে পড়েছেন রোগী ও স্বজনরা।

গতকাল দুপুরে সরেজমিন চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বিভিন্ন বহির্বিভাগে গিয়ে দেখা যায়, সেখানে রোগীদের ব্যাপক ভিড়। বেসরকারি হাসপাতাল ডায়াগনস্টিক সেন্টারে চিকিৎসা করাতে না পেরে সবাই সরকারি হাসপাতালে ছুটছেন। তাই স্বাভাবিক সময়ের তুলনায় গতকাল প্রতিটি বহির্বিভাগে রোগী ও স্বজনদের ভিড় এবং চিকিৎসাসেবার জন্য অপেক্ষা করতে দেখা যায়। তাছাড়া হাসপাতালের আশপাশে থাকা বেসরকারি স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রগুলোর সামনেও রোগী এবং স্বজনদের অপেক্ষা করতে দেখা যায়। এখানে রোগী এলেও কোনো ধরনের সেবা দেওয়া হচ্ছে না। চমেক হাসপাতালের সামনের এক রোগ নির্ণয় কেন্দ্রে অপেক্ষা করা রোগীর স্বজন কামাল উদ্দিন বলেন, বাবাকে চিকিৎসক দেখানোর পর আজ কিছু রোগ নির্ণয় করার কথা ছিল। কিন্তু চিকিৎসকদের কর্মবিরতির কারণে তা পারছি না। কিন্তু বাবার অবস্থা ভালো নয়। এপিক হেলথ কেয়ারের ম্যানেজার (মেডিকেল সার্ভিসেস) ডা. হামিদ হোছাইন আজাদ বলেন, বিএমএর কর্মসূচির সঙ্গে একাত্মতা পোষণ করে এপিকের সেবা কার্যক্রম বন্ধ রাখা হয়েছে। কর্মসূচি শেষ হলে সব ধরনের সেবা আবারও চালু করা হবে। বিএমএ চট্টগ্রাম শাখার সাধারণ সম্পাদক ডা. ফয়সাল ইকবাল চৌধুরী বলেন, দুজন চিকিৎসককে মারধরের ঘটনার প্রতিবাদ এবং শাস্তির দাবিতে আমরা নানা কর্মসূচি পালন করে আসছি। কর্মবিরতি কর্মসূচি গতকাল ভোর ৬টা থেকে শুরু হয়ে বুধবার ভোট ৬টা পর্যন্ত চলবে। স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদ চট্টগ্রাম জেলার সভাপতি ডা. শেখ শফিউল আজম বলেন, কর্মরত অবস্থায় দুজন চিকিৎসককে মারধর করা, এটা কোনো মতেই মানার বিষয় নয়। আমরা এ দুই ঘটনার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই। চমেক হাসপাতালের সহকারী পরিচালক রাজীব পালিত বলেন, বেসরকারি হাসপাতালে সেবা বন্ধ থাকায় চমেক হাসপাতালে রোগীর চাপ বাড়ছে। তবুও এখানে রোগী ভর্তি ও অন্যান্য সেবা চলমান আছে। এখানে ২৪ ঘণ্টা সেবা অব্যাহত আছে। প্রসঙ্গত, গত ১০ এপ্রিল পটিয়ায় মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় আহত এক রোগীকে চিকিৎসা দিতে দেরি করার অভিযোগে ডা. রক্তিম দাশকে মারধর করা হয়। এ ঘটনায় ১১ এপ্রিল রাতে হাসপাতালটির নির্বাহী পরিচালক এস এইচ খাদেমী বাদী হয়ে পাঁচজনের নাম উল্লেখ এবং ১০-১২ জনকে অজ্ঞাত আসামি করে মামলা দায়ের করেন। তাছাড়া, গত ১৪ এপ্রিল নগরের বেসরকারি হাসপাতাল মেডিকেল সেন্টারে চিকিৎসাধীন অবস্থায় এক শিশুর মৃত্যুর পর ডা. রিয়াজ উদ্দিন শিবলুকে মারধর করে রোগীর স্বজনেরা। এ ঘটনায় ওই দিন রাতেই হাসপাতালটির ব্যবস্থাপক ইয়াসিন আরাফাত বাদী হয়ে একজনের নাম উল্লেখ এবং অজ্ঞাত সাত থেকে আটজনকে আসামি করে মামলা করা হয়।

সর্বশেষ খবর