বুধবার, ২৪ এপ্রিল, ২০২৪ ০০:০০ টা

শুরু হলো বৈশাখী মেলা

জব্বারের বলীখেলা কাল

নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম

শুরু হলো বৈশাখী মেলা

জব্বারের বলীখেলার ১১৫তম আসরের জন্য প্রস্তুত হচ্ছে বলীর মঞ্চ। ঐতিহাসিক বলীখেলায় অংশ নিতে প্রস্তুতি নিচ্ছেন শতাধিক পেশাদার ও শৌখিন বলী। আজ অংশগ্রহণে ইচ্ছুক বলীদের নাম তালিকাভুক্তি শুরু হবে। এ খেলা ঘিরে বসেছে তিন দিনব্যাপী বৈশাখী মেলার। তবে নির্ধারিত সময়ের এক দিন আগেই শুরু হয়েছে মেলা। বলীখেলা ও মেলা ঘিরে চট্টগ্রামে চলছে উৎসব। আবদুল জব্বার স্মৃতি কুস্তি প্রতিযোগিতা ও বৈশাখী মেলা কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক জামাল হোসেন বলেন, ‘বুধবার (আজ) আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হচ্ছে তিন দিন ব্যাপী বৈশাখী মেলা। ঐতিহ্যবাহী এ মেলার মূল আকর্ষণ বলীখেলা বৃহস্পতিবার বিকাল ৪টায় অনুষ্ঠিত হবে। খেলায় অংশ নিতে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে বলীরা ইতোমধ্যে চট্টগ্রাম চলে এসেছেন। তারা প্রস্তুতি নিচ্ছেন। এবারও নিয়মিত বলীর পাশাপাশি শতাধিক শৌখিন বলী অংশ নেবেন।’

চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের (সিএমপি) মুখপাত্র অতিরিক্ত উপকমিশনার কাজী তারেক আজিজ বলেন, ‘ঐতিহাসিক আবদুল জব্বারের বলীখেলা ও বৈশাখী মেলা উপলক্ষে লালদীঘি অভিমুখী সব ধরনের যান চলাচল নিয়ন্ত্রণ করবে পুলিশ। এ ছাড়া মেলায় অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে নানা পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। মেলায় আইন প্রয়োগকারী সংস্থার পোশাকধারী সদস্যের পাশাপাশি নিয়োজিত থাকবে সাদা পোশাকের সদস্যও।’ ১৯০৯ সালে চট্টগ্রামের বদরপাতি এলাকার ধনাঢ্য ব্যবসায়ী আবদুল জব্বার সওদাগর ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনে যুবসমাজকে ঐক্যবদ্ধ করতে বলীখেলার প্রচলন করেন। পরে এ প্রতিযোগিতা জব্বারের বলীখেলা নামে পরিচিতি পায়। প্রতি বছর ১২ বৈশাখ নগরের লালদীঘি মাঠে বলীখেলা অনুষ্ঠিত হয়। এ খেলায় অংশগ্রহণকারীদের বলা হয় ‘বলী’। ঐতিহাসিক এ খেলা কেন্দ্র করে বসে তিন দিনব্যাপী বৈশাখী মেলা। আনুষ্ঠানিকভাবে তিন দিন বলা হলেও পাঁচ দিন ধরে এ মেলা চলে। জব্বারের বলীখেলায় অংশ নিতে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ছুটে আসছেন বলীরা। যার মধ্যে পেশাদারে পাশাপাশি রয়েছেন শৌখিন বলীও। পেশাদার বলীরা সরাসরি চূড়ান্ত পর্বে অংশ নেবেন। চ্যাম্পিয়ন ও রানার্সআপ ছাড়াও চূড়ান্ত পর্বে অংশ নেওয়া প্রত্যেক বলীকে পুরস্কৃত করা হবে। জব্বারের বলীখেলা ঘিরে লালদীঘির আশপাশের কয়েক কিলোমিটার জুড়ে বসে বৈশাখী মেলা। আজ মেলা শুরু হওয়ার কথা থাকলেও গতকালই বিভিন্ন এলাকার ব্যবসায়ীরা হাজির হয়েছেন। নগরীর কোতোয়ালি থেকে লালদীঘির পার হয়ে আন্দরকিল্লার মোড় ও সিনেমা প্যালেস কেসিদে রোড হয়ে জেলরোড পর্যন্ত বসেছে এ মেলা। এ মেলা থেকেই সাংসারিক নিত্যব্যবহার্য পণ্যের প্রতি বছরের চাহিদা মেটান গৃহিণীরা। তাই গৃহিণীদের পছন্দের তালিকায় থাকে এ মেলার পণ্যসামগ্রী। এরই মধ্যে বিক্রেতারা পসরা সাজিয়ে বসেছেন ঝাড়ু, মাটির কলস, মাটির ব্যাংক, রঙিন চুড়ি, ফিতা, কাঁকন, খেলনা, হাতপাখা, শীতলপাটি, ঢাকঢোল, মাটি ও কাঠের পুতুল, বাঁশি, তৈজসপত্র, আসন, চৌকি, খাট, আলমারি, ফুলদানি, তালপাখা, টব, হাঁড়িপাতিল, দা-ছুরি, কুলা-চালুন, টুকড়ি, বিভিন্ন প্রজাতির গাছের চারা, মুড়িমুড়কি, লাড্ডু, জিলাপি আরও কত কী। তবে মেলায় সবচেয়ে বেশি থাকে ঝাড়ুর চাহিদা। এবার মেলায় কয়েক হাজার ঝাড়ু বিক্রির প্রত্যাশা করছেন বিক্রেতারা।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর