বুধবার, ২৪ এপ্রিল, ২০২৪ ০০:০০ টা
থিম্পুতে সচিব পর্যায়ের বৈঠক আজ

মাশুল নিয়ে ভুটানকে ট্রানজিট বাংলাদেশের

রুকনুজ্জামান অঞ্জন

ভারতের পর এবার মাশুলের বিপরীতে বাংলাদেশে ট্রানজিট সুবিধা পাচ্ছে ভুটান। চট্টগ্রাম ও মোংলা বন্দর ব্যবহার করে স্থলপথে প্রতি টন পণ্য পরিবহনে কিলোমিটারে ২ টাকা ১ পয়সা পরিশোধ করতে হবে দেশটিকে। সম্প্রতি সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয় ভুটানের জন্য এ ট্রানজিট ফির প্রস্তাব পাঠায় বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে। ট্রানজিট মাশুলের এ প্রস্তাব নিয়ে থিম্পুতে গেছেন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব তপনকান্তি ঘোষ। দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য সচিব পর্যায়ের বৈঠকে আলোচনার মাধ্যমে মাশুলের হার নির্ধারণ হবে বলে জানা গেছে।

বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা জানান, এবারের সচিব পর্যায়ের বৈঠকে ট্রানজিটের বিষয়টি গুরুত্ব পাচ্ছে বেশি। ভুটান সম্প্রতি জানিয়েছে, তারা বাংলাদেশে ট্রানজিট সুবিধায় পণ্য পরিবহন করতে চায়। বাংলাদেশের পক্ষ থেকে চূড়ান্তভাবে ট্রানজিটে পণ্য পরিবহনের আগে ‘ট্রায়ালরান’ করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। ওই ট্রায়ালরানের মাধ্যমে ট্রানজিটের জন্য প্রস্তাবিত রুটগুলোর সক্ষমতা যাচাই করা হবে। আর প্রাথমিক পর্যায়ে এ ট্রায়ালরানের জন্য একটি মাশুল নির্ধারণ করেছে সড়ক বিভাগ, থিম্পুতে সচিব পর্যায়ের সভায় যা চূড়ান্ত হবে। সংশ্লিষ্টরা জানান, মাশুলের বিপরীতে ট্রানজিট সুবিধা দিতে গত বছরের মার্চে বাংলাদেশ ও ভুটানের মধ্যে চুক্তি হয়েছে। ‘প্রটোকল অব দি অ্যাগ্রিমেন্ট অন দ্য মুভমেন্ট অব ট্রাফিক ইন ট্রানজিট বিটুইন বাংলাদেশ অ্যান্ড ভুটান’ শীর্ষক এ চুক্তির আওতায় বাংলাদেশের জল, স্থল ও আকাশ পথ ব্যবহার করে তৃতীয় দেশের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্যের সুযোগ পাচ্ছে ভুটান। চুক্তি অনুযায়ী সড়কপথে ট্রানজিটে পণ্য পরিবহনের জন্য প্রথম রুটটি হচ্ছে ভুটান থেকে সামসি, গোমটু, ফুয়েন্টসলিং, গেলেপু হয়ে বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে ঢুকে রংপুর-বগুড়া-হাটিকুমরুল-ঢাকা হয়ে চট্টগ্রাম বন্দর পর্যন্ত; একইভাবে দ্বিতীয় রুটটি সামসি, গেলেপু হয়ে ফুলবাড়ী-বাংলাবান্ধা সীমান্ত দিয়ে ঢাকা হয়ে চট্টগ্রাম বন্দর পৌঁছাবে; তৃতীয় রুটটি গেলেপু থেকে সিলেটের তামাবিল সীমান্ত দিয়ে ঢাকায় পৌঁছাবে; চতুর্থ রুটটি গেলেপু থেকে সিলেটের তামাবিল দিয়ে ঢাকা হয়ে বেনাপোল পৌঁছাবে এবং পঞ্চম রুটটি ভুটানের সামসি হয়ে গোমটু, ফুয়েন্টসলিং, গেলেপু হয়ে শেরপুরের নালিতাবাড়ী-নাকুগাঁও স্থলবন্দর দিয়ে ময়মনসিংহ হয়ে ঢাকা পৌঁছাবে। সড়কপথে এ পাঁচটি রুট ছাড়াও রেলপথে পণ্য পরিবহনের মাধ্যমে চট্টগ্রাম ও মোংলা বন্দরের অবকাঠামো সুবিধা ব্যবহার করে আমদানি-রপ্তানির জন্য আরও দুটি রেলরুট যুক্ত করা হয়েছে প্রটোকলে। এ রুটগুলো হচ্ছে ১. সামসি-গোমটু-ফুয়েন্টসলিং-গেলেপু-চিলাহাটি-সৈয়দপুর-পার্বতীপুর-সান্তাহার-ঈশ্বরদী-ভেড়ামারা-যশোর-নওয়াপাড়া-খুলনা-মোংলা এবং ২. চট্টগ্রাম-লাকসাম-কুমিল্লা-আখাউড়া-ঢাকা-সিরাজগঞ্জ-বগুড়া-লালমনিরহাট-বুড়িমারী-সামসি হয়ে থিম্পু। কর্মকর্তারা জানান, ল্যান্ডলক (স্থল আবদ্ধ) দেশ হওয়ায় ভুটানকে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য সম্পন্ন করতে হয় ভারতের কলকাতার হলদিয়া সমুদ্রবন্দর দিয়ে। তবে ভুটানের রাজধানী কাঠমান্ডু থেকে হলদিয়া সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে বাণিজ্য কার্যক্রম চালাতে যে খরচ হয় বাংলাদেশের মোংলা ও চট্টগ্রাম বন্দর ব্যবহার করে আমদানি-রপ্তানি করলে খরচ তার অর্ধেকে নেমে আসবে।

সর্বশেষ খবর