বুধবার, ২৪ এপ্রিল, ২০২৪ ০০:০০ টা

পি কেসহ ২৩ জনের নামে দুদকের চার্জশিট

নিজস্ব প্রতিবেদক

এনআরবি গ্লোবাল ব্যাংক ও রিলায়েন্স ফাইন্যান্সের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) প্রশান্ত কুমার হালদার ওরফে পি কে হালদারসহ ২৩ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট অনুমোদন করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। সম্প্রতি দুদকের প্রধান কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত কমিশন সভায় এ চার্জশিটের অনুমোদন দেওয়া হয়। গতকাল দুদক সূত্রে জানা গেছে, চার্জশিটে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইন-২০১২ ও দ বিধির ৪০৯/৪২০/১০৯ ধারা এবং ১৯৪৭ সালের দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫ (২) ধারায় চার্জশিট গঠন করা হয়েছে।

অন্য আসামিরা হলেন- আনান কেমিক্যালসের এমডি অমিতাভ অধিকারী, আনান কেমিক্যালসের পরিচালক প্রিতিশ কুমার হালদার, উজ্জ্বল কুমার নন্দী, পূর্ণিমা রানী হালদার, রাজীব সোম, রতন কুমার বিশ্বাস ও ওমর শরীফ; ইন্টারন্যাশনাল লিজিংয়ের পরিচালক মো. নুরুল আলম, নাসিম আনোয়ার, মো. নুরুজ্জামান, এম এ হাশেম, মোহাম্মদ আবুল হাসেম, জহিরুল আলম, মো. আনোয়ারুল কবীর, মো. নওশেরুল ইসলাম ও বাসুদেব ব্যানার্জি; ইন্টারন্যাশনাল লিজিংয়ের সাবেক এমডি রাশেদুল হক, সাবেক ভারপ্রাপ্ত এমডি সৈয়দ আবেদ হাসান, ভিপি নাহিদা রুনাই, এভিপি আল মামুন সোহাগ, সিনিয়র ম্যানেজার রাফসান রিয়াদ চৌধুরী ও কোম্পানি সচিব রফিকুল ইসলাম খান। গত বছর অর্থ পাচারের অভিযোগে পি কে হালদারকে ২২ বছরের সাজা দেন ঢাকার আদালত। পি কে হালদার বর্তমানে ভারতে অবস্থান করছেন। ২০২২ সালে ১৪ জুন পি কে হালদারকে তার চার সহযোগীসহ ভারতের পশ্চিমবঙ্গ থেকে গ্রেফতার করে দেশটির অর্থসংক্রান্ত কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা বাহিনী এনফোর্সমেন্ট ডাইরেক্টরেট (ইডি)। জানা যায়, আনান কেমিক্যালস লিমিটেডের এমডি অমিতাভ অধিকারী ২০১৫ সালে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের নামে ২৯ কোটি টাকা ঋণের জন্য আবেদন করেন। ইন্টারন্যাশনাল লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিস লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. রাশেদুল ইসলাম বরাবর করা আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ২৩২তম বোর্ড সভায় যাচাই ছাড়াই ঋণ মঞ্জুর করা হয়। পরে বিভিন্ন সময়ে বেনামী প্রতিষ্ঠান আনান কেমিক্যালসের নামে ৬৩ কোটি ৪১ লাখ ৪৯ হাজার ৮০০ টাকা উত্তোলন করা হয়। ২০২২ সালের ১৬ আগস্ট পর্যন্ত এর সুদসহ মোট পাওনার পরিমাণ দাঁড়ায় ১০৩ কোটি ১৬ লাখ ৭০ হাজার ৭১৯ টাকা। দুদকের তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইন্টারন্যাশনাল লিজিংয়ের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা অসৎ উদ্দেশ্য নিয়ে আনান কেমিক্যালসের চেয়ারম্যান, ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও পরিচালকদের ঋণ পাইয়ে দিতে সহযোগিতা করেছে। একই সঙ্গে ঋণের টাকা আত্মসাৎ ও পাচারে পি কে হালদারসহ ২৩ জনের সম্পৃক্ততা পাওয়া গেছে।

এর আগে পাঁচটি কাগুজে প্রতিষ্ঠানের নামে মোট ৩৫১ কোটি টাকা ঋণ অনুমোদন করে তা আত্মসাতের অভিযোগে ২০২১ সালে পি কে হালদারসহ ৩৩ জনের বিরুদ্ধে পাঁচটি মামলা করে দুদক। এর মধ্যে ইন্টারন্যাশনাল লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসেস লিমিটেড থেকে অস্তিত্ববিহীন প্রতিষ্ঠান আনান কেমিক্যালস লিমিটেডের নামে ৭০ কোটি ৮২ লাখ টাকা ঋণ তুলে নিয়ে আত্মসাতের অভিযোগে একটি মামলা হয়। ওই মামলা কয়েকজনকে গ্রেফতার করে দুদক। সূত্র জানায়, সংশ্লিষ্ট মামলার আসামি ইন্টারন্যাশনাল লিজিংয়ের এমডি রাশেদুল হক, ভারপ্রাপ্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) সৈয়দ আবেদ হাসান ও সিনিয়র ম্যানেজার রাফসান রিয়াদ চৌধুরী গ্রেফতার হয়ে রিমান্ড শেষে আদালতে ফৌজদারি কার্যবিধি ১৬৪ ধারায় নিজেকে অপরাধের সঙ্গে শতভাগ জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেন। আসামিরা পরবর্তীতে, অপরাধলব্ধ ও আত্মসাৎকৃত অর্থ বিভিন্ন লেয়ারিংয়ের মাধ্যমে পি কে হালদার সিন্ডিকেটের ভুয়া কোম্পানি ও বিভিন্ন ব্যক্তির ব্যাংক হিসাবে হস্তান্তর, স্থানান্তর ও রূপান্তরের মাধ্যমে অবস্থান গোপনপূর্বক আত্মসাৎ ও পাচার করেন।

সর্বশেষ খবর