বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪ ০০:০০ টা

ফিরলেন ১৭৩ বাংলাদেশি, বিজিপিসহ গেলেন ২৮৮ জন

টেকনাফে ফের এসে পড়ল গুলির খোসা

নিজস্ব প্রতিবেদক ও কক্সবাজার প্রতিনিধি

মিয়ানমারের কারাগারে আটক থাকা ১৭৩ বাংলাদেশি নাগরিক দেশে ফিরেছে। একই জাহাজে ফেরত পাঠানো হবে মিয়ানমারের ২৮৮ বিজিপি ও সেনা সদস্যকে। গতকাল পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক বিজ্ঞাপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গতকাল দুপুরে কক্সবাজার বিআইডব্লিউটিএ ঘাটে পৌঁছায় বাংলাদেশি নাগরিকদের বহনকারী জাহাজটি। তাদের স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হবে। জাহাজে আসা মিয়ানমার প্রতিনিধি দল বিজিবির নাইক্ষ্যংছড়ি ক্যাম্পে অবস্থান করবে। সেখানে বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া মিয়ানমার বিজিপি ও অন্য সদস্যদের ডকুমেন্টেশনের কাজ করবে। এরপর বাংলাদেশে নিযুক্ত মিয়ানমার দূতাবাস ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধির উপস্থিতিতে মিয়ানমার প্রতিনিধি দলের কাছে আশ্রয়প্রাপ্তদের হস্তান্তর করা হবে। উল্লেখ্য, চলতি বছরে এ পর্যন্ত ৬ শতাধিক মিয়ানমার বিজিপি ও সামরিক বাহিনীর সদস্যকে আশ্রয় ও প্রত্যাবর্তনের ব্যবস্থা করা হয়েছে। বাংলাদেশি জাহাজে জলসীমা থেকে নুনিয়ারছড়া ঘাটে আনার পর স্বজনদের সামনেই একে একে তাদের জাহাজ থেকে নামানো হয়। বিজিবি, কোস্টগার্ড ও পুলিশের নিরাপত্তায় হস্তান্তর প্রক্রিয়ার জন্য তৈরি করা অস্থায়ী তাঁবুতে নেওয়া হয় তাদের। সেখানে মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূতসহ বিজিবি ও কোস্টগার্ডের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

স্বজনদের কাছে ফিরে যাওয়া শাহপরীর দ্বীপের হেলাল বলেন, ‘নিজের দেশের মাটিতে আসার আনন্দ আর বউ-বাচ্চার মুখ দেখার যে অনুভূতি তা বলে বোঝাতে পারব না। সরকারের এ চেষ্টার কথা সারা জীবন মনে রাখব।’

লক্ষ্মীপুর থেকে আসা খুরশিদা বেগম বলেন, ‘আমার বুকের ধন শাহেদ আট বছর ধরে নিখোঁজ। এত বছর পর ছেলের খোঁজ পেয়ে ছুটে এসেছি। আমার ছেলেকে এক পলক দেখার যে ইচ্ছা তা সরকার পূরণ করেছে তার জন্য ধন্যবাদ।’

টেকনাফে এসে পড়ল গুলি : সীমান্তের ওপারে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে জান্তা বাহিনীর সঙ্গে বিদ্রোহী আরাকান আর্মির (এএ) চলমান সংঘাত ব্যাপক আকার ধারণ করেছে। ওপার থেকে ভেসে আসা গোলাগুলি ও মর্টার শেলের শব্দে আতঙ্কে রয়েছে সীমান্তে বসবাসরত বাংলাদেশিরা। তবে এ সংঘাতের জেরে কক্সবাজারের টেকনাফে ফের একটি গুলি এসে পড়েছে। মঙ্গলবার রাত আনুমানিক সাড়ে ১০টার দিকে জাদিমুড়া সিআইসি অফিসের জানালায় একটি গুলি লেগে ছিদ্র হয়ে যায়।

স্থানীয়রা জানান, গত রাত থেকে ভোর পর্যন্ত মিয়ানমারের রাখাইনে চলমান সংঘাত থেকে থেমে মর্টার শেল বিস্ফোরণ এবং গোলাগুলির বিকট শব্দ আবারও টেকনাফের সীমান্তে ভেসে আসতেছে। এ ঘটনার জেরে গত রাতে হ্নীলা ইউনিয়নের জাদিমুড়া ২৭ নম্বর ক্যাম্পের সিআইসি অফিসের জানালায় এসে একটি গুলি লেগে ছিদ্র হয়ে যায়। সপ্তাহব্যাপী ওপার থেকে ভেসে আসা গোলাগুলি ও মর্টার শেলের বিস্ফোরণের বিকট শব্দে আতঙ্কে রয়েছে সীমান্তে বসবাসরত বাংলাদেশিরা। হোয়াইক্যংয়ের বাসিন্দা নুরুল ইসলাম বলেন, রাতে চিংড়ি ঘের গেলে মিয়ানমারের ওপারে চলা গোলাগুলির শব্দের ভয়ে সেখান থেকে চলে আসতে হয়েছে। গোলাগুলির বিকট শব্দে ঘেরে থাকতে পারিনি। রাতভর থেমে থেমে গোলাগুলি হয়েছে। হ্নীলা জাদিমুড়া ক্যাম্প-২৭ এর মাঝি নুরুল বশর বলেন, ‘মিয়ানমার সীমান্তের ওপারে গোলাগুলি থেকে এপারের ক্যাম্প-২৭ সিআইসি অফিসের জানালায় একটি গুলি এসে পড়ে ছিদ্র হয়ে যায়।’ গত তিন মাস আগে মিয়ানমার রাখাইনের সংঘাত থেকে ঘুমধুম-উখিয়া ও টেকনাফ সীমান্তে এসে পড়েছিল মর্টার শেল-গুলি।

সর্বশেষ খবর