শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪ ০০:০০ টা

গণকবরে শত শত লাশ

ফিলিস্তিনে ইসরায়েলের হামলা

প্রতিদিন ডেস্ক

গণকবরে শত শত লাশ

ইসরায়েলি হামলায় ফিলিস্তিনে লন্ডভন্ড ভবন -এএফপি

সেনারা চলে যাওয়ার পর গাজার নাসের এবং আল শিফা হাসপাতাল এলাকায় মিলতে শুরু করেছে ইসরায়েলি পৈশাচিকতার প্রমাণ। এরই মধ্যে মিলেছে একাধিক গণকবর। সেখান থেকে বেরিয়ে আসছে শত শত ফিলিস্তিনির লাশ। স্থানীয় সূত্র জানিয়েছে, এ গণকবরে অন্তত ২০ জনকে জীবন্ত কবর দেওয়া হয়েছিল। এদিকে এ ধরনের খবর পেয়ে জাতিসংঘের মানবাধিকার-বিষয়ক প্রধান ভলকার তুর্ক উদ্বেগ প্রকাশ করে ‘হতবাক’ হওয়ার কথা জানিয়েছেন। সূত্র : রয়টার্স, বিবিসি, আলজাজিরা।

খবরে বলা হয়, ইসরায়েলি সেনারা হামলা চালিয়ে চলে যাওয়ার পর নাসের এবং আল শিফা হাসপাতালে পাওয়া গণকবর থেকে শত শত লাশ বের হচ্ছে। এ ছাড়া ফিলিস্তিন কর্তৃপক্ষও এ সপ্তাহে খান ইউনিসের নাসের হাসপাতালের গণকবরে শত শত লাশ পাওয়ার কথা জানায়। এখন নাসেরসহ আল শিফা হাসপাতালেও এমন গণকবরের সন্ধান মিলেছে।

গাজার হামাস পরিচালিত সিভিল ইমারজেন্সি সার্ভিস বলেছে, নাসের হাসপাতালের গণকবর থেকে গত মঙ্গলবার পর্যন্ত মোট ৩১০টি লাশ পাওয়া গেছে। আরও দুটো গণকবরের সন্ধান মিলেছে। তবে সেগুলো এখনো খনন করা হয়নি। এ ছাড়া ফিলিস্তিনের বেসামরিক প্রতিরক্ষা সদস্য মোহাম্মদ মুগির স্থানীয় সূত্রের উদ্ধৃতি দিয়ে জানিয়েছেন, গাজার গণকবরে অন্তত ২০ জনকে জীবন্ত দাফন করা হয়েছে। উদ্ধারকৃত মৃতদেহের নমুনা দেখে গতকাল এমনটাই ধারণা পাওয়া গেছে। মুগির বলেন, গণকবর থেকে অন্তত ১০টি মৃতদেহ হাত বাঁধা অবস্থায় উদ্ধার করা হয়েছে। বাকিদের বিভিন্ন চিকিৎসা সরঞ্জামসহ মোড়ানো অবস্থায় পাওয়া গেছে। এদিকে খান ইউনিসের বেসামরিক প্রতিরক্ষা বিভাগের প্রধান ইয়েমেন আবু সোলায়মান জানিয়েছেন, গাজার গণকবর থেকে ৩৯২টি মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।

ওই মৃতদেহের মধ্যে মাত্র ৬৫টির পরিচয় শনাক্ত করা সম্ভব হয়েছে। বাকি ৮৫ শতাংশ মৃতদেহই অজ্ঞাত। তিনি বলেন, অন্তত ২০টি মৃতদেহের ময়নাতদন্ত করা দরকার। কারণ আমাদের মনে হচ্ছে তাদের জীবন্ত দাফন করা হয়েছে। এসব খবরে জাতিসংঘের মানবাধিকার-বিষয়ক হাইকমিশনারের মুখপাত্র বলেছেন, মানবাধিকার গোষ্ঠীগুলো উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। কারণ, বহু লাশ পাওয়া গেছে। সেগুলোর মধ্যে কিছু লাশের হাত বাঁধা, যা মানবাধিকার আইন এবং আন্তর্জাতিক মানবিকতা আইন লঙ্ঘনেরই ইঙ্গিত দিচ্ছে। এসব মানুষের মৃত্যু কীভাবে হয়েছে তা নিয়ে আরও তদন্ত প্রয়োজন। জাতিসংঘের মানবাধিকার প্রধান ভলকার তুর্ক বলেন, গাজার নাসের এবং আল শিফা হাসপাতাল হামলা চালিয়ে ধ্বংস করা এবং ইসরায়েলি অভিযানের পর সেখানে গণকবরের সন্ধান পাওয়ার ঘটনা খুবই ‘ভয়ংকর’। অন্যদিকে ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনী আইডিএফ এক বিবৃতিতে গণকবর দেওয়ার কথা অস্বীকার করেছে। আইডিএফের ভাষ্য, জিম্মিদের লাশ রয়েছে এমন গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে তারা হাসপাতাল প্রাঙ্গণের কবরে থাকা লাশগুলো তুলে পরীক্ষা করে ফের কবরে রেখে দিয়েছে। এ সময় লাশের কোনো অমর্যাদাও তারা করেনি। ইসরায়েলি হামলায় নিহত আরও ৭৯ : ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা ভূখন্ডে ইসরায়েলি হামলায় আরও ৭৯ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। এতে উপত্যকাটিতে নিহতের মোট সংখ্যা ছাড়িয়ে গেছে ৩৪ হাজার ২৫০ জন। এ ছাড়া গত অক্টোবর থেকে চলা এ হামলায় আহত হয়েছেন ৭৭ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনি।

সর্বশেষ খবর