শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪ ০০:০০ টা

শিক্ষক নিয়োগে প্রশ্নফাঁস চক্র

পাঁচজন গ্রেফতার

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতরে সহকারী শিক্ষক নিয়োগের তৃতীয় ধাপের পরীক্ষায় ডিজিটাল ডিভাইস ব্যবহার করে প্রশ্নপত্র ফাঁস করার প্রতারক চক্রের পাঁচ সদস্যকে গ্রেফতার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। তারা হলেন- জ্যোতির্ময় গাইন, সুজন চন্দ্র রায়, মনিষ গাইন, পংকজ গাইন ও লাভলী মন্ডল। এ সময় তাদের কাছ থেকে তিনটি মোবাইল ফোন এবং পাঁচটি মোবাইল সিম জব্দ করা হয়েছে। গ্রেফতার হওয়া জ্যোতির্ময় গাইন এ চক্রের প্রধান সমন্বয়কারী ও প্রশ্নপত্র সমাধানকারী। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জগন্নাথ হলের ২২৪ নম্বর কক্ষে বসে প্রশ্নের সমাধান করতেন। এ ছাড়া গ্রেফতার সুজন চন্দ্র রায়ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একই হলে বসে প্রশ্নপত্রের সমাধান করতেন। আর পংকজ গাইন, মনিষ গাইন ও লাভলী মন্ডল পরীক্ষার ফাঁস হওয়া প্রশ্নপত্র পেয়ে পরীক্ষা দিয়েছেন। গতকাল এসব তথ্য জানান ডিবির সাইবার অ্যান্ড স্পেশাল ক্রাইম (দক্ষিণ) বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) মো. শহিদুল ইসলাম। তিনি বলেন, জ্যোতির্ময় গাইনের চাচা অসীম গাইন পরীক্ষার দুই থেকে তিন মাস আগে পরীক্ষার্থীদের সঙ্গে যোগাযোগ শুরু করতেন। তার টার্গেট থাকত চাকরির বয়স শেষ এমন পরীক্ষার্থীদের। পরীক্ষার্থীদের সঙ্গে ১২ থেকে ১৪ লাখ টাকায় চুক্তি করে পরীক্ষার সময় তার মোবাইলে উত্তরপত্র পাঠাতেন। এর আগে অসীম গাইন পরীক্ষার দিন সকালে প্রশ্নপত্র হাতে পেয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আইন বিভাগে অধ্যয়নরত তার ভাইয়ের ছেলে জ্যোতির্ময় গাইনের কাছে হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপের মাধ্যমে এ প্রশ্ন সরবরাহ করতেন।

 জ্যোতির্ময় গাইন তার দুই সহপাঠী সুজন চন্দ্র রায় এবং বেনুলাল দাসকে সঙ্গে নিয়ে জগন্নাথ হলের নিজ কক্ষে বসে প্রশ্নের উত্তরপত্র তৈরি করে পরীক্ষার্থীদের মোবাইলে দ্রুততম সময়ের মধ্যে পাঠাতেন। পরীক্ষার্থীরা লুকিয়ে পরীক্ষা কেন্দ্রে মোবাইল নিয়ে যেতেন। পরীক্ষায় তাদের সরবরাহকৃত প্রশ্নপত্রে ৭৫টি প্রশ্নের মধ্যে ৭২টি সঠিক হয়েছিল। ডিবি কর্মকর্তা শহিদুল বলেছেন, গত ২৯ মার্চ অনুষ্ঠিত এবার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষায় ঢাকা ও চট্টগ্রাম বিভাগের (তিন পার্বত্য জেলা বাদে) ২১ জেলার ৩ লাখ ৪৯ হাজার ২৯৩ পরীক্ষার্থী অংশ নেয়। ২১ এপ্রিল ফল প্রকাশ করা হয়। এরই মধ্যে প্রশ্নপত্র ফাঁস চক্রের পাঁচজনকে গ্রেফতার করা হয়। পরীক্ষার দিন মাদারীপুর জেলার পাঁচটি কেন্দ্রে প্রশ্নপত্র ফাঁস হয়। তখন ফাঁস হওয়া প্রশ্নপত্রের সমাধান ও ডিভাইসসহ আট শিক্ষার্থীকে আটক করা হয়। প্রশ্নপত্র ফাঁসের ঘটনায় ডিএমপির রমনা থানায়ও সাইবার নিরাপত্তা আইনে মামলা হয়। ওই মামলায় পাঁচজনকে গ্রেফতার দেখানো হয়েছে।

সর্বশেষ খবর