শিরোনাম
শনিবার, ২৭ এপ্রিল, ২০২৪ ০০:০০ টা

বৃষ্টির অপেক্ষায় হালদা নদীর ডিম সংগ্রহকারীরা

রেজা মুজাম্মেল, চট্টগ্রাম

উপমহাদেশের অন্যতম প্রাকৃতিক মৎস্য প্রজননক্ষেত্র ও বঙ্গবন্ধু মৎস্য হেরিটেজ হালদা নদী থেকে ডিম সংগ্রহে প্রস্তুত সংগ্রহকারীরা। চলতি মৌসুমের দ্বিতীয় জো (অমাবস্যা) গতকাল শেষ হয়েছে। তবে বৃষ্টি না হওয়ায় মা মাছ ডিম ছাড়েনি। ফলে ডিম সংগ্রহকারীরা এখন জাল-নৌকা নিয়ে বৃষ্টির জন্য অপেক্ষা করছেন। হালদা নদীতে কার্প জাতীয় মাছ (রুই, কাতলা, মৃগেল ও কালবাউস) প্রাকৃতিক নিয়মেই ডিম ছাড়ে। জানা যায়, প্রতি বছর এপ্রিল থেকে জুন মাস সময়ের মধ্যে অমাবস্যার সময়ে মা মাছ ডিম ছাড়ে। চলতি এপ্রিল মাসের ২০ থেকে ২৬ এপ্রিল জো চলেছে। মুষলধারে বৃষ্টি, পর্যাপ্ত পাহাড়ি ঢল এবং উপযুক্ত পরিবেশ পেলে হালদা নদীর মা মাছ ডিম ছাড়বে। কিন্তু এ সময় মুষলধারে বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢল না হওয়ায় মা মাছ ডিম ছাড়েনি। তবে এখন পর্যন্ত নদীর প্রাকৃতিক পরিবেশ ইতিবাচক আছে।

প্রবীণ ডিম সংগ্রহকারী কামাল উদ্দিন সওদাগর বলেন, এবার প্রায় ৭০০ সংগ্রহকারী ৪০০ নৌকাসহ প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি নিয়ে ডিম সংগ্রহের অপেক্ষায় আছেন। বর্তমানে নদীর পরিবেশ ভালো থাকায় আমরা আশানুরূপ ডিম সংগ্রহে আশাবাদী। ইতোমধ্যে আমরা কূপও প্রস্তুত করেছি। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় হালদা রিভার রিসার্চ ল্যাবরেটরির সমন্বয়ক হালদা গবেষক অধ্যাপক ড. মনজুরুল কিবরিয়া বলেন, হালদা রিসার্চ ল্যাবে গত কয়েকদিন ধরে নিয়মিত পানি পরীক্ষা করা হচ্ছে। সব ইন্ডিকেটরে এবার মা মাছের ডিম ছাড়ার পরিবেশ বেশ ইতিবাচক। এখন কেবল অপেক্ষা মুষলধারে বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢল। পক্ষান্তরে ডিম সংগ্রহকারীরাও প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি নিয়ে আছেন। ‘হালদা নদীর প্রাকৃতিক মৎস্য প্রজননক্ষেত্র উন্নয়ন ও ব্যবস্থাপনা’ শীর্ষক প্রকল্পের উপপরিচালক নাজমুল হুদা রনি বলেন, দেশের অন্যতম এই নদী নিয়ে সরকার একটা বড় পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে। খুব শিগগিরই এ পরিকল্পনা বাস্তবায়ন শুরু হবে। আশা করি, প্রকৃত অর্থেই এটিকে বঙ্গবন্ধু মৎস্য হেরিটেজ হিসেবে রূপান্তর করা সম্ভব হবে। জানা যায়, হালদা নদী থেকে ডিম সংগ্রহে নেওয়া হয়েছে নানা প্রস্তুতি। নদীর মা মাছ রক্ষা ও অবৈধ কার্যক্রম বন্ধে নৌপুলিশ স্থাপন করেছে ক্লোজ সার্কিট (সিসি) ক্যামেরা। একই সঙ্গে রেণু পোনা ফোটানো হ্যাচারিতেও সিসিটিভি ক্যামেরা বসিয়ে ডিম সংগ্রহ ও রেণু উৎপাদন কার্যক্রম তদারকি করা হবে। সংগ্রহ করা ডিম প্রক্রিয়াকরণে প্রস্তুত রাখা হয়েছে দুটি উপজেলার পাঁচটি সরকারি হ্যাচারি ও শতাধিক মাটির কুয়া। হালদা নদীর কাগতিয়ার আজিমের ঘাট, খলিফার ঘোনা, পশ্চিম গহিরা অংকুরি ঘোনা, বিনাজুরী, সোনাইর মুখ, আবুরখীল, খলিফার ঘোনা, সত্তারঘাট, দক্ষিণ গহিরা, মোবারকখীল, মগদাই, মদুনাঘাট, উরকিচর এবং হাটহাজারী গড়দুয়ারা, নাপিতের ঘাট, সিপাহির ঘাট, আমতুয়া, মার্দাশা ইত্যাদি এলাকায় ডিম বেশি পাওয়া যায়।

 

 

সর্বশেষ খবর