মঙ্গলবার, ৩০ এপ্রিল, ২০২৪ ০০:০০ টা

অতিরিক্ত খরায় চিংড়ি চাষে সর্বনাশ

নিজস্ব প্রতিবেদক, খুলনা

খুলনার উপকূলীয় কয়রা, পাইকগাছা, দাকোপে অনাবৃষ্টি ও খরায় বিভিন্ন চিংড়ি ঘেরের পানি শুকিয়ে গেছে। তাপমাত্রা বৃদ্ধি পাওয়ায় পানিতে অক্সিজেনের ঘাটতি দেখা দিয়েছে। সেই সঙ্গে অনেক স্থানে ঘেরের পানিতে লবণাক্ততা বাড়ছে। ফলে প্রতিদিন হরিণা চিংড়ি, বাগদা পোনা ও গলদা চিংড়ি মরে পানিতে ভেসে উঠছে। এতে করে আর্থিক ক্ষতির শঙ্কায় দিশাহারা হয়ে পড়েছেন চাষিরা। চিংড়ি উৎপাদনেও এবার লক্ষ্যমাত্রা অর্জন না হওয়ার শঙ্কা রয়েছে।

খুলনা জেলায় প্রায় ৩১ হাজার ১৩৫ হেক্টর জমিতে গলদা ও বাগদার চাষ হয়। বর্তমানে কয়রা, পাইকগাছা, দাকোপের বিভিন্ন পুকুর ঘেরে ৫-৭ মাস বয়সী গলদা চিংড়ি রয়েছে, পানি শুকিয়ে যাওয়ায় যা ঝুঁকিতে রয়েছে। কয়রার মহারাজপুর শ্রীরামপুর গ্রামের চিংড়ি চাষি আবদুুল হালিম জানান, অনাবৃষ্টিতে আশপাশে সব ঘেরের পানি শুকিয়ে গেছে। প্রচণ্ড দাবদাহে পানিতে অক্সিজেনের ঘাটতি দেখা দিয়েছে। প্রতিদিনই গলদা চিংড়ি মারা যাচ্ছে। খরার কারণে বাগদা পোনাও ছাড়তে পারছি না। উপজেলার শ্রীরামপুর, আন্তাবুনিয়া, খড়িয়া, মঠবাড়ীর শতাধিক ঘেরে এ বিপর্যয় দেখা দিয়েছে। পাইকগাছা উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা সৈকত মল্লিক জানান, বিভিন্ন স্থানে চিংড়ি ঘের অগভীর হওয়ার কারণে পানি কমে যাওয়ায় তাপমাত্রা ঠিক রাখা যাচ্ছে না। এতে ঘেরের পানিতে দ্রবীভূত অক্সিজেনের মাত্রা কমে সংকট তৈরি হচ্ছে।

মঠবাড়ী গ্রামের চিংড়ি চাষি আবু সাঈদ বিশ্বাস জানান, এবার সময়মতো বৃষ্টি না হওয়ায় পানির চরম সংকট দেখা দিয়েছে। ঘের, পুকুর ও জলাশয়ে পানি কমে যাওয়ায় মাছের প্রাকৃতিক খাদ্য নষ্ট হচ্ছে, পচনের কারণে দূষণ বাড়ছে ও মাছ মারা যাচ্ছে। এতে চরম ক্ষতির মুখে পড়েছেন চাষিরা।

এদিকে দাবদাহ বৃদ্ধিতে ঘেরের পানিতে দূষণ রোধে দিনের বেলায় জাল টেনে ঘেরের তলদেশের দূষিত গ্যাস বের করে দেওয়া, দাবদাহ চলাকালে ঘেরে পানিতে প্রতিদিন শতাংশ প্রতি কার্বোহাইড্রেট জাতীয় উপাদান আটা, চাল বা ভুট্টার কুড়া ৫০-১০০ গ্রাম করে দেওয়ার পরামর্শ দিয়েছে মৎস্য বিভাগ। জেলা মৎস্য অফিসের সিনিয়র সহকারী পরিচালক ফারহানা তাসলিমা জানান, দাবদাহে চিংড়ি চাষের ব্যবস্থাপনায় চাষিদের প্রয়োজনীয় পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। পুকুর বা ঘেরের পানিতে চাষকৃত মাছের মজুত ঘনত্ব কমানো, ডিপ টিউবওয়েল বা সাবমারসিবল পাম্প দিয়ে পানি সরবরাহ করে প্রয়োজনীয় গভীরতা বৃদ্ধি করা, অক্সিজেনে ঘাটতি হলে অক্সিজেন ট্যাবলেট প্রয়োগ, পুকুরে একটি নির্দিষ্ট অংশে কচুরিপানা দিয়ে পানিতে ছায়াযুক্ত স্থান তৈরি করার তাগিদ দেওয়া হয়েছে।

সর্বশেষ খবর